টিএমসিপি-র বাধায় শিলিগুড়ির দুটি কলেজে এসএফআই এবং ছাত্র সংসদ ভোটের মনোনয়ন পত্র তুলতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার শিলিগুড়ির সূর্যসেন মহাবিদ্যালয় এবং বাগডোগরার কালীপদ ঘোষ তরাই মহাবিদ্যালয়ে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেতে ওঠে। দুটি জায়গাতেই পুলিশি নিস্ক্রিয়তার নালিশ জানায় এসএফআই ও ছাত্র পরিষদ। মনোনয়ন তুলতে না পেরে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ি এবং বাগডোগরা থানা ঘেরাও করে এসএফআই সমর্থক। এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে দুটি থানায় আলাদা অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। বাগডোগরা থানায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে থানায় কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান ছাত্র পরিষদ সমর্থকরাও। |
শিলিগুড়ি সূর্যসেন কলেজে সোমবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
এদিন বামফ্রন্টের জেলা আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ছাত্রেরা এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। রাজ্যকে বিরোধী শূন্য করতে চায় তৃণমূল।” এসএফআইকে নির্বাচনে লড়তে না দিয়ে তাঁরা গণতন্ত্রকে বয়কট করেছেন বলে মনে করছেন জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকারও। এই ঘটনা ঘটানো হচ্ছে পুলিশকে সামনে রেখে বলে তিনি মনে করেন। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেসও। জেলা লোকসভা যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরীর অভিযোগ, “পুলিশ শাসক দলের নির্দেশেই কাজ করছে। প্রভাবিত হচ্ছে ছাত্র রাজনীতি। গণতন্ত্র বজায় রাখতে পুলিশের উচিত নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করা।” শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি ওজি পাল বলেছেন, “পুলিশ ভাল কাজ করেছে। অভিযোগ সম্পর্কে বিশদ খোঁজ নিয়ে দেখব।”
বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশকে নিরপেক্ষ কাজ করার নির্দেশ দেওয়া আছে।”
এদিন সকাল ১০ টা থেকেই সূর্য সেন ও বাগডোগরা কলেজ চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কলেজের একশো মিটার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। তা উপেক্ষা করে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় টিএমসিপি সদস্য-সমর্থকদের। এদিন ৫৫টি আসনের মনোনয়নপত্র দেওয়া শুরু হয়। ১২টা নাগাদ মনোনয়ন তোলা শুরু হলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সব কটি আসনের জন্য মনোনয়ন তোলা হয়। সাড়ে ১২টা নাগাদ এসএফআইয়ের ছাত্ররা এলে তাঁদের কলেজ চত্বরে ঢোকার মুখে একটি স্কুল মাঠে আটকানো হয়। এসএফআইয়ের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস বলেন, “পুলিশের সামনেই ঘটনাটি ঘটেছে।” ছাত্র পরিষদের পক্ষে এদিন কেউ সূর্য সেন কলেজে মনোনয়নপত্র তুলতে যায়নি। ১৫ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখে তাঁরা মনোনয়ন তুলবেন বলে জানান দাজির্লিং জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমিত তালুকদার।
বাগডোগরা কলেজে মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেওয়ায় সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে এসএফআই কর্মী সমর্থকদের হাতাহাতি হয়। বাগডোগরা থানা ঘেরাও করে এসএফআই ও ছাত্র পরিষদ সমর্থকরাই। এই কলেজে ৫০ আসনের মধ্যে টিএমসিপি সবকটি, ছাত্র পরিষদ ৪২ আসনে মনোনয়নপত্র তুলেছে। বাকি আসনে পরবর্তী তারিখে তোলা হবে বলে জানানো হয়েছে।
|