আলুর দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে কৃষি বিপণন দফতরকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে চলতি বছরে আলুর আস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভবিষ্যতে এমনটা যেন আর না-হয়। তার জন্য যা করণীয়, তা যেন সময়ে করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো কৃষি বিপণন সচিব সুব্রত বিশ্বাসকে তা জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র।
কী ভাবে আলুর দর নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে সরকার?
নবান্ন সূত্রের খবর, আলুর বন্ড কিনে বা চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি আলু কিনে পরিস্থিতির সামাল দিতে হবে কৃষি বিপণন দফতরকেই। তার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখতে হবে। এর অন্যথা হলে তার দায়ও ওই দফতরকে নিতে হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জানানো হয়েছে।
কৃষি বিপণন দফতরের খবর, রবিবার পঞ্জাব থেকে ৪০ হাজার বস্তা (এক রেক) আলু এসেছে কলকাতায়। তার মধ্যে জালন্ধরের আলু রয়েছে ২৪ হাজার বস্তা, অমৃতসরের ১৬ হাজার বস্তা। গত বছর এই সময়ের মধ্যে প্রায় চার রেক আলু এসেছিল। এক কৃষি বিপণন আধিকারিক বলেন, “এখন নতুন আলুর দাম বেশি হলেও দু’তিন দিনের মধ্যে তা কিলোগ্রাম প্রতি ১৫ টাকায় চলে আসবে।”
ভিন্ রাজ্যে ফের আলু রফতানি শুরু করতে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ফের অনুমতি দিয়েছেন। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৪০ হাজার মেট্রিক টন আলু অন্য রাজ্যে রফতানি করা হবে। তার ৮০ শতাংশই উৎপন্ন হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। টাস্ক ফোর্সের এক সদস্য জানান, রাজ্যের হিমঘরগুলিতে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে। এ ছাড়া নতুন আলু উঠছে। পঞ্জাব থেকেও আসছে। সব মিলিয়ে আলুর জোগান যথেষ্ট। তাই আলুর দাম নিয়ন্ত্রণেই থাকবে, এমনকী তা কিছুতে কমতে পারে বলেও আশা সরকরের।
আলুর সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব কলকাতার ভেড়ি নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পূর্ব কলকাতায় ৬৫ থেকে ৬৮টি ভেড়ি আছে। সেগুলির মালিকানা ভূমি ও ভূমিরাজস্ব দফতরের। কিন্তু ভেড়ি থেকে সরকারের আয় হয় না। মৎস্যজীবীরাও সেখানে কাজ করে তেমন লাভবান হন না। তাঁরা বেশির ভাগ সময়েই শোষিত হন বলে অভিযোগ। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়। মৎস্যজীবীদের শোষণ বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের আয়ের পথও যাতে সুগম হয়, সেই জন্য মমতা পুরো বিষয়টির দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যসচিবকে।
|