কেউ সাজিয়েছেন খনিতে প্রয়োজনীয় নানা ছোটখাট যন্ত্রের পসরা। কোথাও আবার হাতের কাজের শৌখিন জিনিসপত্র। আসানসোলে দ্বিতীয় বর্ষের মেগা বাণিজ্য মেলায় মিলছে সবই।
আসানসোল বণিকসভার উদ্যোগে গত শনিবার থেকে রেল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে এই মেলা। উদ্বোধন করেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক। মেলা চলবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। নানা সরকারি, বেসরকারি শিল্প সংস্থার স্টলের পাশাপাশি প্রচুর হস্তশিল্পের সামগ্রীরও পসরা বসেছে।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, এই শিল্পাঞ্চলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসারে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, আসানসোল শিল্পাঞ্চলে একটি আরবান ও রুরাল হাট তৈরি করা। |
রেল স্টেডিয়ামে বাণিজ্য মেলা।—নিজস্ব চিত্র। |
স্বপনবাবু আরও জানান, আসানসোলে ভারী শিল্পের পাশাপাশি অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পও আছে। সেখানে বহু শ্রমিক কাজ করেন। সেই সব শিল্প সংস্থার উন্নয়ন হলে এলাকার বেকার যুবকদের আর্থিক সংস্থান হবে। তিনি আরও জানান, গত বছর কুটির শিল্প থেকে রাজ্যের আয় হয়েছিল প্রায় ৮.৫৯ কোটি টাকা। এ বছর তা দ্বিগুন করার পরিকল্পনা রয়েছে। কৃষিমন্ত্রী মলয়বাবু জানান, এই শিল্পাঞ্চলেও একাধিক গ্রাম রয়েছে যেখানে কৃষিকাজ হয়। সেই সব এলাকায় চাষাবাদের উন্নতির জন্যও সরকার একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে। তার কিছু কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে। মাছচাষেরও উন্নতির জন্য খনিগুলির জলভর্তি পরিত্যক্ত খাদান ব্যবহারের পরিকল্পন রয়েছে।
আসানসোলের এই মেগা বাণিজ্য মেলা নিয়ে খুশি এলাকার সরকারি শিল্প সংস্থাগুলির আধিকারিকেরাও। আসানসোলের ডিআরএম সঞ্জয় সিংহ গেহেলতের আশা, এই ধরনের মেলা এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার করবে। প্রচুর পণ্য আমদানি-রফতানি হবে। ফলে, রেলের আয় বাড়বে ও এলাকার আর্থিক উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন তিনি। ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক নরেন্দ্র কোঠারির মতে, এই ধরনের মেলার আয়োজন হলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই তাঁদের প্রয়োজন মিটিয়ে নিতে পারবেন সহজে। ইসিএলের ডিরেক্টর (পার্সোনেল) কে এস পাত্র জানান, এই ধরনের মেলার মাধ্যমে শিল্প-বাণিজ্য সংক্রান্ত নানা রকমের তথ্যের আদানপ্রদান হয়, যা খুবই উপকারী ও প্রয়োজনীয়। এ বার মেলার মাঠে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৬৮টি স্টল রয়েছে। অনুসারী শিল্পের সামগ্রী, পাম্প, ছোটখাট যন্ত্রপাতি, কনভেয়র বেল্টের মতো খনিতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়াও রয়েছে গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় কাঠের নানা জিনিসপত্র, বেতের সোফা ইত্যাদির স্টলও। তবে বিক্রেতাদের ভিড় থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি নিয়ে চিন্তায় উদ্যোক্তারা। মেলার মাঠে যে রকম ভিড় আশা করেছিলেন তাঁরা, তেমনটা হচ্ছে না। বণিকসভার সভাপতি সুব্রত দত্ত যদিও জানান, মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপতিদের এই মেলায় আনাই প্রধান উদ্দেশ্য। তাঁদের ভিড় হয়েছে। সংখ্যায় কম হলেও সাধারণ ক্রেতারাও আসছেন বলে জানান তিনি। |