ফুটবলারদের কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন আর্মান্দো
রাংদাজিদ ১ (কিম)
ইস্টবেঙ্গল ১ (মোগা)
ম্যাচের পর ড্রেসিংরুমে ফিরে নাকি কপাল চাপড়াচ্ছিলেন এডে চিডি। আফসোস করছিলেন আর বারবার বলছিলেন, “আমার জন্যই ম্যাচটা জিততে পারল না টিম।”
বিরতির ঠিক আগেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন লাল-হলুদের এক নম্বর স্ট্রাইকার। ইস্টবেঙ্গল তখন এক গোলে পিছিয়ে। এটাকেই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট মনে করছে কোলাসো-ব্রিগেড। ফোনে চিডি হতাশ গলায় বললেন, “ভীষণ খারাপ লাগছে পেনাল্টি মিস করার জন্য। ব্যাড লাক। পরের ম্যাচগুলোতে গোল করে পুষিয়ে দিতে চাই।” চিডির পাশে অবশ্য দাঁড়াচ্ছেন কোচ আর্মান্দো কোলাসো। বলেছেন, “পেনাল্টি মিস করাটা বড় করে দেখছি না। ফুটবলে এ রকম হতেই পারে।”
ফেড কাপের মতো টুর্নামেন্টে একটা ম্যাচে খারাপ ফল মানেই সেমিফাইনাল ওঠার লড়াই থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়া। বুধবার যেখানে মঞ্জেরিতে একই গ্রুপে বেঙ্গালুরু এফসি ৫-৩ স্পোর্টিং ক্লুবকে হারিয়েছে, সেখানে রাংদাজিদের মত তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শুরুতেই ড্র করে বসল ইস্টবেঙ্গল। যেটা এই টুর্নামেন্টে বড় কাঁটা হয়ে বিঁধতেই পারে কোলোসোর দলের গলায়। অথচ শিলংয়ে ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডায় রাংদাজিদকে আই লিগের ম্যাচে ২-১ হারিয়ে এসেছিলেন চিডিরা।

মোগার গোলে মানরক্ষা।
লাল-হলুদের এ দিনের পারফরম্যান্স নিয়ে কাঁটাছেড়া করলে ব্যর্থতার হাফডজন কারণ উঠে আসে।
আগের ম্যাচেই ডার্বি হারের ধাক্কা।
কলকাতা লিগ জয়ের পর কোলাসোর বাড়তি আত্মবিশ্বাস, যে জন্য তিনি ডার্বিতে দলের সঙ্গে না থেকে গোয়ায় পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।
টানা ম্যাচ খেলার ধকল। কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলকে ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত টানা এক-দু’দিন অন্তর ম্যাচ খেলতে হয়েছে।
মেহতাব, অর্ণব মণ্ডলের মতো ফুটবলারদের না থাকা।
চোট সারিয়ে বহু দিন বাদে মাঠে নামলেও ওপারা এখনও ম্যাচ-ফিট নন।
রাংদাজিদকে হালকা ভাবে নেওয়া।
গোটা ম্যাচেই শিলংয়ের দলের সামনে ছন্নছাড়া দেখিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। মাঝমাঠ থেকে রক্ষণ ফ্লপ। আর্মান্দো নিজেও সেটা স্বীকার করে নিচ্ছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “ছেলেরা একেবারেই ভাল খেলেনি। মাঝমাঠ, রক্ষণ খুব খারাপ খেলেছে। আমার স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কেউ খেলতে পারেনি।” সঙ্গে অজুহাত, “ক্লান্তিই বড় ফ্যাক্টর হয়ে গেল। ফেড কাপের আগে টানা ম্যাচ খেলতে হয়েছে আমাদের।”
বেঙ্গালুরু-স্পোর্টিংয়ের মধ্যে যখন হাডাহাড্ডি লড়াই চলছে, গোলের ফুলঝুরি চলছে বিখোখেই, সুনীল ছেত্রী, রবিন সিংহদের, ততক্ষণে স্টেডিয়ামে পৌঁছে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। স্পোর্টিং কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছে। দ্বিতীয়ার্ধের আধ ঘণ্টা পেরিয়েও তিন গোল শোধ করেন বইমা, বেভান, ভিক্টোরিনোরা। সাত গোলের জমজমাট লড়াই দেখে নিজেরা সেই মাঠেই নামার পরেও লাল-হলুদ বাহিনীর মধ্যে ভাল খেলার সেই তাগিদ কিন্তু লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টে ম্যাচের শুরুতেই গোল খেয়ে বসে ইস্টবেঙ্গল। বিরতির আগে চিডি পেনাল্টি মিস না করলে হয়তো ম্যাচের স্কোরলাইন অন্য কথা বলত। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মোগা গোল শোধ করার পরেও ইস্টবেঙ্গল পুরোপুরি উঠে দাঁড়াতে পারেনি।
প্রথম ম্যাচেই দু’পয়েন্ট নষ্ট নিঃসন্দেহে ফেড কাপের লড়াইটা অনেক কঠিন করে তুলল চিডি-ওপারাদের। পরের দু’টো ম্যাচ জিততে না পারলে ছিটকে যেতে হবে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের। কোলাসো অবশ্য আশা ছাড়ছেন না। “আশা ছাড়ার কারণও নেই। পরের দু’টো ম্যাচ জিততে পারলেই তো সেমিফাইনাল যাব।” কিন্তু সেই পরের দু’টো ম্যাচ স্পোর্টিং আর বেঙ্গালুরুর মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। খাবরা-ডিকাদের এ দিনের পারফরম্যান্স দেখার পর চিন্তার ভাঁজ চওড়া হওয়াই স্বাভাবিক লাল-হলুদ কর্তাদের। এ দিকে এই ম্যাচে ওপারার সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে সংঘর্ষে রাংদাজিদের প্রাক্তন লাল-হলুদ তারকা মননদীপ সিংহকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে হয়েছে।
ভারত সেরার দৌড়ে সঙ্কটে ইস্টবেঙ্গল

রাংদাজিদের কাছে প্রথমে গোল খেয়ে বিরতির পরেও মিনিট দশেক পিছিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। মোগার গোলে সমতা ফিরলেও গ্রুপের দুর্বলতম দলের বিরুদ্ধে পয়েন্ট হারালেন কোলাসোরা।


চিডির পেনাল্টি নষ্ট


টানা খেলার ক্লান্তি
রক্ষণে অর্ণব, মাঝমাঠে মেহতাবের না থাকা


গ্রুপের পরের দুটো ম্যাচ জিততেই হবে। এ দিন স্পোর্টিং ক্লুবকে ৫-৩ হারিয়ে ভাল জায়গায় চলে গেল বেঙ্গালুরু এফসি। ইস্টবেঙ্গলকে পরের ম্যাচে স্পোর্টিংকে হারাতেই হবে। কিন্তু আরও কঠিন হবে শেষ ম্যাচে বেঙ্গালুরুকে হারানো। দুটো ম্যাচ জিততে পারলেও হয়তো তাকিয়ে থাকতে হবে গোল পার্থক্যের হিসাবের দিকে।

ইস্টবেঙ্গল:
গুরপ্রীত, নওবা, ওপারা, রাজু, সৌমিক, আব্রাঞ্চেস, সুয়োকা, খাবরা, ডিকা, মোগা, চিডি।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.