জন্মদিনে আজ প্রার্থনা, ফিরে এসো শুমাখার
২ জানুয়ারি
৯৯৫ সালে বিয়ের পর স্বামীকে একটা চিনামাটির ব্রেসলেট দিয়েছিলেন করিন্না শুমাখার। পরিবারের সকলের নামের আদ্যক্ষর তাতে খোদাই করা। ঘণ্টায় তিনশো কিলোমিটার বেগে রেসিং কার চালানোর সময়ে নাকি এক বারও সেটা সঙ্গে নিতে ভুল হয়নি তাঁর স্বামীর। যিনি বিশ্বাস করেন, লকেটটা সৌভাগ্যের সূচক।
সাত বারের ফর্মুলা ওয়ান চ্যাম্পিয়ন স্বামীর জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেসেও ব্রেসলেটটা তাঁর সঙ্গে দিয়ে দিয়েছেন করিন্না। হাসপাতালের বিছানায় রাখা আছে সেটা। করিন্নার দিনরাত কাটছে কৃত্রিম কোমায় আচ্ছন্ন স্বামী মাইকেল শুমাখারের পাশে। কাল, ৩ জানুয়ারি যিনি পঁয়তাল্লিশে পা দেবেন।
আরও কত কী বিছানার চার পাশে! জন্মদিনের আগে মোমবাতিতে ঘিরে দেওয়া হয়েছে কিংবদন্তি ড্রাইভারকে। এ ছাড়া সারা ঘরে অজস্র স্মারক। পরিবারের নানা ছোট ছোট ঘটনার সঙ্গে সেগুলো জড়িয়ে। মেয়ে জিনা-মারির চুলের ব্রাশ। ছেলে মিক-এর দেওয়া একটা ক্রস। করিন্না জানালেন, “ঠাকুমার সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে মিক ওই ক্রসটা পেয়েছিল। ওটা সৌভাগ্যের প্রতীক।” বাবা রল্ফ-সহ শুমাখারের গোটা পরিবার এখন গ্রেনোবলে। চব্বিশ ঘণ্টা কেউ না কেউ পালা করে তাঁর পাশে থাকছেন। আজ এক বিবৃতিতে শুমাখার পরিবারের তরফে বলা হয়েছে, “সারা বিশ্বের যাঁরা ওকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। ও দুরন্ত ফাইটার। জানি, ও লড়াই ছাড়বে না।”

হাসপাতালের বাইরে শুমাখারের স্ত্রী করিন্না। ছবি: এ এফ পি।
রবিবার আল্পসে স্কি করার সময় পড়ে গিয়ে পাথরে ধাক্কা খেয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান শুমাখার। দু’বার অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শুমাখারের অবস্থা স্থিতিশীল। তবে সঙ্কট এখনও কাটেনি। সাত বারের মধ্যে পাঁচ বার যে টিমের হয়ে তাঁর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন খেতাব, সেই ফেরারির তরফে ভক্তদের অনুরোধ করা হয়েছে, শুমাখারের জন্মদিনে কাল যেন তাঁরা গ্রেনোবল হাসপাতালের বাইরে লাল পোশাক (ফেরারি টিমের রং) পরে জড়ো হন। শুমাখার জমানায় ফেরারির টিম বস এবং বর্তমানে এফআইএ-র প্রেসিডেন্ট জঁ টড আজ তাঁকে দেখতে যান।
হাসপাতালের বাইরেই আজ এক ঝলক দেখা যায় সোনালি চুলের করিন্নাকে। গায়ে জ্যাকেট, গলায় স্কার্ফ। দুশ্চিন্তা ভরা চোখমুখ। শুমাখারের ম্যানেজার সাবাইন কেহমের কথায়, “নিঃসন্দেহে করিন্না খুব একটা ভাল নেই। কিন্ত মাইকেলের কথা ভেবেই তাঁকে শক্ত হতে হয়েছে। স্বামীর পাশে তিনি সব সময় রয়েছেন।” শুমাখারের দুর্ঘটনার পরে করিন্নাকে প্রথম প্রকাশ্যে দেখা যায় গত কাল রাতে। বিধ্বস্ত চোখমুখে বেরিয়ে আসছিলেন একটি রেস্তোরাঁ থেকে। আপনজনেরা পরে জানান, লড়াইয়ের জন্য নিজেকে তৈরি করতেই রেস্তোরাঁয় গিয়ে বসে ছিলেন করিন্না।

শুমাখারের দ্রুত আরোগ্য কামনায় জার্মানির তারকা ফুটবলার পোডোলস্কি।
উদ্বেগ আর প্রার্থনার পাশাপাশি দুর্ঘটনার তদন্তও চলেছে সমান তালে। একটি জার্মান খবরের কাগজ দাবি করেছে, একটি বাচ্চা মেয়েকে বাঁচাতে গিয়েই সে দিন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন শুমাখার। তখনই পড়ে গিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। তিনি ভাড়া-করা স্কি ব্যবহার করছিলেন বলেও তাদের বক্তব্য। সেই স্কি-জোড়া পরীক্ষার জন্য বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, বরফের নীচে ঢাকা প্রথম পাথরটায় আঘাত পাওয়ার পরে শুমাখার প্রথমে বেশ খানিকটা দূরে ছিটকে পড়েন। তার পর গড়াতে গড়াতে আরও তিনটি পাথরে তাঁর মাথা ঠুকে যায়। দ্রুতই এসে পড়ে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার। তখনও জ্ঞান ছিল শুমাখারের।
সে দিনের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “রিসর্টের প্রত্যেকেই অত্যন্ত মনমরা হয়ে আছে। আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবেন চ্যাম্পিয়ন।”
জন্মদিনের আগে সেই প্রার্থনাতেই একাকার বিশ্ব।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.