টাকা দিতে বোর্ড মিটিং লক-আপে
বশেষে পুরনো মালিকের মুখোমুখি দুই কর্মী।
মালিক সুদীপ্ত সেন। সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার। আর দুই কর্মীর এক জন সারদার মিডিয়া শাখার প্রাক্তন চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার (সিইও) তথা সাংসদ কুণাল ঘোষ। অন্য জন ওই সংস্থারই ভাইস প্রেসিডেন্ট সোমনাথ দত্ত। তিন জনের শেষ বোর্ড মিটিং কবে, কোথায় হয়েছে, জানা নেই। তবে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার প্রায় ১০ মাসের মাথায় ফের কার্যত সেই বৈঠক হল। তবে কোনও অফিসে বা তারা-মার্কা হোটেলে নয়, আদালতে এজলাসের লক-আপে!
লক-আপে ওই তিন জন যখন খুবই নিচু স্বরে ‘মিটিং’ করছেন, সবার নজর তখন এজলাসের এক ধারে বসে থাকা মহিলার দিকেও। হলুদ-লাল চুড়িদার আর লাল-নীল রঙের সোয়েটার পরে চুপচাপ বসে ছিলেন সারদার অন্যতম কর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায়। তিন জনের বৈঠকের দিকে মাঝেমধ্যে এক ঝলক তাকিয়েই চোখ সরিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। তাঁর শরীরী ভাষায় উদ্বেগ স্পষ্ট।
দেবযানী উদ্বিগ্ন হলেও লক-আপে তিন জনের মধ্যে তেমন কোনও উদ্বেগ চোখে পড়েনি। বরং দু’দফায় প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে মাঝেমধ্যে তিন মাথার হাসাহাসিই বুঝিয়ে দিচ্ছিল, উদ্বেগ তাঁদের ধারেকাছে নেই। সংস্থার কর্তার মতোই মূল বক্তা ছিলেন সুদীপ্ত। কুণাল ও সোমনাথ বেশির ভাগ সময়েই মনোযোগী শ্রোতা। কখনও কখনও তাঁরা প্রশ্ন করেন সংস্থা-প্রধানকে। তার পরে তাঁর জবাব মন দিয়ে শুনছিলেন।
বিধাননগর আদালত থেকে বেরোচ্ছেন সুদীপ্ত, দেবযানী এবং কুণাল। ছবি: শৌভিক দে।
সারদা কাণ্ডে তিনটি মামলার শুনানিকে ঘিরে শুক্রবার বিধাননগর আদালতে তোলা হয় দেবযানী-সহ চার অভিযুক্তকে। পুলিশি হাজতে থাকা কুণালকে এ দিন আদালতে তোলা নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে বিতর্কও হয়। এর আগে চার জনকে একসঙ্গে আনার সুযোগ পেয়েও তদন্তকারীরা তা করেননি। এ বার সকলকে একসঙ্গে হাজির করানো হল কেন, প্রশ্ন কিছু আইনজীবীর।
বেলা ২টো নাগাদ সুদীপ্ত, কুণাল ও সোমনাথকে এজলাসের লক-আপে নিয়ে যাওয়া হয়। সুদীপ্তের পরনে ছিল ছাই রঙের সোয়েটার আর সাদা পাজামা, পায়ে কালো চটি। কুণাল পরে ছিলেন নীল সোয়েটার আর কালো পাজামা, হলুদ চটি। সোমনাথের সাদা-কালো জামার উপরে ছিল ছাই-রঙা জ্যাকেট, সাদা প্যান্ট, স্পোর্টস শু্য। কিছু ক্ষণ পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকেন তাঁরা। এত দিন কুণাল বারবার তোপ দেগেছেন সারদা-প্রধানের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ ছিল, সারদার টাকা কারা নয়ছয় করেছেন, সুদীপ্ত যদি তা মনে করতে না-পারেন, তিনি মনে করিয়ে দিতে প্রস্তুত। গ্রেফতারের পরেও তিনি বলেছিলেন, সুদীপ্তকে তাঁর সামনে বসিয়ে জেরা করা হোক। তদন্তকারীরা অবশ্য তা করেননি।
মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা না-হোক, আদালতের লক-আপে তাঁদের বৈঠক হয়ে গেল এ দিন। কী আলোচনা হল তাঁদের মধ্যে?
আদালত থেকে বেরিয়ে কুণাল জানান, কী ভাবে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া যায়, মূলত তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। আর সুদীপ্ত কী বলছেন? সারদা-কর্ণধার বলেন, “এখন আমাদের মূল লক্ষ্য, সারদার সব সম্পত্তি বেচে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া। কী ভাবে সেটা করা যায়, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।” সোমনাথ অবশ্য আদালতের বাইরে কোনও কথা বলেননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.