যে জমিতে মাতৃ ও শিশু হাসপাতালের শিলান্যাস হয়েছিল বছরখানেক আগে, সেই জমিতেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ভবন নির্মাণের কথা জানিয়ে টাঙানো হয়েছে হোর্ডিং। বর্ধমানের আফতাব অ্যাভিনিউয়ে এমন ঘটনায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
গত বছর ১২ মার্চ ওই জমিতে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে মাতৃ ও শিশু হাসপাতালের শিল্যান্যাস হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও স্বপন দেবনাথ। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায় শুক্রবার বলেন, “ওই জমিতে শিল্যান্যাসের পরে আমরা পূর্ত দফতরকে দিয়ে দরপত্র ডাকাই। সেই দরপত্রের পরে কয়েক দিনের মধ্যেই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় যে হোর্ডিং টাঙিয়েছে তা রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে দেখে অবাক হয়েছি। ওই জায়গাটি তো আমাদেরই বলে জানতাম। কী করে বিশ্ববিদ্যালয় হোর্ডিং টাঙিয়েছে জানি না।” |
আফতাব অ্যাভিনিউয়ের জমিতে সেই হোর্ডিং। —নিজস্ব চিত্র। |
তাঁর দাবি, “ওই জমি আমাদের বলেই তো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদের হাতে রয়েছে। সেই কাগজের ভিত্তিতেই তো স্বাস্থ্য দফতর ব্যয়-বরাদ্দও করেছে। সেই নথির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য দফতর ও পূর্ত দফতর যৌথ ভাবে হাসপাতাল ও তার সঙ্গে ক্যানসার রিসার্চ সেন্টার তৈরির কাজ শুরু করত।” ওই জমিতে ডেন্টাল কলেজের পড়ুয়াদের জন্যও হস্টেল তৈরি করা হত বলে দাবি করেন তিনি। তবে তিনি স্বীকার করেন, গত বছর মার্চে হাসপাতালের শিলান্যাসের সময়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আপত্তির কথা জানানো হয়েছিল। তাঁর কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের হোর্ডিংয়ের কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি।”
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যলায়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারের বক্তব্য, “আফতাব অ্যভিনিউয়ের ওই জমিটি বরাবরই আমাদের। প্রায় চার একর জমিতে আমরা দশ তলা প্রশাসনিক ভবন তৈরি করব। ওই জমি যে আমাদের মালিকানধীন, ইতিমধ্যে রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতর এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সচিবদের উপস্থিতিতে তা স্থির হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে তাই ওখানে আমরা ভবন তৈরি করতে পারি বলে নির্দেশ এসেছে। মেডিক্যাল কলেজ কেন সেই নির্দেশ পায়নি, জানি না। তবে তারা সেটা পেয়ে যাবে।” এই ভবন নির্মাণে উচ্চ শিক্ষা দফতর প্রায় ২২ কোটি টাকা দেবে, হোর্ডিংয়ে এ কথাও জানানো হয়েছে। সেই হোর্ডিং ঠিক মতো বসানো হয়েছে কি না দেখতে মাঝে-মধ্যে সেখানে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকেরা যাচ্ছেন বলেও জানা গিয়েছে।
বর্ধমানের ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জমি নিয়ে বিতর্কের বিষয়টি নিয়ে তাদের কেউ কিছু জানায়নি। |