|
|
|
|
এসজেডিএ-কাণ্ডে তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ, বাম-স্মারকলিপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
এসজেডিএ-এর দুর্নীতি তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ তুলে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি দিল দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। এসজেডিএ কাণ্ডে সংস্থার প্রাক্তন সিইও তথা তত্কালীন মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমারের গ্রেফতার এবং সে দিনই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে কারলিয়াপ্পান জয়রামনকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনার পরে এসজেডিএ তদন্ত থমকে গিয়েছে বলে বামেদের অভিযোগ। কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়া এবং প্রাক্তন সিইওকে গ্রেফতার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জামিনে মুক্তি দেওয়ার ঘটনাই এসজেডিএ তদন্ত নিয়ে রাজ্য সরকারের মনোভাব স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে বাম নেতারা দাবি করেছেন। সম্প্রতি এসজেডিএ মামলায় তদন্তকারী অফিসারদেরও বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করে দ্রুত তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে বাম শরিক দলের জেলা নেতারা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে গিয়েছেন। প্রায় আধঘণ্টা ধরে পুলিশ কমিশনার জগমোহনের ঘরে বাম নেতারা আলোচনা করেছেন। স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে এসে দার্জিলিঙের জেলা সিপিএমের কার্যকরি সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “কমিশনারকে আমাদের দাবি জানিয়েছি, উনি আমাদের ভরসা দিয়েছেন। দেখা যাক কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।”
পুলিশ কমিশনার জগমোহন এ দিন বলেন, “বাম নেতারা মূলত এসজেডিএ-কাণ্ড নিয়েই অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। ওদের মনে হচ্ছে তদন্তে ঢিলেমি হচ্ছে, তা নয়। কমিশনারের দায়িত্ব পেয়ে এসজেডিএ-এর দুর্নীতি মামলার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এডিসিপি, এসিপিদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে। আর পুলিশের বদলি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তার জেরে তদন্তে কোনও ক্ষতি হয় না।”
বাম নেতাদের অভিযোগ, এসজেডিএ-এর আর্থিক অনিয়ম নিয়ে একাধিক অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে, পুলিশি তদন্ত শুরু হলে কয়েক দফয়া এসজেডিএ-এর সঙ্গে জড়িত নেতা-আধিকারিকদের ডেকে জেরা করা হয়েছে। ওই তালিকায় এসজেডিএর প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি, বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, তৃণমূলের জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক, শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীল শর্মা থেকে শুরু করে প্রাক্তন সিইও আইএএস অফিসার গোদালা কিরণ কুমারও রয়েছেন। আর্থিক অনিয়মেরক অভিযোগে, গত ৬ মাসে পৃথক ভাবে এসজেডিএ-এর ১১ জন বাস্তুকার, ঠিকাদার এবং আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়। বামেদের অভিযোগ, ৬ মাস আগেও এসজেডিএ কাণ্ড নিয়ে পুলিশের যে তত্পরতা দেখা গিয়েছিল। তা এখন দেখা যাচ্ছে না। গত ৩০ নভেম্বর গোদালা কিরণ কুমারের গ্রেফতারের পরে এসজেডিএ কাণ্ডে নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করা তো দূরের তথা কাউকে জেরা পর্যন্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে মামলার পরিণতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বামেরা।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির আহ্বায়ক গৌতম দেব বলেন, “তদন্ত নিয়ে বামেদের কোনও কথা শুনতে চাই না। গত ৩৪ বছরে দুর্নীতির পাহাড় তৈরি হলেও কোনও তাঁরা তদন্ত করেননি। এসজেডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারই অভিযোগ করে তদন্ত শুরু করেছে। অনিয়ম হওয়া টাকার অনেকটাই উদ্ধার করা হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিরপেক্ষ ভাবেই তদন্ত হচ্ছে।”
সিপিএম নেতা জীবেশবাবু অভিযোগ করে বলেন, “অভিযুক্ত প্রাক্তন সিইওকে গ্রেফতারের পরে পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়ার সঙ্গেই এসজেডিএ মামলার ফাইলও রাজ্য সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। গত এক মাসে ওই মামলায় কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। অথচ মামলাটি প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সে কারণেই কমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। দ্রুত কোনও পদক্ষেপ না দেখলে আন্দোলন আরও তীব্রতর করা হবে।” এদিন সিপিআই-এর জেলা সম্পাদক উজ্জল চৌধুরী, আরএসপির জেলা সম্পাদক তাপস গোস্বামী, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অনিরূদ্ধ বসুও উপস্থিত ছিলেন। |
পুরনো খবর: এসজেডিএ-র তদন্তে ঢিলেমি, উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী |
|
|
|
|
|