ডিআরএস নিয়ে সব বিতর্কের অবসান ঘটানোর চেষ্টায় রিভিউ ব্যবস্থার একটি উন্নততর মডেল চালু করতে চায় আইসিসি। যার নাম দেওয়া হয়েছে অফিশিয়েটিং রিপ্লে সিস্টেম বা ওআরএস। এবং ওআরএসের ট্রায়ালে যোগ দেওয়ার পর এ দিন তাকে ঢালাও শংসাপত্র দিয়ে দিলেন সাইমন টফেল। পাঁচ বার আইসিসি-র বর্ষসেরা আম্পায়ারের সম্মান জেতা টফেল মনে করছেন, ডিআরএস-এর তুলনায় অনেক বেশি নিখুঁত হবে ওআরএস। আম্পায়ারদের কাজটাও সহজ করে দেবে।
এমনিতে, এই ব্যবস্থায় ম্যাচ চলাকালীন একজন নন ম্যাচ আম্পায়ারকে সরাসরি ম্যাচের সমস্ত রিপ্লে দেখানো হচ্ছে। এর প্রথম ট্রায়াল হয় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া অ্যাসেজ টেস্ট চলাকালীন। গত সপ্তাহে আবু ধাবির পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা এক দিনের ম্যাচেও ফের ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা চলতি টেস্ট সিরিজেও ওআরএস-এর বিভিন্ন দিক খুঁটিয়ে দেখে নেওয়া চলছে। ২০১২-য় আম্পায়ারিং থেকে অবসর নেওয়ার পর বর্তমানে আইসিসি-র আম্পায়ারদের ম্যানেজার পদে থাকা টফেল বলেছেন, “নন ম্যাচ আম্পায়ারকে পর পর মনিটরের সারিতে হাই ডেফিনিশন ইমেজে ফুটেজ পাঠানো হচ্ছে। যেখানে আম্পায়ার টিভি অপারেটরের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কোনও ঘটনার নিজের পছন্দের একাধিক অ্যাঙ্গলের রিপ্লে চেয়ে নিতে পারছেন। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেক ক’টা বিকল্প থাকছে তাঁর সামনে যেটা কাজটাকে সহজ করে দিতে বাধ্য।” |
ওআরএস প্রযুক্তি সরেজমিনে দেখতে ব্যস্ত আইসিসি-র আম্পায়ার কমিটির ম্যানেজার সাইমন টফেল। |
তবে সরেজমিনে খাতিয়ে দেখার পর টফেলের সবচেয়ে মনে ধরেছে নতুন প্রযুক্তির গতিটা। যেখানে কোনও শট বাউন্ডারি পার করেছে কি না, সেটা যাচাই করে নিতে লাগছে পাঁচ সেকেন্ডেরও কম। ফ্রন্ট ফুট নো বলের ক্ষেত্রে লাগছে দু’ সেকেন্ড। “এই প্রযুক্তিতে অবিশ্বাস্য কম সময়ে রিপ্লে দেখে নেওয়া যাচ্ছে। এতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিতে যেমন সুবিধা হবে তেমনি খেলাও বন্ধ রাখতে হবে অনেক কম। ফলে ক্রিকেটারদেরও মনঃসংযোগ নষ্ট হবে না,” বলেছেন টফেল। তবে ওআরএস নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। টফেলের কথায়, “আমরা খোলা মনে এই প্রযুক্তি নেড়েচেড়ে দেখছি। সম্ভাব্য সব রকমের পরিস্থিতির কথা ভাবা হচ্ছে। কোনও কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি।”
নিত্যনতুন প্রযুক্তির সুযোগ ক্রিকেটের নেওয়া উচিত বলেই মনে করেন টফেল। যে কারণে ডিআরএসের ত্রুটিগুলো নতুন ব্যবস্থায় যতদূর সম্ভব ছেঁটে ফেলার পক্ষে তিনি এবং জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত ওআরএস-এর কার্যকরিতা নিয়ে রীতিমতো সন্তুষ্ট। বলেছেন, “আম্পায়ারিং ব্যাপারটা হল খেলোয়াড়দের একেবারে সেরা সার্ভিসটা দেওয়া। সিদ্ধান্তে যতদূর সম্ভব নির্ভুল হওয়া। আর এই প্রযুক্তির ট্রায়াল সেই তত্ত্বকেই সাহায্য করে। ওআরএস আমাদের কাজটাকে অনেক বেশি সহজ এবং নিখুঁত করে দিচ্ছে। তবে এটা কাজে লাগানোর খরচের দিকটাও দেখতে হবে।”
ডিআরএস সরিয়ে ওআরএস আসবে কি না, সেটা শেষ পর্যন্ত নির্ভর করছে আইসিসি-র প্রযুক্তি রিভিউ গ্রুপের উপর। এবং বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে এর কার্যকরিতা তারা কতটা সাফল্যের সঙ্গে বোঝাতে পারে তার উপর। অবশ্য তার আগেই ওআরএস পাশে পেয়ে গিয়েছে টফেলকে। |