|
|
|
|
মধ্যমগ্রাম তদন্তে দময়ন্তীকে চেয়ে আর্জি রাজ্যের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণের ঘটনায় তদন্তের কাজ দক্ষ হাতে সামলেছিলেন তিনি। তাই দময়ন্তী সেনকেই মধ্যমগ্রাম গণধর্ষণ কাণ্ডে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হোক। কলকাতা হাইকোর্টের কাছে এই আবেদন খোদ রাজ্য সরকারের।
মধ্যমগ্রামে দু’দফায় গণধর্ষণের পরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এক কিশোরীর। মেয়ের মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন কিশোরীর বাবা। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, এর আগে পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণের ঘটনায় দময়ন্তী সেন অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করেছিলেন। তিনি ভাল কাজ করেছিলেন। তাই মধ্যমগ্রামের গণধর্ষণ কাণ্ডে তদন্তের কাজটা তাঁর নেতৃত্বে হলে আশা করা যায়, প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া যাবে।
অ্যাডভোকেট জেনারেলের এই আর্জি শুনে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের কাছে তাঁর মতামত জানতে চান। বিকাশবাবুও বলেন, দময়ন্তী সেন এক জন দক্ষ অফিসার। তাঁকে চিনি। তিনি তদন্ত করলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। বিচারপতি তার পরেই অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বলেন, আপনি স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে কথা বলে সরকারের চূড়ান্ত মতামত সোমবার হাইকোর্টকে জানান। ওই দিন এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেওয়া হবে।
পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার পরেই কলকাতা পুলিশের তৎকালীন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দমন) দময়ন্তীদেবী জানিয়েছিলেন, ওই মহিলাকে (অভিযোগকারিণী) ধর্ষণ করা হয়েছে। তার কয়েক মাস পরেই তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়। রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের মতে, ওই মহিলার দায়ের করা ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করে নেওয়ায় দময়ন্তীদেবীকে বদলি করা হয়েছিল। সম্প্রতি পদোন্নতিও হয়েছে তাঁর। এখন তাঁর দক্ষতাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁকেই মধ্যমগ্রাম কাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভেবেছে রাজ্য সরকার। পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, উচ্চ আদালত যদি সরকারের আবেদন মঞ্জুর করে, তা হলে তদন্তের দায়িত্ব স্বাভাবিক ভাবেই পেয়ে যাবে সিআইডি। কারণ, দময়ন্তীদেবী এখন ডিআইজি (সিআইডি)। তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া মানে সিআইডি-রই দায়িত্ব পাওয়া।
মধ্যমগ্রামের ওই কিশোরীকে প্রথম বার ধর্ষণ করার পরে সে পুলিশের সহায়তা চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশের কাছে নিরাপত্তা পাওয়ার পরিবর্তে ফের তাকে ধর্ষিত হতে হয়। মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে ওই কিশোরী পুলিশের কাছে জানায়, যারা তাকে ধর্ষণ করেছিল, তারাই তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার মৃত্যু হয় আর জি কর হাসপাতালে।
কিশোরীর বাবার অভিযোগ, মেয়ের সুচিকিৎসার জন্য তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে তিনি বারবার আর জি কর-কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আর জি কর-কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হননি। এমনকী মেয়ের মৃত্যুর পরে পরিবারের লোকের উপস্থিতি
ছাড়াই এবং আসল ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু-নথি না-নিয়েই মৃতদেহ দাহ করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। কিশোরীর বাবা মামলার আবেদনে এই সমস্ত বিষয়ই তদন্ত করে দেখতে বলেছেন। |
|
|
|
|
|