কুণালের হাজিরা নিয়ে ভর্ৎসনা
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে শুক্রবার দু’-দু’বার অসন্তোষ প্রকাশ করল বিধাননগর আদালত। এক বার ভৎর্সিত হলেন বিধাননগর পুলিশের তদন্তকারীরা। আর দ্বিতীয় বার তিরস্কার করা হয় দমদম সেন্ট্রাল জেলের সুপারকে। আর দু’বারই আদালতের অসন্তোষের মূলে ছিল সাংসদ কুণাল ঘোষের হাজিরা।
আলিপুর আদালতের নির্দেশে কুণাল বর্তমানে কলকাতা পুলিশের ভবানীপুর থানার লক-আপে আছেন। সেখান থেকে এ দিন ওই সাংসদকে বিধাননগর আদালতে তোলার সময় বিধাননগর পুলিশ আইন মানেনি বলে কুণালের আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, এর আগে হাওড়া পুলিশের হেফাজতে থাকায় বিধাননগর থানা জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তাঁর মক্কেলকে বিধাননগর আদালতে হাজির করাতে পারেনি। সে-বার সরকারি আইনজীবী যুক্তি দেখিয়েছিলেন, কুণাল পুলিশি হাজতে থাকায় তাঁকে আনা যায়নি। সৌম্যজিৎবাবুর প্রশ্ন, এ বারেও তো তাঁর মক্কেল পুলিশি হাজতেই আছেন। তা হলে নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে তাঁকে আদালতে তোলা হল কেন?
কুণালের আইনজীবীর আরও অভিযোগ, ভবানীপুর থানার হেফাজত থেকে সাংসদকে এ দিন বিধাননগর আদালতে তোলার জন্য আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে সরকার পক্ষের কৌঁসুলি শেখর চক্রবর্তীর দাবি, ভবানীপুর থানাকে জানিয়েই সাংসদকে হাজির করানো হয়েছে। অভিযুক্তের আইনজীবী বলেন, আলিপুর আদালতের নির্দেশেই তাঁর মক্কেলকে পুলিশি হাজতে পাঠানো হয়। তাই তাঁকে হাজির করানোর জন্য আলিপুর আদালতের অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল। সরকার পক্ষ আদালতের অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
বিধাননগর আদালতের বিচারক অপূর্ব ঘোষ তখন সরকারি কৌঁসুলিকে প্রশ্ন করেন, “আমি কি পুলিশি হাজত থেকে অভিযুক্তকে এ দিন এই এজলাসে হাজির করাতে বলেছিলাম?” তদন্তকারীদের তিরস্কার করেন তিনি। আলিপুর আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত পুলিশি হাজতে আছেন। আলিপুর আদালতের সেই নির্দেশ সত্ত্বেও বিধাননগর পুলিশ কী ভাবে কুণালকে এ দিন তাঁর আদালতে হাজির করাল, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারক।
দমদম সেন্ট্রাল জেলের সুপারকেও এ দিন ভর্ৎসনা করে বিধাননগর আদালত। যে-দিন আদালতে কুণালের গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা ছিল, ঠিক তার আগেই হাওড়া পুলিশের একটি মামলায় সাঁতরাগাছি থানার পুলিশের হাতে ওই অভিযুক্তকে তুলে দিয়েছিলেন জেল-কর্তৃপক্ষ। বিধাননগর আদালতকে না-জানিয়ে কুণালকে কেন হাওড়ায় নিয়ে যাওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলে জেল সুপারের ব্যাখ্যা তলব করেছিল বিধাননগর আদালত। পরে দমদম সেন্ট্রাল জেলের সুপার বিপ্লব দাস বিধাননগর আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানান, প্রথা অনুযায়ী দু’টি আদালতের নির্দেশ থাকলে অপেক্ষাকৃত উচ্চতর আদালতের নির্দেশকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সেই অনুসারে হাওড়া আদালতের নির্দেশে ওই অভিযুক্তকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল।
বিচারক এ দিন জেল সুপারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করেন, “কোন আদালত উচ্চ, জেল সুপার কী ভাবে সেটা ঠিক করলেন?” সরকারি কৌঁসুলি আদালতে জানান, জেল সুপার এক জন সরকারি পদাধিকারী। একটি ধারণার বশে তিনি ওই রিপোর্ট দিয়েছিলেন। জেল সুপারকে ক্ষমা করে দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।
বিচারক পরে জেল সুপারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই ভুলের যেন কোনও রকম পুনরাবৃত্তি না-হয়। ফের যদি ভুল হয়, তা হলে এ বারের ঘটনার জের টেনেই তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে আদালত।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.