দর্শক উৎসাহ ফেরাতে টেস্ট ক্রিকেটে অবনমন চালু করার মতো বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে আইসিসি!
টেস্ট ক্রিকেটকে দু’টি টিয়ারে ভাগ করার চিন্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে। এতে পাঁচ দিনের খেলাটা ঘিরে নতুন আকর্ষণ তৈরি হবে বলেই মনে করছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। পাশাপাশি, টেস্ট ক্রিকেটকে আয়ারল্যান্ড বা আফগানিস্তানের মতো অ্যাসোসিয়েট দেশের নতুন সীমানায় ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে। চলতি মাসের শেষে আইসিসি-র এক্সিকিউটিভ বোর্ডের বৈঠকে এই নতুন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চাইছে আইসিসি।
তবে অবনমন চালু হোক বা না হোক, আইসিসি-র ওই বৈঠকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অকালমৃত্যু ঘটে যাবে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের। এর প্রধান কারণ, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সম্প্রচার করায় টিভি চ্যানেলগুলির আগ্রহের অভাব। এর সঙ্গে কী ফরম্যাটে খেলা করা হবে, সেটা নিয়ে এখনও নির্দিষ্ট কোনও রূপরেখা না থাকায় চিন্তাটা পাকাপাকি বাতিলই করতে চাইছে আইসিসি। আগে ঠিক ছিল ২০১৩ থেকে শুরু হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। গত অক্টোবরে যে তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয় ২০১৭ পর্যন্ত। কিন্তু এখন বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটে ‘রেলিগেশন অ্যান্ড প্রমোশন’-এর উত্তেজনা আমদানি করাতেই বেশি আগ্রহী আইসিসি।
|
“ফুটবলের প্রিমিয়ার লিগের মতো টেস্টেও প্রথম ডিভিশনে খেলায় বাড়তি টাকা থাকলে ক্রিকেটাররা আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টের দিকে কম ঝুঁকবে।” —মাইকেল ভন |
“দুটো ডিভিশনের টেস্ট এবং অবনমনের ভাবনাটা বেশ ভাল। এতে যা আছে সেটাকেও রক্ষা করা হবে, আবার নতুনদের উন্নত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।” —টম মুডি |
|
নতুন এই নিয়ম চালু হলে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে নীচের দিকে থাকা দেশগুলির বিরুদ্ধে পারফরম্যান্সের জোরে টেস্ট খেলিয়ে তালিকায় উঠে আসার সুযোগ থাকবে আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান বা কিনিয়ার মতো আইসিসি-র অ্যাসোসিয়েট সদস্যদের সামনে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ বা জিম্বাবোয়ের মতো টেস্ট খেলিয়ে দেশ পারফর্ম করতে না পারলে নেমে গিয়ে টেস্ট খেলার যোগ্যতা হারাবে।
তবে অন্য জটিলতা এড়াতে রাখা হবে একটি ‘নো ডিসঅ্যাডভানটেজ’ শর্ত। যার মানে, অবনমনের ফল যা-ই হোক, আইসিসি-র পূর্ণ সদস্য দেশগুলির সদস্যপদ বা আর্থিক সুযোগসুবিধায় তার প্রভাব পড়বে না।
টেস্ট ক্রিকেটে প্রমোশন বা রেলিগেশন ঠিক কী ভাবে হবে সেটা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। টেস্ট ক্রিকেটকে প্রথম এবং দ্বিতীয় ডিভিশনে ভাগ করার চিন্তাভাবনা নিয়েও আলোচনা চলছে।
অনেকে আবার মনে করছেন প্রথম ডিভিশনে টেস্ট খেলার জন্য বিশেষ আর্থিক পুরস্কার বা ইনসেনটিভ চালু হলে আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টের সঙ্গে তুলনায় টেস্ট ক্রিকেট অনেক বেশি প্রসঙ্গিক হয়ে উঠবে। প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন যেমন বলেছেন, “ফুটবলের প্রিমিয়ার লিগের মতো যদি টেস্টেও প্রথম ডিভিশনে খেলায় বাড়তি টাকা থাকে, তা হলে ক্রিকেটাররা আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টের দিকে কম ঝুঁকবে।”
এই সব নতুনত্ব চিন্তার পাশে টেস্টের এক নম্বর দলের জন্য পুরস্কার অর্থের অঙ্ক বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে। আসন্ন বৈঠকে যা অনুমোদিত হয়ে যেতে পারে। সঙ্গে ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রাম নিয়ে কড়াকড়ি কমানোরও পক্ষে আইসিসি।
|