সংঘর্ষ চলছেই, মালদহে ভোট স্থগিত দুই কলেজে
নিজস্ব প্রতিবেদন |
কলেজ নির্বাচন ঘিরে কলকাতা এবং অন্যান্য জেলায় সংঘর্ষের বিরাম নেই। শুক্রবার কোথাও চলে গুলি। কোথাও মার খান কলেজ শিক্ষক। অশান্তির জেরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায় মালদহের দু’টি কলেজে। খাস কলকাতার জয়পুরিয়া কলেজে নির্বাচনের আগের দিন দু’দলের সংঘর্ষে এক ছাত্র এবং এক ছাত্রী আহত হন।
আজ, শনিবার জয়পুরিয়া কলেজে ভোট হওয়ার কথা। পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেলা ২টো নাগাদ মনোনয়ন নিয়ে এক ছাত্রের বিরূপ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দু’দল ছাত্রের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তার পরে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দু’পক্ষই থানায় মারধরের অভিযোগ করে। মাসখানেক আগেও মনোনয়নপত্র পেশ নিয়ে ওই কলেজে সংঘর্ষ হয়েছিল।
|
|
প্রসন্নদেব মহিলা কলেজের এক টিএমসিপি সমর্থকের উপর হামলা। জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল। |
উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ— বেশির ভাগ কলেজেই এ দিন গোলমাল হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) এবং এসএফআইয়ের মধ্যে। মালদহের সামসি কলেজে মনোনয়নপত্র তোলা শুরু হতেই সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে বোমা ও গুলি চালানোর অভিযোগ তোলে। টিএমসিপি সমর্থক জনাব আলির মাথায় গুলি লাগে। তাঁকে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়।
টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসের অভিযোগ, “এসএফআই দুষ্কৃতীদের এনে বোমাবাজি করে। আমাদের সমর্থকদের লক্ষ করে গুলিও চালায়।” অভিযোগ অস্বীকার করেছে এসএফআই। সংগঠনের জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দে-র দাবি, “বৃহস্পতিবার রাত থেকে ওরাই কলেজের দখল নেয়। এ দিন আমাদের কর্মীরা যেতেই বহিরাগতেরা বোমা-গুলি চালাতে থাকে।”
২৭ জানুয়ারি মালদহের ১১টি কলেজে ছাত্রভোট হওয়ার কথা। কিন্তু এ দিনের গোলমালের পরে সামসি কলেজে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অম্নান ভাদুড়ি বলেন, “যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে নির্বাচন সম্ভব নয়।” ভোট স্থগিত হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজেও। শুক্রবার ছিল সেখানে মনোনয়নপত্র তোলার দিন। ওই কলেজে ভোট বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সোনালি চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের নতুন কলেজ। বিভাগীয় কিছু সমস্যার জন্যই নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে।” |
|
হাসপাতালে টিএমসিপি সমর্থক জনাব আলি। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়। |
এ দিন জলপাইগুড়ির পাঁচটি কলেজে নির্বাচন ছিল। তার মধ্যে প্রসন্নদেব মহিলা কলেজ ও আনন্দচন্দ্র কলেজে উত্তেজনা ছড়ায়। প্রসন্নদেব কলেজ চত্বরে দিনভর চলে বহিরাগতদের দাপাদাপি। ছাত্রীদের মধ্যে মারামারিও হয়। টিএমসিপি সমর্থক বর্ষা দে এবং এসএফআই সমর্থক সুদেষ্ণা চক্রবর্তীকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে পাঁচ সাংবাদিকও জখম হন। দুপুরে আইজি (উত্তরবঙ্গ) জাভেদ শামিম কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় এসএফআই এবং ছাত্র পরিষদ সমর্থকেরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। আইজি কর্তব্যরত পুলিশকর্তাদের নির্দেশ দেন, পরিচয়পত্র দেখে ছাত্রীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আনন্দচন্দ্র কলেজেও দিনভর উত্তেজনা ছিল।
পশ্চিম মেদিনীপুরে দাসপুরের চাঁইপাট কলেজে এ দিন মনোনয়নপত্র পরীক্ষার মধ্যেই টিএমসিপি-এসএফআই সংঘর্ষে দু’পক্ষের ১০ জন আহত হন। ভাঙচুর চলে। মারধরে জখম হন এক শিক্ষকও। প্রতিবাদে চাঁইপাট-সুলতাননগর সড়ক অবরোধ করে এসএফআই।
নদিয়ায় মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ী কলেজে মনোনয়ন পেশের সময় এসএফআই-সমর্থকদের মেরেধরে হটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। এসএফআই এলাকার ভাজনঘাট মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। করিমপুর পান্নাদেবী কলেজেও মনোনয়ন পেশ নিয়ে অশান্তি হয়। |
|