উগা ওপারা কি আজ খেলবেন?
আর্মান্দো কোলাসো ধোঁয়াশা রাখছেন। মঞ্জেরিতে মঙ্গলবার ম্যাচ দেখে বেরোনোর সময় বলে দিয়েছেন, “কাল সকালে ওকে দেখার পর সিদ্ধান্ত নেব।”
ডার্বি ম্যাচে তীব্র বিতর্কের পর ফেড কাপে এসে কোনও ঝুঁকিই নিতে চান না পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচ। ডেম্পোতে থাকার সময় যে কোনও সিদ্ধান্ত একাই নিতেন। ক্লাবের ফুটবল সচিব হিসাবেও দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাই কেউ প্রশ্ন তুলত না। কিন্তু ‘জনগণের ক্লাব’-এর চাপ কোচিং জীবনে কখনও নিতে হয়নি তাঁকে। সে জন্যই প্রচণ্ড সতর্ক তিনি। উগাও যাতে মোগার মতো ঝামেলা না পাকান সে জন্য মঞ্জেরির পুলিশ মাঠে তাঁকে দলের সঙ্গেই অনুশীলন করিয়েছেন আর্মান্দো। টিম সূত্রের খবর, চার বিদেশি নিয়েই মাঠে নামতে চাইছেন গোয়ান কোচ।
শিলংয়ের মাঠে গিয়ে আই লিগে রাঙ্গদাজিদকে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে দু’গোল দিলেও এক গোল হজম করতে হয়েছিল। সে জন্যই কোরিয়ান কিম আর ব্রাজিলিয়ান এডমারকে রোখার জন্য শক্তপোক্ত উগাকে ব্যবহার করতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। এবং সব থেকে যেটা আশ্চর্যের তা হল, শিলংয়ে রাঙ্গদাজিদের বিরুদ্ধেই চোট পেয়েছিলেন উগা। তারপর আবার সেই টিমের সামনেই বহুদিন পর নামার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে নাইজিরিয়ান স্টপারের ।
গ্রুপ অব ডেথ-এ প্রতিটি ম্যাচই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি পয়েন্ট মহার্ঘ গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গলকে শেষ চারে যেতে হলে রাঙ্গদাজিদ ম্যাচে শুধু জিততে হবে তাই নয়, চিডি-মোগাদের গোলসংখ্যা বাড়িয়ে রাখাটাও জরুরি। আর্মান্দো এ দিন অনুশীলনের পর কথা বলতে চাননি। পাঠিয়েছিলেন সহকারী রঞ্জন চৌধুরীকে। রঞ্জন বলে দিয়েছেন, “এ বারও চ্যাম্পিয়ন হতে চাই আমরা। যে কোনও টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আর ডার্বি হারের কোনও প্রভাব ফেড কাপে পড়বে না।” |
কিন্তু রাঙ্গদাজিদ শিলংয়ে হেরে গেলেও ফেড কাপে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। “এই টুর্নামেন্টে আমরা অঘটন ঘটাতেই এসেছি। ইস্টবেঙ্গল যে ম্যাচটা আমাদের ২-১ হারিয়েছিল তখন আমরা তৈরি ছিলাম না। এখন আমরা অনেক সংঘবদ্ধ। ভাল খেলছি,” বলে দিয়েছেন রাঙ্গদাজিদ কোচ সন্তোষ কাশ্যপ। সুব্রত পাল ডেনমার্কে চলে যাওয়া সত্ত্বেও তার গলায় জোর। মোগা-চিডিদের আটকাতে গৌরমাঙ্গি সিংহ আর চার্চিল ফেরত তাম্বা। মননদীপ সিংহ, তোম্বা সিংহ, সুশান্ত ম্যাথুর মতো পরিচিত ফুটবলার আছেন শিলংয়ের টিমে।
ইস্টবেঙ্গলের সব থেকে বড় সুবিধা গতবার শিলিগুড়িতে ফেড কাপ জিতে আসা টিমটা রয়েছে এ বারও। দলে নতুন বলতে দুই বিদেশি--মোগা আর সুয়োকা। এদের একজন মোগা এ দিন ফোনে বলছিলেন, “লিগে পরের ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করা যায়। নক আউট টুর্নামেন্টে সেই সুযোগ থাকে না।” দক্ষিণ সুদানের স্ট্রাইকার ভারতে বছর চারেক খেলে ফেললেও এখনও কোনও ট্রফি নেই তাঁর ভাঁড়ারে। চ্যাম্পিয়ন টিমে এসে সেই ইচ্ছা পূরণ করতে চাইছেন তিনি। বলে দিলেন, “এ বার চ্যাম্পিয়ন হতে হবে।”
ক্রিকেটের শহর হয়ে যাওয়া কোচিতে ফেড কাপ দেখতে তেমন ভিড় নেই। স্থানীয় দল ঈগল এফ সি খেলা সত্ত্বেও। কিন্তু মঞ্জেরিতে নতুন তৈরি স্টেডিয়ামের মধ্যে যত লোক, বাইরে তার দ্বিগুণ। এতটাই যে, ডেম্পো-ভবানীপুর ম্যাচ দেখতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে গেলেন আর্মান্দো এবং তাঁর সহকারী রঞ্জন। মাঠে ঢুকতে গিয়ে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হল তাঁদের। শেষ পর্যন্ত মাঠে ঢুকলেও চেয়ার পেলেন না দু’জনেই। গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখে বিরতিতে ফিরে গেলেন টিম হোটেলে। ইচ্ছে থাকলেও পুরো ম্যাচ দেখা হল না ওদের।
হোটেলে ফিরেই অবশ্য ইস্টবেঙ্গল কোচ খোঁজ নিতে শুরু করলেন উগা ওপারার। অন্য ফুটবলারদেরও। আজ যে উপচে পড়া দর্শকদের সামনে তাঁকেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর সামনে নামতে হবে।
ডার্বি বিতর্ক থামাতে এই ম্যাচটা তো আর্মান্দো কোলাসোকে জিততেই হবে।
|