মকর সংক্রান্তির দিন দামোদরে তলিয়ে যাওয়া দুই যুবকের মধ্যে এক জনের দেহ উদ্ধার হল। অন্ডালের কুঠিডাঙায় যেখানে তাঁরা তলিয়ে গিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার সেই এলাকা থেকেই মিলল চিরঞ্জিত্ গোপের (২১) দেহ।
মঙ্গলবার মকর সংক্রান্তির দিন বন্ধুদের সঙ্গে কুঠিডাঙায় দামোদরের পাড়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন দুর্গাপুরের গোপালমাঠ ও বনগ্রাম এলাকার কয়েক জন যুবক। তাঁদের কয়েক জন নৌকায় চেপে কুঠিডাঙা থেকে উল্টো পাড়ে যান। সেখানে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান বনগ্রামের মোহনপুর প্লটের বছর বাইশের শুভাশিস ঘোষ ওরফে ঝন্টু ও বছর একুশের চিরঞ্জিত গোপ ওরফে পাপ্পু। অন্য বন্ধুরা কুঠিডাঙার পাড়ে ফিরে অন্যদের সে খবর দেন। |
তোলা হচ্ছে দেহ।—নিজস্ব চিত্র। |
মঙ্গল ও বুধবার তল্লাশি চালিয়ে দু’জনের কোনও খোঁজ পায়নি পুলিশ। পুলিশি তত্পরতার অভিযোগে সরব হন দুই যুবকের পরিজন থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষে বুধবার বিকেলে কলকাতার লালবাজার থেকে উদ্ধারকারী দল আনে পুলিশ। কিন্তু অন্ধকার নেমে যাওয়ায় সে দিন বেশিক্ষণ উদ্ধারকাজ চালাতে পারেননি ওই ডুবুরিরা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ফের তল্লাশি শুরু হয়। চার জন ডুবুরি নৌকায় চেপে কুঠিডাঙা থেকে দামোদরের অন্য পাড়ে যান। দু’জন ডুবুরি জলে নামেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার যেখানে ওই দুই যুবক ডুবে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে ৫০ মিটারের মধ্যে ১২টা ০২মিনিট নাগাদ একটি দেহের হদিস পান ডুবুরিরা। এর পরে তাঁকে টেনে তুলতে আরও মিনিট কুড়ি সময় লাগে। পাড়ে তোলার পরে পিক-আপ ভ্যানে করে মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনেরা। চিরঞ্জিতের বাবা শিশুময় গোপ বলেন, “কেন এমন হল বুঝতে পারছি না।”
পাপ্পুর দেহ উদ্ধার হলেও আর এক নিখোঁজ ঝন্টুর এ দিনও কোনও হদিস মেলেনি। তাঁর পরিবারের লোকজন জানান, তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আলো কমে আসায় ডুবুরির দল উদ্ধারকাজ বন্ধ করে নদী থেকে উঠে আসে। এ দিন আর তল্লাশি চালানো সম্ভব নয় বলে পুলিশকে জানিয়ে দেন তাঁরা। এই কথা জানাজানি হতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। পুলিশ অবশ্য বুঝিয়ে-সুজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। |