বেদিয়াপাড়ার কিশোরী পরিচারিকা তপতী দাসের মৃত্যুর ঘটনায় এ বার দমদম থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন তার কাকা গৌতম দাসও। বুধবার রাতে তপতীর মৃত্যুর পরেই বেদিয়াপাড়ার কয়েক জন বাসিন্দা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। শুক্রবার গৌতমবাবু বলেন, “ঝিলিক আগুনে খুব ভয় পেত। ও গায়ে আগুন দিতে পারে না। ওর গায়ে আগুন লাগানো হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সীমা গুপ্ত তাঁর মেয়ে সাগ্নিকা ও জামাই শিবাজী দে-কে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের বয়ানে অসঙ্গতি আছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সীমাদেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, তাঁদের বাড়িতে সারাদিন নানা ধরনের লোকের যাতায়াত চলে। কেউ এলে তপতীকে বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হত। ওই বাড়িতে কারা, কেন আসতেন সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তখন কেনই বা তপতীকে বাইরে পাঠানো হত, তা নিয়েও ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বেদিয়াপাড়ায় তপতীর কয়েক জন পরিচিতের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার আগে দু’দিন ধরেই তপতী এলাকার কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করে কিছু বলতে চাইছিল। প্রশ্ন উঠেছে, তপতী কি এমন কিছু বলতে চাইছিল যা সীমাদেবীর পরিবারের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারত বা তাঁদের সন্মানহানি হত।
তপতীর দেহ পোড়ার ধরন দেখে ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন, বোঝার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, সাধারণত কেউ নিজের গায়ে আগুন দিলে তার শরীরের উপরের ভাগের সামনের দিক বেশি পোড়ার আশঙ্কা থাকে। মাথার পিছন, ঘাড় বা পিঠের দিক কম পোড়ে। কিন্তু অন্য কেউ আগুন লাগিয়ে দিলে শরীরের সামনের ভাগের মতো পিছনের ভাগও অনেকটা পুড়ে যায়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তপতীর দেহের সামনের ও পিছনের অংশ প্রায় সমান ভাবেই পুড়েছে। এবং এতটাই পুড়ে যায় যে, তাকে কার্যত চেনাই যাচ্ছিল না। ব্যরাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান দেবাশিস বেজ বলেন, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই বিস্তারিত জানা যাবে।”
এ দিকে, ময়না-তদন্তের পরে তপতীর দেহ বৃহস্পতিবার রাতেই তার কাকার হাতে তুলে দেয় পুলিশ। নিমতলা ঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে নিজের বাড়িতে ফিরে যান গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “ঝিলিকের খুনিদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।” |