কেন জোটে যাব, অ্যান্টনিকে প্রশ্ন রাজ্য নেতৃত্বের

১০ জানুয়ারি
লোকসভা ভোটে রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে কোনও মতেই রাজি নন, তা দলের হাইকম্যান্ডকে জানিয়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি আজ ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য কলকাতায় ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানের আগে সকালে অ্যান্টনি-প্রদীপ বৈঠক হয় আইএসআই-এর অতিথিশালায়। বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, কেরল কংগ্রেসের এই নেতা সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর বিশেষ আস্থাভাজন। লোকসভা ভোটের আগে নতুন শরিক সন্ধান করে জোট সমীকরণ তৈরির জন্য সম্প্রতি অ্যান্টনিকেই দায়িত্ব দিয়েছেন সনিয়া-রাহুল। রাজ্যওয়াড়ি কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করে জোট প্রসঙ্গে তাঁদের মত নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। সেই সূত্রেই কলকাতায় এসে আজ প্রদীপবাবুর সঙ্গে আলোচনায় বসেন অ্যান্টনি।
প্রদীপবাবু বৈঠকের শুরুতেই অ্যান্টনিকে জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করার ব্যাপারে দু’দিন আগে প্রদেশ কংগ্রেস একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যদিও ওই বৈঠকে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে কোনও পর্যবেক্ষক ছিল না। তবে তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাওয়ার ব্যপারে রাজ্য নেতাদের সার্বিক একটা অনীহার ছবি তাতেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে প্রদীপবাবু দাবি করেন। অ্যান্টনি এই অনীহার কারণ জানতে চান অ্যান্টনি। বৈঠকের পরে প্রদীপবাবু বলেন, অ্যান্টনির প্রশ্নের জবাবে তিনি পাল্টা কয়েকটি প্রশ্ন রেখেছেন বৈঠকে। এক, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে লোকসভায় আসন বাড়িয়ে নেওয়ার পরে তৃণমূল যে বিজেপি-র হাত ধরবে না এমন নিশ্চয়তা কি অ্যান্টনি দিতে পারেন? দুই, সরাসরি সমর্থন দেওয়া তৃণমূলের পক্ষে মুশকিল হলেও বিজেপি-র সুবিধা হয়, এমন কোনও অবস্থান যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন না, তারই বা নিশ্চয়তা কী? তিন, তৃণমূল যখন জোট গড়ার ব্যাপারে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না, উল্টে কংগ্রেসকে আক্রমণ করছে, তখন কংগ্রেসই বা কেন ভিক্ষাপাত্র নিয়ে তাদের কাছে হাজির হবে? চার, জোট হলে তৃণমূল কি আদৌ আগের বারের মতো কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে রাজি হবে?
এমন নয় যে, তৃণমূলের সঙ্গে জোটের প্রশ্নে রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের এই মনোভাব অ্যান্টনির জানা ছিল না। ক’দিন আগে রাহুল গাঁধীও ঘরোয়া আলোচনায় বলেছেন, রাজ্য নেতারা না চাইলে জোট হওয়া মুশকিল। দিল্লি গিয়ে তৃণমূল নেত্রীও সম্প্রতি ঘোষণা করে এসেছেন, লোকসভা ভোটে একাই লড়বে তৃণমূল। তবু কংগ্রেস কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, জোট সম্ভাবনা নিয়ে আজই শেষ কথা বলে দেওয়া হল, এমন নয়। এর পরেও জোট-সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। অ্যান্টনির তথা কংগ্রেস এবং তৃণমূল উভয়ের তরফেই তার প্রয়োজন পড়তে পারে ভবিষ্যতে।
কগ্রেসের এই কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য, এ-ও হতে পারে যে প্রদীপবাবুরা জোট না করার ব্যাপারে গোঁ দেখিয়ে আসলে তৃণমূলকে বার্তা দিতে চাইছেন।
প্রদীপবাবুরা তো বটেই, যে সোমেন মিত্রের কংগ্রেসে ফেরাটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, বলেই মনে করা হচ্ছে, তিনিও কিন্তু মনে করেন, জোট না হলে কংগ্রেসের যা ক্ষতি হবে, তার থেকেও বেশি হতে পারে তৃণমূলের। কেননা, বিজেপি যদি সব আসনে প্রার্থী দেয় এবং আম আদমি পার্টিও যদি এ বার পশ্চিমবঙ্গে প্রার্থী দেয় তা হলে, ভোট কাটাকাটিতে তৃণমূলের যথেষ্ট ক্ষতি হতে পারে। তৃণমূল নেতাদের ঘরোয়া আলোচনাতেও এটা উঠে আসছে যে, প্রকাশ্যে মমতা যা-ই বলুন না কেন, জোট গড়ার জন্য দলের অনেক সাংসদই উসখুস করছেন।
একই ভাবে উচাটন রয়েছে কংগ্রেসের মধ্যেও। এই মুহূর্তে রাজ্য থেকে লোকসভায় কংগ্রেসের ৬ জন সদস্য রয়েছেন। জোট না হলে দু’জনের বেশি জিতবেন কি না তা নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে। ফলে উভয় শিবিরের এই তাগিদই ফের দু’দলকে কাছাকাছি আনতে পারে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটা অংশ।
তাঁদের মতে, আজকের বৈঠকের ছবিটা দিয়েই ভবিষ্যতের সম্ভাবনা বিচার করে ফেলাটা ঠিক হবে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.