বিকেল চারটে। টালিগঞ্জ ট্রামডিপোর উল্টো দিকের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে পর পর দাঁড়িয়ে সাতটি ট্যাক্সি। মূর অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা শুভঙ্কর চক্রবর্তী মাকে নিয়ে থিয়েটার রোড যাবেন বলে এলেন। কিন্তু কোনও ট্যাক্সিই যেতে রাজি হল না। উল্টে স্ট্যান্ডের স্টার্টার শুভঙ্করবাবুকে জানান, রানিং ট্যাক্সি ধরে নিতে।
শুভঙ্করবাবু বলেন, “অসুস্থ মাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি ধরা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু প্রায় ৪০ মিনিটের উপর দাঁড়িয়ে যখন কোনও ট্যাক্সি পেলাম না, তখন বাধ্য হয়েই অটো ধরে হাজরা মোড়ে পৌঁছে সেখান থেকে ট্যাক্সি ধরে গেলাম থিয়েটার রোড।”
প্রায় একই অভিজ্ঞতা বাগবাজারের বাসিন্দা সুবীর ভট্টাচার্যের। তিনি এসে ছিলেন ট্যাক্সিতে বাগবাজার যাওয়ার জন্য। কেউ যেতে রাজি নন। ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকা এক-দু’জন চালককে কারণ জিজ্ঞেস করলেন তিনি। ট্যাক্সিচালকরা জানান, অত দূরে কেউ যাবেন না।
|
এই স্ট্যান্ডে প্রতি দিন বহু যাত্রীর এমন অভিজ্ঞতা হয়। অভিযোগ, রোজ সকাল কিংবা বিকেলে ট্যাক্সি ধরতে এসে যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। স্ট্যান্ডের ট্যাক্সি বেশির ভাগ সময় যেতে রাজি হয় না। অনেক সময়েই রানিং ট্যাক্সি মেলে না। আশপাশে আর কোনও ট্যাক্সি স্ট্যান্ড নেই। ফলে ওই এলাকা এবং আশপাশের এলাকার নিত্য যাত্রীদের ট্যাক্সি পাওয়া সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
যে সব ট্যাক্সিচালক যাত্রী প্রত্যাখ্যান করেন, তাঁদের জন্য পরিবহণ দফতর বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এর পরেও যাত্রী প্রত্যাখ্যান চলেছে। শুভঙ্কর, সুবীরবাবুর মতো সাধারণ
যাত্রীদের প্রশ্ন, এই হয়রানির হাত থেকে কী ভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে? পরিবহণ দফতর রাস্তায় ‘নো-রিফিউজাল’ ট্যাক্সি নামিয়েছে। কিন্তু সব স্ট্যান্ডে ‘নো রিফিউজাল’ ট্যাক্সি থাকে না। তাঁদের দাবি, সব স্ট্যান্ডে ‘নো-রিফিউজাল’ ট্যাক্সি রাখার ব্যবস্থা হোক।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “যে সব জায়গায় এ রকম যাত্রী প্রত্যাখ্যান চলছে, সেগুলির দিকে আমরা নজর রাখছি। আশা করছি শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করতে পারব।” |