সিপিএমে কট্টর উদার দূরত্ব মোছার চেষ্টা কালী-স্মরণে
লে তাঁর পরিচিতি ছিল কট্টরপন্থী শিবিরের প্রতিনিধি হিসাবে। বামফ্রন্ট সরকার যখন শিল্পায়নের পথে হাঁটছে, সেই সময় দলেরই উদারপন্থী অংশের সঙ্গে তাঁর শিবিরের টানাপোড়েনও ছিল বিস্তর। সিটুর সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক কালী ঘোষের স্মরণসভাকে ঘিরে এ বার চেষ্টা শুরু হয়েছে সেই ‘দূরত্ব’ মোছার বার্তা দেওয়ার।
কেন্দ্রীয় সব ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে ৯ জানুয়ারি সংগঠনের রাজ্য দফতরেই কালীবাবুর স্মরণসভা করবে সিটু। সিটুর রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক দাশগুপ্ত রবিবার জানান, ওই স্মরণসভা কেবল ট্রেড ইউনিয়নের। কালীবাবু যে হেতু দলের রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন, তাই দলও তাঁর একটি পৃথক স্মরণসভা করতে চায়। এবং চেষ্টা চলছে, সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে উপস্থিত করার। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বুদ্ধবাবুর সঙ্গে সিটু নেতা কালীবাবুর ‘দূরত্ব’ ছিল সিপিএমে সর্বজনবিদিত। প্রকাশ্যে তাঁদের আলাপচারিতাও বড় একটা দেখেননি দলের কেউ। আলিমুদ্দিনে শনিবার কালীবাবুর মরদেহে অবশ্য প্রথা মেনেই শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। এ বার চেষ্টা হচ্ছে, বক্তা না হলেও সিটু নেতার স্মরণসভায় যাতে অন্তত উপস্থিত থাকেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “শ্যামলী গুপ্তের ক্ষেত্রে যেমন মহিলা সমিতি ছাড়াও পার্টি স্মরণসভা করেছিল, কালীদা’র ক্ষেত্রেও তা-ই হওয়ার সম্ভাবনা।” শ্যামলীদেবীর স্মরণসভাতেও বক্তা না হলেও মঞ্চে ছিলেন বুদ্ধবাবু।
বিক্ষোভ

বামেদের মিছিল। জয়নগর-চণ্ডীপুর বাজার থেকে পীতাম্বর
মোড় পর্যন্ত হাঁটলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
শ্রমিক সংগঠনের প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসাবে ধর্মঘটকে হাতছাড়া করতে না চাওয়াকে ঘিরেই মূলত কালীবাবুর নেতৃত্বাধীন সিটুর সঙ্গে বুদ্ধবাবুর সরকারের সংঘাত বাধত। শ্রমিক সংগঠনকে পুরোপুরি জঙ্গিপনার পথ থেকে সরিয়ে যুগোপযোগী করার জন্য শ্যামল চক্রবর্তীকে সিটুর রাজ্য সভাপতি করে বসিয়েছিল আলিমুদ্দিন। কট্টরপন্থী শিবিরের সঙ্গে ভারসাম্য রাখতে অনিল বিশ্বাসের জমানায় কালীবাবু হয়েছিলেন সিটুর রাজ্য সম্পাদক। স্মরণযোগ্য কালের মধ্যে তিনিই একমাত্র, যিনি শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক হয়েও দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে স্থান পাননি। আর এক কট্টরপন্থী চিত্তব্রত মজুমদারকে দিল্লিতে পাঠিয়ে কালীবাবুকে কলকাতায় সিটুর পদে রেখে ভারসাম্যের কৌশল নিয়েছিলেন অনিল-বুদ্ধ জুটি।
সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতারা অবশ্য বলছেন, তথাকথিত জঙ্গি আন্দোলনের জন্য শুধু কালীবাবুকে চিহ্নিত করা ঠিক নয়। তিনি সংগঠনের দায়িত্বে আসার অনেক আগেই মনোরঞ্জন রায়, মহম্মদ ইসমাইল, নীরেন ঘোষেরা সে কাজ করে গিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে, সেই ধারার অন্যতম বাহক কালীবাবুর মৃত্যুর পরে কি জঙ্গি আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসবে সিটু? সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শ্যামলবাবুর কথায়, “পাঁচ-ছয় দশকের খাদ্য আন্দোলন, পরিবহণ আন্দোলন, এ সব বারবার হয় না। কিন্তু এটাও মনে করার কারণ নেই যে, তথাকথিত জঙ্গি আন্দোলন আর হবে না! এটা নির্ভর করে সময় ও পরিস্থিতির উপরে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.