উত্তরবঙ্গে সরকারের বন্ধ পড়ে থাকা ৫টি চা-বাগানের পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ চাইছে রাজ্য। বন্ধ বাগানগুলির কর্মীদের সরকারি চাকরি দেওয়ারও প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এ নিয়ে সোমবার নবান্নে শিল্প কোর কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পরে নতুন শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র জানান, বন্ধ হয়ে থাকা বাগানগুলি হল রংমুখ-সিডার, রঙ্গারুন, পান্দাম, হিলা ও মহুয়া চা বাগান। ওই কটি বাগানে মোট প্রায় ৫ হাজার একর জমি এবং ১২০০ জন কর্মরত। বর্তমানে বাগানগুলির মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২৫ কোটি টাকা। শিল্পমন্ত্রী বলেন, “প্রতি বছর বাগানগুলিতে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি স্বীকার করতে হচ্ছে। বৈঠকে স্থির হয়েছে, এই বাগানগুলির পুনরুজ্জীবনের জন্য কৌশলগত বিনিয়োগকারী (স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর) আনা হবে। কী ভাবে, কোন পদ্ধতিতে তা সম্ভব করা যায়, তার জন্য লেনদেন উপদেষ্টা (ট্রানজাকশন অ্যাডভাইসর) নিয়োগ করা হবে। তাঁরাই বিচার করে দেখবেন বাগানগুলিতে সরকারের ৪৯ শতাংশ অংশীদারি থাকবে, না কি পুরোটাই বেসরকারির হাতে দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টাদের তালিকা সরকারের হাতে আছে। খুব শীঘ্রই তাঁদের মধ্যে চা-সম্পর্কিত উপদেষ্টাদের নিয়োগ করে বাগানগুলির পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে।” তিনি জানান, বন্ধ বাগানগুলির একজন কর্মীকেও ছাঁটাই করা যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী এ দিনের বৈঠকে স্পষ্ট করে দেন। অমিতবাবু বলেন, “সরকারের অনেক শূন্যপদ আছে। ফলে বন্ধ চা-বাগানের কর্মীদের সরকারই নিয়ে নিতে পারবে। এর মধ্যে অনেকেই স্বেচ্ছাবসর চাইলে নিতে পারেন। আমরা সব সম্ভাবনাই রাখতে চাই।” আগের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে এই বাগানগুলি বেসরকারি হাতেই তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেই নথিতেই বলা হয়, বাগানগুলির মালিকানা থেকে সরে আসা সরকারের পক্ষে উচিত। একই সঙ্গে, অন্তত ২০০ কোটির বার্ষিক লেনদেন ও চা-বাগানের ব্যবসায়ে কমপক্ষে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে, এমন বেসরকারি লগ্নিকারীর হাতেই বন্ধ বাগানগুলির মালিকানা তুলে দেওয়া হোক। তবে বাগানের কর্মীদের দায়িত্ব ভার বেসরকারি লগ্নিকারীই যাতে নেন, তা সরকার নিশ্চিত করবে, এমন কথাই ওই নথিতে বলা হয়। |