|
|
|
|
ছাত্রভোটে সব আসনে প্রার্থী নেই টিএমসিপিরও
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠনগুলো তো পারেইনি, এমনকী এ বার কলেজের ভোটে সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদও। কেন এমন পরিস্থিতি হল, তা নিয়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের অন্দরে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। এটা সাংগঠনিক ব্যর্থতারই পরিণতি কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। যদিও সাংগঠনিক ব্যর্থতার কথা মানতে নারাজ টিএমসিপি। সংগঠনের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “কয়েক’টি কলেজে কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়া যায়নি। এটা সাংগঠনিক ব্যর্থতার ব্যাপার নয়। কিছু কলেজে প্রার্থীরা দেরিতে পৌঁছেছিলেন। তাই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। তা ছাড়া, এখন স্নাতকোত্তর পরীক্ষাও চলছে।” তবে সব আসনে প্রার্থী দিতে না-পারায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠনকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধী শিবির। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডার কটাক্ষ, “ছাত্রছাত্রীরা পাশে নেই। তাই টিএমসিপি সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। জোর-জুলুম করে সর্বত্র ছাত্রভোট হয় না কি!”
মেদিনীপুর কলেজ, খড়্গপুর কলেজ, ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ, সবং কলেজ, মেদিনীপুর মহিলা কলেজের মতো কলেজে এ বার সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি টিএমসিপি। এখন জেলায় টিএমসিপির সংগঠন মজবুত রয়েছে। বাম আমলে এসএফআইয়ের সংগঠন মজবুত ছিল। তখন অবশ্য এমন ঘটনা ঘটেনি। কলেজ ভোটে সব আসনেই প্রার্থী দিত এসএফআই। তবে, সার্বিক ভাবে এ বারের ছাত্রভোটে টিএমসিপির দাপট অব্যাহত। কেমন? পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৪টি কলেজ রয়েছে। জানা গিয়েছে, এই সব কলেজের ছাত্র সংসদে সব মিলিয়ে আসন সংখ্যা ৭২০টি। এর মধ্যে ছাত্র পরিষদ প্রার্থী দিয়েছে ১০৫টি আসনে। অর্থাৎ, ১৫ শতাংশ আসনে। ডিএসও প্রার্থী দিয়েছে ৮৬টি আসনে। অর্থাৎ, ১২ শতাংশ আসনে। এসএফআই প্রার্থী দিয়েছে ৭৩টি আসনে। অর্থাৎ, ১০ শতাংশ আসনে। অন্য দিকে, টিএমসিপি প্রার্থী দিয়েছে ৭০৭টি আসনে।
কেন এই পরিস্থিতি? এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগতর দাবি, “কোনও কলেজেই ছাত্রভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। যে সব কলেজে ছাত্রছাত্রীরা টিএমসিপির অন্যায়, জোর-জুলুমের প্রতিবাদ করেছে, সেখানে বহিরাগতদের এনে অশান্তি করা হয়েছে।” সাংগঠনিক ব্যর্থতা নেই? সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের জেলা সম্পাদকের মন্তব্য, “কিছু ক্ষেত্রে হয়তো সাংগঠনিক ব্যর্থতা রয়েছে। তবে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন হলে আমরা আরও অনেক আসনে প্রার্থী দিতে পারতাম। যাঁরা আমাদের প্রার্থী হবেন বলে ঠিক ছিল, টিএমসিপি তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়েছে।” টিএমসিপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে ছাত্র পরিষদও। সংগঠনের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুল বলেন, “দখলদারির রাজনীতি না-চললে আমরা আরও বেশি সংখ্যক আসনে প্রার্থী দিতাম।” ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতির কটাক্ষ, “শাসক দলের ছাত্র সংগঠন সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি, এমনটা আগে কখনও হয়েছে না কি! আসলে, ছাত্রছাত্রীরা আর ওদের পাশে নেই।”
ডিএসও’র জেলা সম্পাদক মণিশঙ্কর পট্টনায়েক বলেন, “অধিকাংশ কলেজে বিন্দুমাত্র গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছিল না।” সমস্ত অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে টিএমসিপি। জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “এ বার সব কিছু সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে।” |
|
|
|
|
|