দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলকোট থানার মুসুরি বাসস্টপের কাছে। জখম হন তাঁর আরও তিন সঙ্গী।
নিহত যুবক টোটন শেখকে (২৫) তাদের দলের কর্মী বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “নিহত আমাদের দলের সমর্থক। যারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত তারা আগে সিপিএমের আশ্রয়ে ছিল। এখন তৃণমূলের আশ্রয়ে থেকে সাধারণ মানুষের উপরে অত্যাচার করছে।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “হিংসার রাজনীতি এবং আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে তৃণমূল। বিরোধী দলের কণ্ঠরোধ করতে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে গুণ্ডারাজ কায়েম করতে চায় তৃণমূল।’’ তাঁদের আর এক কর্মীকে অপহরণ করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন প্রদীপবাবু। অবিলম্বে অপহৃত কর্মীকে খুঁজে বের করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার জন্য মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।
তৃনমূলের কাটোয়া মহকুমার পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য এই ঘটনার সঙ্গে তাদের দলের কোনও যোগের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জাও জানান, এই ঘটনায় রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই। সিপিএমের কাটোয়া জোনাল সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “পুরনো শত্রুতার জেরে সমাজবিরোধীদের গোষ্ঠী লড়াইয়ে এমন ঘটেছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত টোটনের বাড়ি কাটোয়ার হরিপুর গ্রামে। এ দিন বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ বর্ধমান থেকে দু’টি বাইকে করে ৬ জন কাটোয়া ফিরছিলেন। বর্ধমান-কাটোয়া রোডে মুসুরি বাসস্টপ থেকে ৫০-৬০ মিটার দূরে একটি ছোট মালবাহী গাড়ি সরাসরি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। আরোহীরা রাস্তার পাশে মাঠে পড়ে গেলে মালবাহী গাড়ি থেকে কয়েক জন বেরিয়ে এসে তাঁদের লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। তাতেই মৃত্যু হয় টোটনের। টোটনের সঙ্গী আজহার, পুটু, এবং সুরজ জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। বাকি দুই সঙ্গী ফজল ও নজাই শেখের কিছু হয়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফজল ও নজাই কাটোয়ার ব্যবসায়ী রাজকুমার মণ্ডল খুনে অভিযুক্ত। ফজলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। নজাই কোথাও লুকিয়ে ছিল। পুটু ও সুরজ দিন ১৫ আগে কাটোয়ার ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় জামিন পেয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, কাটোয়ায় দু’টি সমাজবিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল দীর্ঘদিনের। এর জেরে বেশ কয়েক জন খুনও হয়েছেন। পুলিশ জানায়, প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তা জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল ও তিন রাউন্ড কার্তুজ মিলেছে। মোটরবাইক দু’টি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। |