|
|
|
|
ভর্তুকির সিলিন্ডার ১২ করছে কেন্দ্র
প্রেমাংশু চৌধুরী • নয়াদিল্লি
১৭ জানুয়ারি |
ভোটবাজারে সেই ভর্তুকি-নীতিরই হাত ধরলো কেন্দ্র।
চার রাজ্যের ভোটে বিপর্যয়ের পর থেকেই দলের ভিতরে-বাইরে আওয়াজটা বাড়ছিল। তাতে সুর মিলিয়েছিলেন খোদ রাহুল গাঁধীও। কিন্তু অর্থনীতির যুক্তি দেখিয়ে আপত্তি তুলছিলেন পি চিদম্বরমরা। শেষ পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনের মুখে রাহুলের দাবি মানল কেন্দ্র। ভর্তুকিতে দেওয়া রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের সংখ্যা ৯ থেকে বাড়িয়ে ১২টি করা হচ্ছে। যার ধাক্কায় অন্তত ৩,৩০০ কোটি টাকার বাড়তি বোঝা চাপতে চলেছে মনমোহন সিংহ সরকারের ঘাড়ে। যা বেড়ে ৫,৮০০ কোটি টাকাতেও পৌঁছতে পারে। ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে আম-জনতাকে কিছুটা সুরাহা দিয়ে ভোটের বাক্সে ফায়দা তুলতেই সরকার যে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা খোলাখুলিই মেনে নিচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা। আর কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার অর্থ, দেশের ৯৭% পরিবারকে আর কোনও সিলিন্ডার বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে না।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিদ্যুতে ভর্তুকি বাড়িয়েছেন। ঘুরপথে হলেও ভর্তুকি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জলের ক্ষেত্রে। আজ মনমোহন-সরকারকেও সেই পথেই ঠেলেছেন রাহুল। অধিবেশন মঞ্চ থেকে নাটকীয় ভাবে মনমোহনকে উদ্দেশ করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীজি, ন’টি সিলিন্ডারে হচ্ছে না। মহিলারা আরও বেশি চাইছেন। পরিবার পিছু আমাদের ১২টি করে সিলিন্ডার চাই-ই। দয়া করে সংখ্যাটা বাড়ান।” মনমোহনের মুখের স্মিত হাসিতে তখন নীরব সম্মতির লক্ষণ। অধিবেশন শেষ হতেই তেলমন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি বলেন, “সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়ানো হবে।” তেল মন্ত্রকের কর্তারা জানিয়ে দেন, মন্ত্রীর নির্দেশ এলেই মন্ত্রিসভায় সরকারি ভাবে প্রস্তাব পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সরকারি সিদ্ধান্ত এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
এখন বছরে যে ন’টি সিলিন্ডার ভর্তুকিতে মেলে, সে জন্য কলকাতায় সিলিন্ডার পিছু ৪১৬ টাকা দাম দিতে হয়। ন’টির পরে আরও সিলিন্ডার নিলে দিতে হয় ১২৭০ টাকা। আজ রাহুল দাবি করেছেন, ন’টি সিলিন্ডারে চলছে না। তেল মন্ত্রকের কর্তারা কিন্তু এ কথা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, দেশে এখন প্রায় ১৫ কোটি এলপিজি গ্রাহক রয়েছেন। তার মধ্যে ৮৯.২ শতাংশ পরিবারেরই বছরে ৯টি সিলিন্ডারে কাজ চলে যায়। বাকি মাত্র ১০ শতাংশ পরিবারে ৯টির বেশি সিলিন্ডার লাগে। ১২টি সিলিন্ডার ভর্তুকিতে দিলে মোট গ্রাহকের ৯৭ শতাংশকেই আর কোনও সিলিন্ডার বেশি দামে কিনতে হবে না। কংগ্রেস নেতৃত্বের আশা, এলপিজি-গ্রাহকদের এই অংশের সমর্থন তাঁরাই পাবেন।
আরও একটি আশঙ্কা রয়েছে তেল মন্ত্রকের। তা হল, ফের রান্নার গ্যাসের কালোবাজারি বাড়তে পারে। যাঁদের ৯টির কম সিলিন্ডারে কাজ চলে যায়, তাঁদের অনেকে কালোবাজারে তা বেচে দিচ্ছেন বলে সম্প্রতি সন্দেহ করছিলেন তেল মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ। ভর্তুকির সিলিন্ডারের সংখ্যা ফের বাড়লে এই কালোবাজারি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। |
|
|
|
|
|