|
|
|
|
উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে জিটিএ-তে গুরুঙ্গের দ্বিতীয় ইনিংস
নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং |
পৃথক গোর্খাল্যান্ড নয়, বরং পাহাড়ের সামগ্রিক উন্নয়ন। জনজীবন স্তব্ধ করা আন্দোলন নয়, রাজ্যের সঙ্গে পরিবারের মতো সম্পর্ক। এ যেন গুরুঙ্গ-২।
যিনি ৫ মাস আগে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে লালকুঠি ছেড়ে ইস্তফা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই লালকুঠিতেই ফের জিটিএ চিফ হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন অন্য ভাবে। কথাবার্তায় এখন যেন তিনি ‘অন্য গুরুঙ্গ’। অন্তত, গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠ মোর্চা নেতারা অনেকে তাই ভাবছেন।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির পরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান গুরুঙ্গ সম্প্রতি কলকাতায় গিয়ে রাজভবনে জিটিএ চিফের পদে শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার জিটিএ-র সদর দফতর লালকুঠিতে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় জিটিএ চিফ হিসেবে তাঁর প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক করে বলেন, “দার্জিলিঙের বাসিন্দারা উন্নয়ন চান। সেই ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতেই ফের জিটিএ-র দায়িত্ব নিয়েছি। এখন অন্য কোনওদিকে বেশি মাথা ঘামাতে চাই না। আপাতত পাহাড়ের সামগ্রিক উন্নয়নে গতি আনাই আমার লক্ষ্য। রাজ্যের সঙ্গে মিলেই সব কাজ হবে। পুরো পশ্চিমবঙ্গ একটি পরিবারের মতো এক সঙ্গে কাজ করবে।” |
জিটিএ-প্রধান হিসেবে ফের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক
বিমল গুরুঙ্গের। বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের লালকুঠিতে। ছবি: রবিন রাই। |
চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই তিনি ফের দিল্লি যাচ্ছেন। গুরুঙ্গ জানান, ধস নেমে প্রায় ৪ বছর বন্ধ দার্জিলিঙের ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। তা সংস্কার-সহ কিছু আর্জি নিয়ে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করবেন।
কয়েক মাস আগে জিটিএ চিফ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মোর্চা সভাপতি। তখন বলেছিলেন, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনেই বেশি সময় দিতে চান, তাই প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন। কিন্তু ঘরে-বাইরে নানা চাপের মুখে সম্প্রতি ফের জিটিএ চিফ পদে বসার সিদ্ধান্ত নেন গুরুঙ্গ। এদিন সকালে পুজো দিয়ে চিফের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে ঢোকেন গুরুঙ্গ। বেশ কিছু সরকারি কাজ সেরে গুরুঙ্গ জানান, রাজভবনে শপথ নেওয়ার সময়েও গোর্খাল্যান্ডের দাবির পরিবর্তে উন্নয়নকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
গুরুঙ্গ বলেন, “আগের দফায় যে প্রকল্পগুলি শেষ করা যায়নি, সেগুলি দ্রুত শেষ করা হবে। জামুনি, ত্রিবেণী, রেলি-সহ কয়েকটি এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।” জিটিএ এলাকায় একটি মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-সহ নতুন ৮টি কলেজ তৈরির কাজ দ্রুত শুরু হবে বলেও গুরুঙ্গ জানিয়েছেন।
তবে দলের কট্টরপন্থীদের তরফে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের চাপ রয়েছে। পাহাড়ের মোর্চা বিরোধী কয়েকটি দলও গোর্খাল্যান্ডের দাবি সামনে রেখে পায়ের তলার জমি শক্ত করতে সক্রিয়। মোর্চার অন্দরের খবর, ‘রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা’র জন্য পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে দলীয় কর্মসূচি যে অব্যাহত থাকবে, তা-ও তাই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়ানো হবে। প্রয়োজন মতো নানা কর্মসূচি নেবে দল। তবে জিটিএ-র লক্ষ্য শুধুই উন্নয়ন। আপাতত দার্জিলিং এবং পাহাড়ের বাসিন্দাদের উন্নয়নেই জিটিএ কাজ করবে। এর আগে বিভিন্ন দফতর হস্তান্তর করা হয়নি বলে জিটিএর কাজে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে রাজ্য সরকার দ্রুত বেশ কয়েকটি দফতর হস্তান্তর করতে চলেছেন। তাই জিটিএ-র কাজে কোনও সমস্যা হবে না।” |
পুরনো খবর: এক পরিবারের সদস্য আমরা, মন্তব্য গুরুঙ্গের |
|
|
|
|
|