মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফের উত্তেজনা ছড়াল মৌলানা আজাদ কলেজে। বুধবারেই কলেজের বাইরে এসএফআই-সমর্থক ছাত্র মহম্মদ শামসের আলিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। শুক্রবার ওই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়ার পরে অধ্যক্ষের অফিস থেকে নিয়ে টিএমসিপি সেটি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শামসের। এ ব্যাপারে নিউ মার্কেট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
টিএমসিপি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শামসেরকে মারধরের অভিযোগও অস্বীকার করেছিল তারা। মৌলানা আজাদের অধ্যক্ষ প্রতাপ রায় বলেন, “ওই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ছেঁড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগও জানায়নি।”
কলেজ সূত্রের খবর, ১৮ জানুয়ারি ওই কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দিন ধার্য হয়েছে। শুক্রবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন। বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র শামসের পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান, এ দিন দুপুরে তিনি নিজের এবং তাঁদের সংগঠনের অন্য কয়েক জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন। অধ্যক্ষের অফিসে এক ব্যক্তির কাছে তিনি সেগুলি জমা দিয়েও দেন। তার পরেই শুরু হয় গোলমাল।
শামসের বলেন, “তিন ছাত্রের নেতৃত্বে কয়েক জন যুবক আমাকে ঘিরে ধরে গালিগালাজ করতে থাকে। তার পরে যাঁর হাতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলাম, তাঁর কাছ থেকে সেগুলি কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দেয়।” ওরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থক বলেই জানান শামসের। হামলাকারীরা তাঁকে হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ। ওই ছাত্র জানান, কলেজে কর্তব্যরত পুলিশের সাহায্যে তিনি পরে বাইরে আসেন।
বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজেও মনোনয়নপত্র তোলার পরে টিএমসিপি সেগুলি ছিঁড়ে দিয়েছে বলে ডিএসও-র অভিযোগ। এর প্রতিবাদে তারা সেখানে নির্বাচন বয়কট করবে বলে জানিয়েছে। তবে সেখানেও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিএমসিপি নেতৃত্ব।
এসএফআই-এর অভিযোগ, গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজেও তারা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। নেতাজিনগর কলেজে পড়তেন আন্দোলনে নেমে প্রাণ হারানো এসএফআই নেতা সুদীপ্ত গুপ্ত। কিন্তু টিএমসিপি-র হুমকি এবং নানা ধরনের চাপের মুখে সেখানেও তাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বলে জানান এসএফআই নেতারা। টিএমসিপি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকতে এই সব যুক্তি দিচ্ছে এসএফআই। নেতাজিনগর (সান্ধ্য) কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জিতে গিয়েছে টিএমসিপি।
শিক্ষা ক্ষেত্রে হিংসা এড়াতে বেশ কিছু দিন ছাত্রভোট বন্ধ রাখা হয়েছিল। তার পরে ফের তা চালু করা হয়েছে। এ বারের ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে রাজ্য সরকার বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্যে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। তা সত্ত্বেও গোলমাল এবং লালা ধরনের অভিযোগ লেগেই আছে কেন?
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “সমানে নজরদারি চলছে। গণ্ডগোল করে কোনও ছাত্র সংগঠন কিছু করতে পারবে না। তা সে যে-সংগঠনই হোক না কেন। নির্বাচনে কোনও ধরনের ঝামেলা বরদাস্ত করা হবে না।” |