|
|
|
|
মহানায়িকায় উত্সর্গ ঝাড়গ্রামের মেলা |
কিংশুক গুপ্ত • ঝাড়গ্রাম |
উত্তমকুমার পারেননি, সুচিত্রা পারলেন।
সদ্য প্রয়াত সুচিত্রা সেন এ বার ঝাড়গ্রাম মেলা ও যুব উত্সবের কেন্দ্রবিন্দুতে। আজ বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা পার্ক, আইটিআই ময়দান ও স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে শুরু হচ্ছে এই মেলা ও যুব উত্সব। এই প্রথমবার মেলার সম্প্রসারণ করা হয়েছে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের ভিতর পর্যন্ত। স্টেডিয়ামের ভিতরে বিশেষ মঞ্চটি হয়েছে সুচিত্রা সেনের নামে। উত্তমকুমারের প্রয়াণের পরের বছর ঝাড়গ্রাম মেলায় কিন্তু মহানায়কের ঠাঁই হয়নি।
সুচিত্রা সেনের নামাঙ্কিত বিশেষ মঞ্চেই এ বার মেলার উদ্বোধন হবে। সেখানে নয় দিন ধরে কলকাতা ও মুম্বইয়ের শিল্পীরা অনুষ্ঠান করবেন। মেলার সাংস্কৃতিক উপসমিতির সভাপতি সুনীল হেমব্রম বলেন, “মঞ্চ যেহেতু মহানায়িকার নামে, তাই প্রত্যেক শিল্পীর কাছে আমরা আবেদন রেখেছি যে, অন্ততপক্ষে একটি পরিবেশনায় যেন সুচিত্রা সেনের প্রসঙ্গ থাকে। মেলা প্রাঙ্গণে মহানায়িকা অভিনীত ছবির গানও বাজানো হবে। ওই বিশেষ মঞ্চে সুচিত্রা সেনের প্রতিকৃতি থাকবে। এ ছাড়া প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে ও প্রয়াত সাঁওতালি সঙ্গীতশিল্পী জীবন মুর্মুর নামেও আরও দু’টি মঞ্চ থাকছে।” |
|
বুধবার চলছে ঝাড়গ্রাম মেলার প্রস্তুতি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
আগে মেলাটি হত শহরের কুমুদকুমারী মাঠে। ওই সময় মেলায় একটি মঞ্চ হত। পরে মেলাটি ঘোড়াধরা পার্কে সরিয়ে আনা হলে মঞ্চ সংখ্যা বেড়ে হয় দু’টি। মূলত শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের প্রয়াত ব্যক্তিত্বদের নামে মঞ্চের নামকরণ করা হয়। এই প্রথম বার মেলায় তিনটি মঞ্চ হচ্ছে। শহরের ঘোড়াধরা পার্কে মান্না দে’র নামে মূল মঞ্চটি হয়েছে। এ বার মূল মঞ্চে কেবলমাত্র স্থানীয় শিল্পীরা অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন। অন্য বছরের মতো এ বারও ঝাড়গ্রাম থানার পিছনে আদিবাসী ও লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান পরিবেশনের জন্য দ্বিতীয় মঞ্চটি তৈরি করা হয়েছে। ওই মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে হুগলির প্রয়াত সাঁওতালি সঙ্গীতশিল্পী জীবন মুর্মুর নামে। বাম জমানায় ঝাড়গ্রাম মেলার মূল দায়িত্বে থাকত ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি ও ঝাড়গ্রাম পুরসভা। ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে রাজ্যের ক্ষমতার পালা বদলের পরে বিগত দু’টি বছরে (’১২ ও ’১৩) তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ও নেতারা মেলা কমিটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। গত বছর পঞ্চায়েত ও পুরভোটে জঙ্গলমহল থেকে বামেরা ধুয়ে গিয়েছে। ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি ও পুরসভা এখন তৃণমূলের। মেলা কমিটির সভাপতি তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদাও মানছেন, সুচিত্রা সেনের নামে মঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্তটি ব্যতিক্রমী। মন্ত্রীর কথায়, “মান্না দে ও জীবন মুর্মুর নামে মঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। মহানায়িকার আকস্মিক প্রয়াণের পরে তাঁর নামে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের ভিতরে মেলার বিশেষ মঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, সুচিত্রা সেন কেবল অভিনেত্রী নন, তিনি বাংলা ও বাঙালির নস্ট্যালজিয়া।” মেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব বলেন, “সুচিত্রা সেনের মতো কিংবদন্তী ব্যক্তিত্বের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের বিষয়টি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত।” |
|
|
|
|
|