সাগরদ্বীপের পরেই অন্ডাল। কলকাতা থেকে বায়ুপথে গঙ্গাসাগর সফর শুরু হয়েছে রবিবার। তার পরের দিন অর্থাৎ সোমবারেই মহানগর থেকে দুর্গাপুরের অন্ডাল বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়মিত হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু হয়ে গেল। কুয়াশার জন্য কপ্টারটি এ দিন নির্দিষ্ট সময় সকাল সাড়ে ১০টায় বেহালা থেকে ছাড়তে পারেনি। কিছু পরে ছেড়ে সেটি অন্ডালে নামে ১২টা ৫ মিনিটে। দুপুরের পরে ফিরে আসে কলকাতায়। গঙ্গাসাগর যেতে ৩৫ মিনিট সময় লেগেছিল। অন্ডাল নিল ৪৫ মিনিট।
সিঙ্গাপুরের সংস্থা চাঙ্গি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে অন্ডাল বিমানবন্দর তৈরি করেছে বেঙ্গল এরোট্রোপলিস প্রাইভেট লিমিটেড (বিএপিএল)। এ দিন প্রথম উড়ানে বিএপিএলেরই সাত জন কর্মকর্তা কপ্টারে যাতায়াত করেন। তবে অন্ডালে পৌঁছনোর পরে স্থানীয় প্রশাসনের কয়েক জন কর্তা এবং একটি স্কুলের চার ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে ১০ মিনিটের প্রমোদ ভ্রমণেরও আয়োজন করা হয়েছিল। |
অন্ডাল বিমাননগরীতে নামছে হেলিকপ্টার। সোমবার ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি। |
বিএপিএল জানায়, এ বার থেকে প্রতি সোমবার কলকাতা-অন্ডাল রুটে হেলিকপ্টার যাতায়াত করবে। আর প্রতি শনিবার কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতন উড়ে যাবে সেটি। ফেরার পথে অন্ডাল ঘুরে আসবে। রাজ্য সরকার কলকাতা-অন্ডাল রুটে ভাড়া ঠিক করেছে ৪২০০ টাকা। বিএপিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ জানান, তাঁরা কয়েক মাসের জন্য সাত আসনের হেলিকপ্টারের সব টিকিট কিনে নিচ্ছেন। যার অর্থ, এখন থেকে প্রতি সোমবার অন্ডাল যাতায়াতের ১৪টি টিকিট এবং শনিবার অন্ডাল-কলকাতা রুটের চারটি টিকিট মিলবে বিএপিএলের কাছে। ৪২০০ টাকায় কিনলেও সেই টিকিট পার্থবাবুরা ২৫০০ টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের পরিবহণ দফতর কলকাতা থেকে ছোট ছোট রুটে হেলিকপ্টার চালানোর পরিকল্পনা করেছে। এ দিন ওই দফতরের সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় সংস্থা পবনহংস এখন কলকাতা থেকে এই হেলিকপ্টারটি ভাড়া দিচ্ছে। এই চুক্তি অনুযায়ী রাজ্য সরকার প্রতি মাসে ৪০ ঘণ্টার ভাড়া তুলে দিচ্ছে পবনহংসের হাতে। কিন্তু সরকারি প্রয়োজনে তা মাসে বড়জোর আট থেকে ১০ ঘণ্টা ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকি সময়টুকু বসিয়ে না-রেখে হেলিকপ্টারটি ব্যবহার করার ব্যবস্থা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আলাপনবাবু বলেন, “গঙ্গাসাগর ও অন্ডাল দিয়ে কপ্টার পরিষেবা শুরু হয়েছে। এর পরে হেলিকপ্টারটি মালদহ, বালুরঘাট, শান্তিনিকেতন, মায়াপুর, বহরমপুর রুটে নিয়মিত চালানো হবে।”
বিএপিএল-প্রধান এ দিন পার্থবাবু বলেন, “শুধু কলকাতা-অন্ডাল নয়। কলকাতা থেকে অন্য শহরেও এই হেলিকপ্টার পরিষেবার সমস্ত বিপণনের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছি আমরা। এর জন্য ট্রাভেল এজেন্ট নিয়োগ থেকে শুরু করে যাবতীয় সব ধরনের ব্যবস্থাই করা হচ্ছে। কলকাতায় বসে তারাই গঙ্গাসাগর, মালদহ, বালুরঘাট যাতায়াতের টিকিট বিক্রি করবে এবং প্রচারের দায়িত্ব নেবে।” পার্থবাবু জানান, আগামী বছর অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে নিয়মিত বিমান পরিষেবাও চালু হয়ে যাবে। তার আগে কপ্টার পরিষেবা চালু হওয়ায় কলকাতা-অন্ডাল রুটে টিকিটের চাহিদা কী রকম হতে পারে, তা পরখ করেও নেওয়া হবে।
|