শুরু হয়েও থমকে স্টেশনের সৌন্দর্যায়ন
কাজ শুরু হয়েছিল ঢাকঢোল পিটিয়ে। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই বন্ধ। শ্রীরামপুর স্টেশনের সৌন্দর্যায়ন এবং নতুন একটি সাবওয়ে তৈরি ফের কবে শুরু হবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। রেল সূত্রের অবশ্য দাবি, শীঘ্রই কাজ হবে।
ইউপিএ সরকারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় রাজ্য জুড়ে বেশ কিছু স্টেশনের সৌন্দর্যায়নের কথা ঘোষণা করেন। শ্রীরামপুর স্টেশন স্থান পায় ‘মডেল স্টেশন’-এর তকমা। হুগলি জেলায় মাহেশের রথের দিকজোড়া খ্যাতি। শহরের মানুষের দাবি ছিল, এখানকার জগন্নাথ মন্দির অথবা রথের আদলে স্টেশন চত্বর সাজানো হোক। যদিও রেল দফতর ‘মাহেশের’ পরিবর্তে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে স্টেশন তৈরির কথা ঘোষণা করে রেল। বিষয়টি নিয়ে চোখ কপালে ওঠে শহরবাসীর। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়, টিকিট কাউন্টার হবে ‘মাহেশের রথ’, আর স্টেশন চত্বর হবে পুরীর মন্দিরের আদলে। ২০১০ সালের ২৪ জুলাই এলাকার তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। নতুন করে একটি সাবওয়ে বানানোর কথাও বলা হয়। খরচ ধরা হয় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
মন্দিরের আদলে সেজে ওঠার কথা স্টেশনের। —নিজস্ব চিত্র।
এর পরে সাড়ে তিন বছর কেটে গিয়েছে। কতটুকু এগিয়েছে কাজ? রেল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শিলান্যাসের পরেই হইহই করে কাজ শুরু হয়ে যায়। টিকিট কাউন্টারের সামনে কংক্রিটের আস্তরণ পড়ে। নতুন সাবওয়ে তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়। রেল লাইনের ধারে কর্মীদের তাঁবুও পাতা হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কাজ কিছুই এগোয়নি। স্টেশন চত্বরটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি। যাত্রীদের ভিড় লেগেই থাকে। রাস্তার দু’পাশে বেআইনি দোকানপাটের সংখ্যাও কম নয়। তিনটি সাবওয়ের মধ্যে একটি পশ্চিম শ্রীরামপুরের সঙ্গে পূর্ব দিকের যোগাযোগের মাধ্যম। পথচলতি মানুষ তো বটেই, সাইকেল-বাইক থেকে শুরু করে ভ্যান বা রিকশার দাপাদাপি লেগেই থাকে। এই অবস্থার কথা চিন্তা করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় নতুন সাবওয়ে তৈরির পরিকল্পনা হয়। সাবওয়ের শিলান্যাস করেন কল্যাণবাবু।
এ দিকে, মন্ত্রিত্ব ছেড়ে ইউপিএ সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে তৃণমূল। তারপর থেকেই প্রকল্পের গতি শিথিল হয় বলে অভিযোগ। কল্যাণবাবু রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীকে আক্রমণ করে বলেন, “স্রেফ রাজনৈতিক সংকীর্ণতার কারণেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অধীরবাবু কাজ আটকে রেখেছেন।” অধীরবাবুর বক্তব্য, “রাজনীতির সংকীর্ণতাকে প্রশ্রয় দিয়ে রেলের উন্নয়ন-প্রসার থমকে দেওয়ার মতো মূর্খ নই। যাঁরা এ ধরনের মানসিকতার মানুষ, তাঁরাই এমন মন্তব্য করেন।”
গোটা বিষয়টিতে শ্রীরামপুরের সাধারণ মানুষ বিরক্ত। মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী বলেন, “শিলান্যাসের দিন জানতে পেরেছিলাম, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধাঁচে প্ল্যাটফর্ম সাজানো হবে। তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করেছিলাম। সে দিনই ঠিক হয়েছিল, পুরী আর মাহেশের সংমিশ্রণে সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে সেখানে। কিন্তু এখন দেখছি, একটা জগাখিচুরি অবস্থা করে ফেলে রাখা হল। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।” শ্রীরামপুরবাসীর অনুযোগ, দক্ষিণেশ্বর থেকে বেলুড় মঠ, রামপুরহাট বা গুপ্তিপাড়া অনেক জায়গায় বিখ্যাত মন্দিরগুলির ধাঁচে স্টেশন ভবন তৈরি করা হয়েছে। সে দিক থেকে শ্রীরামপুর বঞ্চিত বলে নিত্যযাত্রীরা মনে করছেন।
রেল সূত্রের দাবি, সৌন্দর্যায়নের কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ীই করা হবে। সাবওয়ে তৈরির কাজও হবে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.