কেন্দ্রওয়াড়ি ইস্তাহার এ বার বিজেপিরও
ড় বড় স্বপ্নের ভারে হারিয়ে না যায় গেরস্থের সমস্যার দিনলিপি। সচেতন নরেন্দ্র মোদী তাঁদের প্রত্যাশাও ভরতে চান প্রতিশ্রুতির ঝুলিতে। বিজেপি তাই জাতীয় ইস্তাহারের পাশাপাশি কেন্দ্র ধরে আলাদা ইস্তাহার তৈরি করবে লোকসভা ভোটের জন্য।
দিল্লিতে বিধানসভা ভোটে এই পথে হেঁটে সাফল্য পেয়েছে আম আদমি পার্টি। রাহুল গাঁধীও দলকে এই পথে চলার নির্দেশ দিয়েছেন এর পর। বিজেপি-র অবশ্য দাবি, কাউকে দেখে নয়, তাঁরা আগে থেকেই এ ভাবে ভেবে রেখেছেন। এমনকী, সেই কাজ অনেকটা এগিয়ে রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন দলের পশ্চিমবঙ্গ নেতৃত্ব।
ঝা চকচকে নতুন শহর, বুলেট ট্রেন, রোজগারের নানান সুলুক দিয়ে গত কাল আশ্বাসের রামধনু দেখিয়েছেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। লোকসভার আগে দলের ইস্তাহারে সে সব ফলাও করে প্রকাশও হবে। কিন্তু ঘরে-ঘরে আশপাশের সমস্যা, সে এলাকার আশা-আকাঙ্ক্ষার বহরও নেহাত কম নয়। ভোটের আগে সেই আশা পূরণের দাওয়াইও দিতে চান মোদী। ছুঁতে চান সেই মনও, যাঁরা মোদীর দেখানো বড় স্বপ্নের পাশে নিজের ছোটখাটো সমস্যাগুলিরও নিদান চান। আর সে কারণেই মোদীর নির্দেশ, কেন্দ্রীয় স্তরে যেমন ইস্তাহার প্রকাশ হয়, তেমনই রাজ্যে-রাজ্যে এমনকী নির্বাচনী কেন্দ্র ধরে ধরে পৃথক ইস্তাহার তৈরি করুক দল।
বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ এই বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন মোদীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বকে পৃথক ইস্তাহার তৈরির কথা বলা হয়েছে। এক-একটি এলাকায় এক-এক ধরনের সমস্যা থাকে। থাকে আঞ্চলিক প্রত্যাশা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তৈরি ইস্তাহারে সেগুলি ঠাঁই পায় না। তাই নির্বাচন কেন্দ্র ধরে ধরে আলাদা করে ইস্তাহার তৈরির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।”
এটা আদৌ আপ বা কংগ্রেসের অনুসরণ নয় বলেই দাবি বিজেপির বক্তব্য, অনেক আগেই দলের এই ভাবনা ছিল। এমনকী, কিছু রাজ্য থেকেই দাবি উঠছিল, তাদের পৃথক ইস্তাহার প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়া হোক। যেমন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তিনি বললেন, “এক মাস আগে আমি রাজনাথ সিংহের সঙ্গে রাজ্যের জন্য পৃথক ইস্তাহার প্রকাশের কথা বলেছি। এখন তো সব রাজ্যের প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ইস্তাহার প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নেতৃত্ব সেই অনুযায়ী ইস্তাহারের সিংহভাগ কাজও এগিয়ে ফেলেছেন। কেন্দ্রের অর্থ গরিবদের হাতে পৌঁছানো সুনিশ্চিত করা, বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে এইমস করা, বড় বিশ্ববিদ্যালয় গড়া, চা ও পাট শিল্প চাঙ্গা করা, রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ, গঙ্গা-তিস্তার সংস্কার, বন্যা রোধ, সুন্দরবনকে ঢেলে সাজার মতো বিষয়গুলি পশ্চিমবঙ্গের পৃথক ইস্তাহারে রাখার কথা ভেবে রেখেছেন রাহুল সিংহরা। এরই সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশ, উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার মতো বিষয়গুলি যাতে জাতীয় ইস্তাহারে ঠাঁই পায়, তার জন্য রাজ্য নেতৃত্ব চাপ বাড়াচ্ছেন।
মোদী অবশ্য গত কালই আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে আঞ্চলিক প্রত্যাশাকে কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা হবে না। মনমোহন সিংহ সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ধর্ম না মানলেও তিনি সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে চান। যেখানে কেউ বড় ভাই বা ছোট ভাই নয়, সকলে মিলে একটি টিম হিসেবে দেশের উন্নয়ন করবে। কিন্তু বড় স্বপ্ন দেখাতে গিয়ে ছোট আকাঙ্ক্ষা না মেটার খেসারত যাতে মোদীকে দিতে না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক তিনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.