বোমাতঙ্কের দিনরাত দুই শহরে
কোথাও পরিত্যক্ত নীল জিনসের ব্যাগ দেখে ছুটোছুটি পড়ে গেল। আবার বাসস্ট্যান্ডে ঢাউস প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ দাবিদারহীন অবস্থায় দেখে আতঙ্ক ছড়াল। আবার কোথাও বিদ্যুত্‌ পর্ষদের সদর দফতরের সামনে ল্যাপটপের ব্যাগ মালিকবিহীন পড়ে থাকায় হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এমনই বোমাতঙ্কে ভুগল শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি, দুই শহর। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোথাও বোমা মেলেনি। ফলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে পুলিশ ও জনতা। তা বলে কোনও ঝুঁকি অবশ্য পুলিশ নেয়নি। সব ক্ষেত্রেই বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে ব্যাগ খোলা হয়েছে।
সকাল ১১টা নাগাদ প্রথম বোমাতঙ্ক ছড়ায় জলপাইগুড়ির চার নম্বর গুমটিতে। শিলিগুড়িগামী একটি সরকারি বাসে দাবিহীন নীল রঙের জিনসের ব্যাগ দেখতে পেয়ে, চার নম্বর ঘুমটিতে নামিয়ে দিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। সিআইডির বোম স্কোয়াড এসে প্রায় চার ঘণ্টা পরীক্ষা চালায়। ব্যাগটিকে বালির বস্তা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়।

সকাল ১১টা। জলপাইগুড়ির চার নম্বর গুমটিতে ব্যাগ পরীক্ষা।
বাসিন্দারাও ভিড় করেন ওই এলাকায়। দীর্ঘক্ষণ পরীক্ষা চালানোর পরে বিশেষজ্ঞরা জানতে পারেন, ব্যাগে কোনও বিস্ফোরক নেই। তবে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে বিকেল তিনটে নাগাদ ওই ব্যাগটিকে কৃত্রিম ভাবে বিস্ফোরণ করানো হয়। ব্যাগের ভিতর থেকে ট্র্যাকসু্যট, প্রসাধনী সামগ্রী ইত্যাদি মেলে।
বিকেল তিনটের সময় চার নম্বর ঘুমটির পরিত্যক্ত ব্যাগে বোমা নেই জানার মাত্র এক ঘণ্টা পরে জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ার বাস স্ট্যান্ডে পড়ে থাকা একটি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগকে ঘিরে বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাগের ভিতর থেকে ঘড়ির কাঁটার ‘টিকটিক’ শব্দ শুনতে পাওয়া যায় বলে বাসিন্দারা দাবি করেন। পুলিশ কর্মীরাও প্রাথমিক পরীক্ষার পরে ওই ধরণের শব্দ পান বলে দাবি করেন। এর ফলে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। শহরের অনান্য এলাকা থেকেও উত্‌সুক বাসিন্দারা শান্তিপাড়ায় ভিড় করেন। ভিড় সামলাতে বাড়তি পুলিশও আনা হয়। বাসস্ট্যান্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া বাসগুলিকে। বোম স্কোয়াডের কর্মীরা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পরীক্ষার পরে ক্যারিব্যাগের ভিতর থেকে একটি ব্যাটারি চালিত পুতুল এবং গ্রিটিংস কার্ড উদ্ধার করে। দুটি ক্ষেত্রেই ঘটনাস্থলে দমকলের ইঞ্জিন এবং অ্যাম্বুলেন্স তৈরি রেখেছিল পুলিশ।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ায় ভিড়।
জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ায় বোমাতঙ্ক কাটতে না কাটতেই শিলিগুড়ির দোমাইলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেবক রোডে আকাশবাণী ভবন থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে একটি ফেলে যাওয়া ল্যাপটপের ব্যাগকে ঘিরে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ ওই ব্যাগটিকে একটি দোকানের সামনে পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন। অনেকক্ষণ ধরে কেউ ব্যাগটি নিতে না আসায় তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। ভক্তিনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। বম্ব ডিটেকশন স্কোয়াডের সদস্যরা আসেন। বোমাতঙ্কের জেরে প্রায় এক ঘন্টা সেবক রোডের একটা অংশ বন্ধ করে রাখে পুলিশ। জ্যোতিনগর মোড় থেকে আইটিআই মোড় পর্যন্ত পুলিশি ব্যারিকেড ছিল। সমস্ত গাড়িকে ইস্টার্ন বাইপাস হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এক ঘন্টা পর ব্যাগটি খোলা হলে তাতে একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল এবং কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায়।

রাত ৮টা। শিলিগুড়ির দোমাইলে ব্যাগ পরীক্ষা।
জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে আবেদন রাখা হয়েছে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে ব্যাগ অথবা ওই জাতীয় কিছু পড়ে থাকতে দেখলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কোনটিতেই বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। কারা ব্যাগগুলি ফেলে গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” অন্যদিকে, শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসি কে সাভারি রাজকুমার বলেন, “ব্যাগে কিছু কাগজপত্র, ল্যাপটপ ও মোবাইল পাওয়া গিয়েছে। ব্যাগটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”

ছবি: সন্দীপ পাল ও বিশ্বরূপ বসাক।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.