অন্ডালে খোঁজ নেই দুই যুবকের, সন্ধ্যায় এলো ডুবুরি
টনার পরে প্রায় দেড় দিন কেটে গেলেও হদিস মিলল না দামোদরে তলিয়ে যাওয়া দুই যুবকের। বুধবার সকালে অন্ডালের কুঠিডাঙায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। দামোদরে নেমে খোঁজাখুঁজি করেন স্থানীয় কয়েক জন যুবকও। বিকেলে কলকাতা থেকে ডুবুরির দল এসে পৌঁছয়। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও দুর্গাপুরের ওই দু’জনের কোনও খোঁজ মেলেনি। তল্লাশিতে পুলিশি তৎপরতার অভিযোগ তুলেছেন নিখোঁজদের স্বজন ও স্থানীয় কিছু বাসিন্দারা। পুলিশ যদিও তা মানেনি।
কী ভাবে তলিয়ে গেল ঝন্টু-পাপ্পু, বলছেন তাঁদের বন্ধু সুরজিৎ গোপ।
মঙ্গলবার মকর সংক্রান্তির দিন বন্ধুদের সঙ্গে কুঠিডাঙায় দামোদরের পাড়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন দুর্গাপুরের গোপালমাঠ ও বনগ্রাম এলাকার কয়েক জন যুবক। তাঁদের কয়েক জন নৌকায় চেপে কুঠিডাঙা থেকে উল্টো পাড়ে যান। সেখানে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান বনগ্রামের মোহনপুর প্লটের বছর বাইশের শুভাশিস ঘোষ ওরফে ঝন্টু ও বছর একুশের চিরঞ্জিত গোপ ওরফে পাপ্পু। অন্য বন্ধুরা কুঠিডাঙার পাড়ে ফিরে অন্যদের সে খবর দেন। সে দিনই তল্লাশিতে পুলিশি উদাসীনতার অভিযোগে পাড়ের মানুষজন ক্ষোভ-বিক্ষোভ করেন। পুলিশের সঙ্গে বচসাও হয়।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে আটটি নৌকায় ফের তল্লাশি শুরু হয়। প্রচুর ভিড় করেন মানুষজন। দুর্গাপুরের গোপালমাঠ, অন্ডালের শ্রীরামপুর, রামপ্রসাদপুর, দামোদরের মানা ইত্যাদি এলাকা থেকেও অনেকে জড়ো হন পাড়ে। অন্ডাল থানার পুলিশ মোতায়েন ছিল সেখানেও। নৌকায় চেপে পুলিশকর্মীরা দামোদরে খোঁজ শুরু করেন। প্রতিটি নৌকায় ছিল জাল-সহ কাঁটা। দুপুর ২টো পর্যন্ত সেগুলি দিয়ে খোঁজাখুঁজির পরে পুলিশকর্মীরা পাড়ে ফিরে আসেন। নৌকায় পুলিশ তল্লাশি চালানোর সময়ে গ্রামের জনা কুড়ি যুবকও সাঁতার কেটে খোঁজার চেষ্টা করেন। শেষে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিতে পুলিশ লালবাজার থেকে ডুবুরির দল আনার ব্যবস্থা করে।
এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিপর্যয় মোকাবিলা দল কলকাতা থেকে এসে পৌঁছয়। তাঁদের মধ্যে দু’জন নৌকায় চড়ে দামোদরে যান। বাকিরা এলাকাটি ঘুরে দেখেন। তবে সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় এ দিন উদ্ধারকাজ বেশিক্ষণ করতে পারেননি তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁরা ফের তল্লাশি শুরু করবেন বলে জানানো হয়।
উদ্ধারকাজ দেখতে ভিড় কুঠিডাঙায়। বুধবার সকালে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
সকাল থেকেই কুঠিডাঙায় ছিলেন ঝন্টুর বাবা চিত্তরঞ্জন ঘোষ ও পাপ্পুর বাবা শিশুময় গোপ। নিখোঁজ দুই যুবকের বন্ধু সুরজিৎ গোপ জানান, মঙ্গলবার তাঁরা ১২ জন এক সঙ্গে এসেছিলেন। পাপ্পু, ঝন্টু-সহ কয়েক জন নৌকায় চেপে উল্টো দিকের পাড়ে যান। সেখানে চপ-মুড়ি খাওয়ার পরে স্নানে নামেন তাঁরা। সুরজিৎ বলেন, “এক সঙ্গে পাঁচ জন স্নান করছিলাম। হঠাৎ ঝন্টু ডুবে যাচ্ছে দেখে আমরা টেনে বাঁচানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তা করতে গিয়ে আমরাও তলিয়ে যাচ্ছিলাম। তাই ওকে আর ধরে রাখতে পারিনি। হাত ছেড়ে যায়। এর মধ্যে পাপ্পুও তলিয়ে যায়।”
ঝন্টুর দাদা কৌশিক ঘোষ জানান, নিখোঁজ দুই যুবকই আইটিআইয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ খবর পাওয়ার পরেই যদি তৎপরতা দেখাত তাহলে অনেক আগেই দু’জনকে উদ্ধার করা যেত। কিন্তু ঘটনাটি বাঁকুড়ায় দিকে ঘটেছে বলে প্রথমে পুলিশ দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করে বলে তাঁদের অভিযোগ। গোপালমাঠ এলাকার বাসিন্দা তথা দুর্গাপুরের তৃণমূল মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায় এ দিন সকাল থেকে ঘটনাস্থলে ছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি বলেন, “পুলিশের সঙ্গে কথাবার্তা বলে কলকাতা থেকে উদ্ধারকারী দল আনার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এখনও কারও হদিস পাওয়া যায়নি। কাল আবার উদ্ধারকাজ হবে।”
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি অজয় প্রসাদ অবশ্য বলেন, “পুলিশি তৎপরতার অভাবের অভিযোগ ভিত্তিহীন। মঙ্গলবার খবর পাওয়ার পরেই সিভিল ডিফেন্সের আট কর্মীকে নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। এ দিন চার জন ডুবুরি আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের তল্লাশি শুরু হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.