৩৫ মিনিটেই গঙ্গাসাগর, চালু কপ্টার পরিষেবা
যে রাস্তা গাড়িতে যেতে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে, সেই দূরত্ব আকাশপথে ৩৫ মিনিটে পার করে যারপরনাই খুশি ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সুশান্ত দাস।
রবিবার গঙ্গাসাগর দিয়ে রাজ্য সরকার সাধারণের জন্য হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু করল। বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে পবনহংস সংস্থার কপ্টারটি যে সাত যাত্রীকে নিয়ে গঙ্গাসাগর উড়ে যায়, তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুশান্তবাবু। সাগরমেলার প্রস্তুতি দেখভাল করার জন্য তিনি সেখানে যান। সুশান্তবাবু বলেন, “কলকাতা থেকে গাড়ি ভাড়া করেও গঙ্গাসাগর পৌঁছতে পাঁচ ঘণ্টা লাগে। এ দিন ৩৫ মিনিট লেগেছে। বিকেলে ফিরে এসেছি। নিয়মিত এই পরিষেবা থাকলে ভাল যাত্রী মিলবে।”
আসন্ন সাগরমেলার চার দিনই (১২-১৫ জানুয়ারি) গঙ্গাসাগরে কপ্টার পরিষেবা চালু রাখতে চায় পরিবহণ দফতর। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেওয়া হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকে। কিন্তু মেলার সময়ে ওই পরিষেবা চালু রাখা নিয়ে ধন্দে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। কারণ, মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন। সেই ভিড়ের কিছুটা যদি হেলিকপ্টার দেখতে হেলিপ্যাডে জড়ো হয় তা হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে বলে মনে করছেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।

সাগরে চালু হল হেলিকপ্টার পরিষেবা। রবিবার দুপুরে ছবিটি তুলেছেন দিলীপ নস্কর।
পরিবহণ দফতর থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো প্রস্তাবে জানানো হয়, মেলার চার দিন কলকাতা থেকে ছয় পুণ্যার্থীকে হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হবে। এক জন গাইডের সহায়তায় হেলিপ্যাড থেকে গাড়িতে করে গিয়ে তাঁরা সাগরে স্নান করবেন। সাগরতটেই থাকবে খাবারের ব্যবস্থা। স্নান-খাওয়া পর্ব মিটলে পুণ্যার্থীদের হেলিকপ্টারে কলকাতা ফিরিয়ে আনা হবে। মাথাপিছু খরচ ১৫০০ টাকা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তথা মেলা কমিটির চেয়ারম্যান অশোক দাস জানিয়েছেন, পরিবহণ দফতরের প্রস্তাব কার্যকর করার আগে সব দিক ভেবেচিন্তে দেখা হচ্ছে।
তবে প্রশাসনেরই কিছু কর্তা মনে করছেন, কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকছেই। জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “কপ্টার দেখতে ভিড় হবেই। ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এখনও সময় রয়েছে। আমরা আরও পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দেখা যাক কী হয়।” পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র অবশ্য বলেন, “পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য পুলিশ প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত হবে।”

যাত্রীদের নিয়ে গঙ্গাসাগর উড়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হেলিকপ্টার। রবিবার বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে।—নিজস্ব চিত্র।
সাগরে কপিলমুনির মন্দির থেকে কিছুটা দূরে পাঁচ নম্বর রাস্তার কাছে একটি হেলিপ্যাড রয়েছে। বছরের গোড়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে যখন হেলিকপ্টারে সাগরে গিয়েছিলেন, তখন ওই হেলিপ্যাড ব্যবহার করা হয়েছিল। কপ্টার দেখতে হাজার দেড়েক লোক হেলিপ্যাডের আশপাশে ভিড় জমিয়েছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ নাজেহাল হয়। রবিবার বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে ওড়া হেলিকপ্টারটিও সেখানেই নামে। হেলিপ্যাড বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। পুলিশের হিসেবে, প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষ কপ্টার দেখতে ভিড় জমান।
সাগরমেলার সময়ে অবশ্য ওই হেলিপ্যাড ব্যবহার করা হবে না। জমায়েতের জেরে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় মেলাতট থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবন জনকল্যাণ বিদ্যানিকেতনের পাশের মাঠে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে গড়া হয়েছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। কিন্তু সেখানেও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় হবে বলে মনে করছে পুলিশ। তাই মেলার সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ছাড়াও হেলিপ্যাডের ভিড় নিয়ন্ত্রণও পুলিশের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

পুরনো খবর:

(সহ প্রতিবেদন: সুনন্দ ঘোষ ও অত্রি মিত্র)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.