সুচিত্রা সেনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উৎকণ্ঠা রয়েই গেল।
শনিবার বিকেলের দিকে পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে ওঠে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে বাড়ছিল কার্বন ডাই-অক্সাইড। চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র বলেন, “অবস্থা বুঝে চিকিৎসায় সামান্য বদল আনা হয়।” তিনি জানিয়েছেন, সুচিত্রাদেবীর শ্বাসনালিতে জমে থাকা কফ বের করার জন্য একটি বিশেষ নল (এন্ডোট্র্যাকিয়াল টিউব) লাগানো হয়। ওই টিউব লাগানো নিয়ে গোড়ায় একটু দ্বিধা ছিল চিকিৎসকদের। সুচিত্রার মেয়ে মুনমুন সেনের সঙ্গেও এ ব্যাপারে তাঁরা বিশদে কথা বলেন। তাঁকে বোঝান, বর্তমান অবস্থায় ওই টিউব লাগানো জরুরি।
সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে যান। তাঁকেও চিকিৎসকেরা বিষয়টি বুঝিয়ে বলেন। কফ বের করার নলটি লাগানোর সময়ে অল্প রক্তক্ষরণ হয়েছিল সুচিত্রাদেবীর। ফুসফুসের এই রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ওষুধও দেন চিকিৎসকেরা। এর পরেই ধীরে ধীরে একটু স্থিতিশীল হয়ে ওঠেন সুচিত্রা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওষুধ দিয়ে তাঁকে ঘুম পাড়ানো হয়েছে। আপাতত নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন নায়িকা। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী যখন সুচিত্রাদেবীকে দেখতে যান তখন তাঁর চোখ বোজা। পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওঁকে দেখলাম! উনি ঘুমোচ্ছেন। আগের চেয়ে অনেক স্থিতিশীল।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ইঞ্জেকশনের সাহায্যেই সুচিত্রাদেবীকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। তিনি যাতে দিনে ১৫০০ ক্যালরি খাবার পান, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুব্রতবাবুর কথায়, “সুচিত্রাদেবীর হৃদযন্ত্র, কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে। তাঁর রক্তচাপ, নাড়ির গতিও ঠিক রয়েছে।” লোকজন নিজের নাম বললে চিনতেও পারছেন সুচিত্রাদেবী।
হাসপাতালে আসা সাধারণ লোকজনও সারা দিন সুচিত্রার স্বাস্থ্যের খবর জানতে উদ্বিগ্ন ছিলেন। টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদের দেখলেও সুচিত্রাকে নিয়েই প্রশ্ন। দুপুরে তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের দুই সন্ন্যাসীও।
সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী যখন পৌঁছন, হাসপাতালে ভিজিটিং আওয়ার হওয়ায় অনেক লোকের ভিড়। মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি হাসপাতাল থেকে কিছুটা দূরে থামে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে হাসপাতালে ঢোকেন মমতা। সন্ধ্যা ৬টা ৫৩ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বেরোন তিনি।
সুচিত্রাদেবীকে দেখে হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সারা পৃথিবী জুড়ে ওঁর (সুচিত্রা সেন) অগণিত ভক্ত উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। মুনমুন-রিয়া-রাইমা রয়েছে, ওঁর পরিবার-পরিজন-বন্ধুরাও রয়েছেন। এখন সবারই মন খারাপ। এখন এমন কোনও খবর ছড়ানো উচিত নয়, যাতে কেউ দুঃখ পায়।” |