এ বার হাতি নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন শশী তারুর।
স্ত্রী সুনন্দা পুষ্করের অস্বাভাবিক মৃত্যুর রেশ কাটতে না-কাটতেই ফের সঙ্কটে তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ।
সাংসারিক ‘সঙ্কটমোচনে’ কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে একটি হাতি উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন শশী। সেই হাতি মন্দিরে পৌঁছনোর আগেই রহস্যজনক মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রীর। তার দু’দিন পর অসম থেকে কেনা হাতিটি আটক করে বন বিভাগ। অভিযোগ ওঠে, ট্রাকে অমানবিক ভাবে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল হাতিটিকে। খাবার, জল কিছুই দেওয়া হয়নি। |
বনবিভাগের হাতে আটক হওয়া সেই হাতি।—নিজস্ব চিত্র। |
প্রশাসনিক কাগজ ও বিধিনিয়ম খুঁটিয়ে দেখার পর আজ অবশ্য হাতিটিকে কেরলে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
১৯ জানুয়ারি বরপেটা রোডের শিমলাগুড়ি এলাকায় ট্রাক থামিয়ে হাতিটি আটকে রাখে বন বিভাগ। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, খোলা ট্রাকে শিকল জড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল হাতিটিকে। বাঁধন খুলে সেটিকে চিকিৎসার জন্য পাঠায় বন বিভাগ। মাহুত ময়জল আলি ও সহকারী জাহিরুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মানসের ডেপুটি ডিরেক্টর সোনালি ঘোষ জানান, মাহুতের কাছে থাকা অনুমতিপত্র দেখে জানা যায়, লখিমপুর জেলার ধলপুরের বাসিন্দা ভূপেন গগৈয়ের কাছ থেকে থুনকি নামের ওই হাতিটি কেনা হয়েছিল। পাঠানো হচ্ছিল কেরলে। অনুমতিপত্রে তেজপুর বন বিভাগের সিলমোহরও ছিল। কিন্তু প্রাথমিক পরীক্ষায় পরিবহণের সময় হাতির দেহে যে ‘মাইক্রোচিপ’ থাকার কথা, তা মেলেনি।
মানসের বাঁশবাড়ি রেঞ্জে পশু চিকিৎসক প্রভাত বসুমাতারি চার দিন ধরে হাতিটির দেখভাল করেন। তিনি জানান, বছর দশেকের স্ত্রী হাতিটি অনাহার, সড়ক-যাত্রায় অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
মানসের অধিকর্তা অনিন্দ্য স্বরগোয়ারি বলেন, “আজ হাতিটির শরীরে মাইক্রোচিপ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। রিডার যন্ত্রে পরীক্ষা করে বন বিভাগের অনুমতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। কিন্তু, জীবন্ত প্রাণী যে ভাবে পরিবহণ করার নিয়ম, তার তোয়াক্কা করেননি ট্রাক চালক, মাহুত, সহকারীরা। প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ৭ দিন সময় লাগার কথা। অথচ, ট্রাকে খাবার ছিল না। লখিমপুর থেকে বরপেটা পৌঁছতেই হাতিটি কাহিল হয়ে পড়ে।”
বন দফতর হাতিটিকে আটকে রাখায় চাপ আসতে থাকে কেরল থেকে। সোনালিদেবী জানান, ওনাম কুট্টি পিল্লাই নামে এক ব্যক্তি নিজেকে মন্ত্রীর প্রতিনিধি বলে জানিয়ে দাবি করেন, পদ্মনাভস্বামীর মন্দিরে সংসারের ‘সঙ্কটমোচনে’র জন্য হাতিটিকে উৎসর্গ করতে চান শশী তারুর। সুনন্দার মৃত্যুর কিছু দিন আগেই সস্ত্রীক তারুর পদ্মনাভস্বামী মন্দির দর্শনে গিয়ে সে কথা জানিয়ে এসেছিলেন। তাঁর নির্দেশেই অসম থেকে হাতি কিনে কেরল পাঠানো হচ্ছিল। বনকর্তারা জানান, কেরলের উচ্চপদস্থ আমলারাও বনকর্তাদের ফোন করে দ্রুত হাতিটিকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
স্বরগোয়ারি বলেন, “বিশদ পরীক্ষার পর আজ বিকেলে হাতিটিকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছি। চালক ও মাহুতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বন বিভাগের নিয়মগুলি পালন করতে হবে।” |