|
|
|
|
বেলদা-কাঁথি রাস্তা সম্প্রসারণের আর্জি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মাঝে-মধ্যেই খানাখন্দ। পিচ উঠে রাস্তায় ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্তে চাকা ঢুকে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে। মেদিনীপুর থেকে দিঘা যাতায়াতের প্রধান সড়কের বেলদা থেকে জাহালদা পর্যন্ত অংশের অবস্থা এমনই বেহাল। মাঝেমধ্যে রাস্তা সংস্কারও হয়। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের রাস্তার পুরনো অবস্থা ফিরে আসে। এই পরিস্থিতিতে বেলদা থেকে কাঁথি রাস্তাটি দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীতকরণের আর্জি জানিয়ে পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীকে চিঠি দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি।
শৈবালবাবু বলেন, “রাস্তাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। মেদিনীপুর থেকে দিঘা যাতায়াতের প্রধান সড়ক। ওই রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বাড়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ফলে, বেলদা-কাঁথি রাস্তাটি দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করা না হলে আগামী দিনে এই সব সমস্যা আরও বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। তখন পথচলতি সাধারণ মানুষেরও সমস্যা বাড়বে। তাই মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।” জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের আশা, আর্জি খতিয়ে দেখে এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন পূর্তমন্ত্রী। |
|
জাহালদা-বেলদা রাস্তায় উঠে গিয়েছে পিচের আস্তরণ। ছবি: কৌশিক মিশ্র। |
জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, বেলদা-কাঁথি রাস্তাটির দূরত্ব সব মিলিয়ে ৫৬ কিলোমিটার। পূর্তমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ৬টি পঞ্চায়েত সমিতির এলাকাকে যুক্ত করেছে। এর একদিকে যেমন রয়েছে বেলদা-খড়্গপুর, অন্য দিকে তেমনি এই রাস্তা দিঘা, মন্দারমণি, জুনপুটের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুর্গাপুর, আসানসোলের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাকে যুক্ত করেছে। জনবহুল এই এলাকার লোকেরা প্রতিনিয়ত রুজি-রোজগারের জন্য এই রাস্তা ব্যবহার করেন। দীর্ঘ দিন রাস্তাটি পূর্ত দফতর দেখভাল করছে। মাঝেমধ্যে রাস্তা মেরামতও করা হয়। কিন্তু, দিনে দিনে গাড়ির চাপ বাড়ায় রাস্তাটি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “এটা ভাল উদ্যোগ। রাস্তাটি চার লেনের হলে খুবই ভাল হবে।” তাঁর কথায়, “ওই রুটে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। তবে, রাস্তার হাল ফেরেনি। মাঝেমধ্যে সংস্কারের অভাবে বেলদা থেকে জাহালদা অংশে রাস্তাটির অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। খানাখন্দ বেশি হলে রাস্তায় বাস চালানো বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকে না। এমন বেহাল রাস্তায় বাস চললে মালিকদের তো ক্ষতির মুখ দেখতে হবে।” বেলদার এক ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য দেবদুলাল মিশ্র বলেন, “কাঁথির রাস্তাটি চার লেনের হলে প্রচুর মানুষ উপকৃত হবেন।”
বস্তুত, বেলদা থেকে জাহালদা পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কার করার দাবিতে গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মুখে বাস বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন বাস মালিকেরা। তাছাড়া রাস্তায় থাকা হাম্পগুলোও তুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। বাস মালিকদের এই মনোভাব জানার পরই অবশ্য নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গোড়ায় কয়েকটি হাম্প তুলে দেওয়া হয়। পরে রাস্তা সংস্কারের কাজও শুরু হয়। মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “বাধ্য হয়ে আমরা বাস বন্ধের কথা জানিয়েছিলাম। তখন রাস্তাটি অত্যন্ত খারাপ ছিল। খারাপ রাস্তার উপর আবার বেশ কয়েকটি হাম্প ছিল। ফলে, ওই রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাতে হত।” তাঁর কথায়, “পশ্চিম মেদিনীপুরের যে কয়েকটি রাস্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে বেলদা-জাহালদা অন্যতম। দিঘা-মেদিনীপুর রুটের বাসগুলো এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করে। পিচ উঠে রাস্তায় গর্ত তৈরি হওয়ার ফলে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটত। এমন রাস্তায় তো গাড়ি চলাচলের নিয়ন্ত্রণ রাখাও কঠিন।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেই পুরো রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ে। মাঝে-মধ্যে সংস্কার হয়। তবে, একটা বর্ষা পেরোলে রাস্তায় ফের খানাখন্দ তৈরি হয়। সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই পূর্তমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে খবর। প্রস্তাব তো গেল। রাস্তাটি চার লেন কবে হয়, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|