|
|
|
|
কংগ্রেস নয়, রামবিলাসেই আগ্রহী নীতীশ |
স্বপন সরকার • পটনা
২০ জানুয়ারি |
কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাতের জন্য তিনি যে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে নেই তা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন নীতীশ কুমার। বরং নীতীশের দল জেডিইউ আগামী লোকসভা নির্বাচনে রামবিলাস পাসোয়ানের লোকজনশক্তি পার্টির (এলজেপি) সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় আগ্রহী। সরাসরি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও নীতীশ কুমার আজ বুঝিয়ে দিলেন, সরকারি ভাবে না হলেও, ব্যক্তিগত স্তরে এই নিয়ে দু’দলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
আজ জনতা দরবারে মুখ্যমন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্ট দেখছি, কংগ্রেস নাকি আরজেডি, জেডিইউ-এর সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এটা স্পষ্ট করে দেওয়া দরকার যে কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের কোনও স্তরে কোনও কথাবার্তা হয়নি। আমরা লাইনেই নেই।” বরং জেডিইউ যে তাদের জোটে রামবিলাসকে পেতে আগ্রহী সে ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন নীতীশ। তাঁর বক্তব্য, “আমি রামবিলাস পাসোয়ানকে সম্মান করি। তাঁর সঙ্গে আমার সুসর্ম্পক রয়েছে। আপনারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। ও বহোত আচ্ছে আদমি হ্যায়।”
রামবিলাস পাসোয়ানের সঙ্গে তাঁর সর্ম্পকের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “২০০৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর দিল্লিতে রাতে তাঁর বাড়িতে ছিলাম। নতুন বছর শুরু হয়েছিল তাঁর বাড়ি থেকেই।” উল্লেখ্য, ২০০৫ সালেই নীতীশ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন। সে সময়ের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে নীতীশ বলেন, “সে বারেও জোটে আমরা রামবিলাসকে পেতে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ পর্যন্ত দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি রাজি হননি।” এলজেপির সঙ্গে জেডিইউ-এর সমঝোতা হবে কী না এর জের টেনে প্রশ্ন করা হলে নীতীশ বলেন, “এটা রামবিলাসকেই ঠিক করতে হবে। তাঁকেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” রামবিলাস পাসোয়ান রাজি হলেই যে সমঝোতায় হবে এ দিন নীতীশের কথাতেই তা স্পষ্ট হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রামবিলাসের মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “নীতীশ কুমার আমার পুরনো বন্ধু। তবে আমি কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করব। তা না হলে এলজেপি তার বিকল্প সঙ্গী খুঁজে নেবে।”
রামবিলাস পাসোয়নের দল এলজেপি, লালুর আরজেডির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যাওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে আগ্রহী ছিল। কিন্তু আসন ছাড়া নিয়ে আরজেডি-র সাম্প্রতিক মনোভাবে বিরক্ত রামবিলাস। এবার কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হওয়ায় এখনও সরকারি ভাবে আরজেডি এবং এলজেপির মধ্যে আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কংগ্রেসের সঙ্গে এই দুই দলই যেতে আগ্রহী। কিন্তু কংগ্রেস এখনও কোনও সিদ্ধান্ত না জানানোয় বিষয়টি পুরোপুরি ঝুলে রয়েছে। এই অবস্থায় আজ নীতীশের বক্তব্য নয়া সমীকরণের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এ দিকে, আজ দিল্লিতে বিহার বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে রাজ্যের দুই নির্দল সাংসদ পুতুল সিংহ এবং ওমপ্রকাশ যাদব বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এঁরা দু’জনেই এক সময় জেডিইউয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পুতুল দেবী বাঁকা থেকে নির্বাচিত নির্দল সাংসদ। তিনি প্রাক্তন জেডিইউ নেতা দিগ্বিজয় সিংহের স্ত্রী। ২০০৯ সালে নীতীশ কুমার দিগ্বিজয়কে প্রার্থী না করায় তিনি নির্দল হিসেবে লোকসভায় জয়ী হন। সেই সময় নীতীশ তাঁর দলের কোনও প্রার্থী সেখানে দেননি। ফলে বিজেপি-জেডিইউ জোট তাঁকেই সমর্থন করে। ২০১০ সালে দিগ্বিজয়ের মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী পুতুল দেবী নির্দল প্রার্থী হিসেবে উপ-নির্বাচনে আরজেডিকে হারিয়ে জিতে আসেন। অন্য দিকে, ওমপ্রকাশ যাদব সিওয়ান থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে তিনি জেডিইউ প্রার্থী হয়ে আরজেডির মহম্মদ শাহবুদ্দিনের বিরুদ্ধে লড়ে হেরে যান। এরপরে শাহবুদ্দিন একাধিকবার তাঁকে আক্রমণ করে। ২০০৯ সালে ফের লড়াইয়ে নামেন তিনি। তবে নীতীশ কুমার তাঁকে প্রার্থী করেননি। তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শাহবুদ্দিনের স্ত্রী হিনাকে হারিয়ে নির্বাচিত হন।
|
পুরনো খবর: দুর্নীতি রুখতে ডিএম-দের বেশি ক্ষমতা দেবেন নীতীশ |
|
|
|
|
|