মরসুমের শুরু থেকেই পরের পর ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপ অক্ষরেখা, ঘূর্ণাবর্ত আর উচ্চচাপে নাকাল হচ্ছিল শীত। বড়দিনে কিছুটা মাথাচাড়া দিলেও আবার একটি উচ্চচাপের গুঁতোয় থমকে গিয়েছে উত্তুরে হাওয়ার গতি। আর কুয়াশায় ঠিকমতো ছুটতে পারছে না রেলও।
হাওয়া অফিসের খবর, পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশা উপকূলে তৈরি হওয়া উচ্চচাপের প্রভাবে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে রয়েছে। ভোরের দিকে হচ্ছে কুয়াশাও। রবিবার রাজ্য জুড়ে কুয়াশার দাপট চলেছিল। উচ্চচাপটি সোমবার প্রায় একই অবস্থায় থেকে যাওয়ায় কুয়াশাও বহাল। তবে কলকাতায় তেমন অসুবিধা হয়নি। নদিয়া, মুর্শিদাবাদের মতো জেলায় কুয়াশার দাপট ছিল বেশি। কুয়াশা ছিল উত্তরবঙ্গেও। তবে এ দিন বিমানের থেকে ট্রেনযাত্রীদেরই বেশি ভুগতে হয়। রেলের মুখপাত্র জানান, উত্তর ভারত ও উত্তরবঙ্গ থেকে ১৩টি ট্রেন দেরিতে হাওড়া ও শিয়ালদহে পৌঁছেছে। তার মধ্যে দু’টি রাজধানী এক্সপ্রেসও রয়েছে।
আবহবিদেরা বলছেন, উপকূল এলাকায় উচ্চচাপ তৈরি হলে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়ে যায়। তাপমাত্রা কম থাকলে জলীয় বাষ্প সম্পৃক্ত বাতাস ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করে। তবে পরিবেশবিদেরা বলছেন, জলীয় বাষ্পের সঙ্গে সঙ্গে ঘন কুয়াশার পিছনে বাতাসে ক্রমবর্ধমান ধূলিকণার প্রভাবও আছে। তাই ইদানীং কলকাতায় আগের তুলনায় কুয়াশা হচ্ছে অনেক ঘন।
কুয়াশার দাপট কমছে না, বাড়ছে না ঠান্ডাও। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এ দিন কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। আজ, মঙ্গলবার বর্ষশেষে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকে (১৪ ডিগ্রি) নামলেও কনকনে শীত মিলবে কি না সন্দেহ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “মঙ্গলবারের পরে উচ্চচাপটি দুর্বল হতে পারে। আপাতত দিন দুয়েক এমনটাই চলবে।” তবে নতুন বছরের শুরুতে শীত ফিরতে পারে বলে আবহবিদদের আশা। শুধু বাংলা নয়, শীত ধাক্কা খেয়েছে দুই প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড, বিহারেও। সেখানে অনেক জায়গাতেই রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে বলে মৌসম ভবন সূত্রের খবর।
উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে কিন্তু শীতের দাপটে জনজীবন বিপর্যস্ত। মৌসম ভবন জানায়, হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের উত্তর অংশে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বৃষ্টি হয়েছে হরিয়ানা, পঞ্জাবের কিছু এলাকায়। আজ বর্ষশেষের দিনেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
|