ভর্তুকির ভার, তাই জোর নেই মহিলা ক্ষমতায়নে
র্তুকি দিতে হবে। তাই সংখ্যালঘু মহিলা ক্ষমতায়ন প্রকল্পের কথা সেই ভাবে প্রচারই করে না পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম। তার পরিবর্তে সম্পূর্ণ কেন্দ্রের টাকায় তারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দেদার পরিমাণে গুচ্ছ ঋণ দিচ্ছে।
নিগমের চেয়ারম্যান আবু আয়েশ মণ্ডল নিজেই বলছেন, “রাজ্য সরকারের ক্ষমতায়ন প্রকল্পে সর্বাধিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিতে হয়। তাই আমরা সচরাচর এই ঋণ দিই না। ছোটখাটো ব্যবসা করার জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মূলত কেন্দ্রের গুচ্ছ-ঋণই দেওয়া হয়।”
জাতীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম আগে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সংখ্যালঘু মহিলাদের গুচ্ছ ঋণ দিত। পরে বার্ষিক ৫ শতাংশ সুদে রাজ্য নিগমের অধীনে বিভিন্ন জেলার ফিল্ড সুপারভাইজারদের মাধ্যমে গুচ্ছ ঋণ দেওয়া চালু হয়েছে। গোষ্ঠীর সদস্যেরা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অবধি ঋণ হিসেবে পেতে পারেন। দু’বছর ধরে সহজ কিস্তিতে তা শোধ করতে হয়।

২০১০ সালে তদানীন্তন বাম সরকার হতদরিদ্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র উদ্যোগপতি মহিলাদের জন্য গুচ্ছ ঋণের ধাঁচে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ অবধি ঋণ প্রকল্প চালু করেছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে নিগমের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিগমেরই এক পদস্থ কর্তা বলেন, সংখ্যালঘু মহিলা ক্ষমতায়ন প্রকল্পে রাজ্যকে ভর্তুকি দিতে হয় বলে এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু বলা হয় না। বিভিন্ন জেলায় চুক্তিতে নিযুক্ত নিগমের ফিল্ড সুপারভাইজারদেরও একটা বড় অংশের আক্ষেপ, তাঁদের ওই প্রকল্পের বিষয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়। তাই তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে শুধু গুচ্ছ ঋণের কথাই বলেন। সংখ্যালঘু মহিলা ক্ষমতায়ন প্রকল্পের বিষয়ে গ্রাহকদের সচরাচর জানানো হয় না।
এই সব অভিযোগ বা দাবি যে কতটা সত্যি তা দু’টি প্রকল্পে দেওয়া ঋণের পরিমাণ এবং ঋণ পাওয়া গোষ্ঠীর সংখ্যা মিলিয়ে দেখলেই বোঝা যায়। ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে নদিয়া জেলায় সংখ্যালঘু মহিলা ক্ষমতায়ন প্রকল্পে এক জনকেও ঋণ দেওয়া হয়নি। ধুবুলিয়ার বাসিন্দা চায়না বিবির কথায়, “আমি ধান-চালের ব্যবসার জন্য নিগমের কাছ থেকে দু’বার গুচ্ছ ঋণ নিয়েছিলাম। প্রত্যেক বারই নির্দিষ্ট সময়ে কিস্তিও শোধ করি। তার পরে জানতে পারি ভর্তুকিযুক্ত ঋণও রয়েছে। সেই ঋণ নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ড সুপারভাইজারকে বলেও কাজ হল না।’’ দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘু মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছেন হাওড়ার রহিমা খাতুন। তাঁর মতে, “সরকারের উচিত এই ক্ষমতায়ন প্রকল্পের কথা সকলে জানানো। গুচ্ছ ঋণের মত এই প্রকল্পেও যাতে বেশি সংখ্যক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা অর্ন্তভুক্ত হতে পারেন, সে দিকে নজর দেওয়া। অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী না হলে গ্রামের সংখ্যালঘু মহিলাদের ক্ষমতায়ন বিষয়টি কখনই সম্ভব নয়।”
নিগমের চেয়ারম্যানের আশ্বাস, “আমরা অনেককে ক্ষমতায়ন প্রকল্পের অধীনেও আনতে চেষ্টা করছি। আশা করি, এই বছর বেশি গোষ্ঠীকে ক্ষমতায়ন প্রকল্পে ঋণ দিতে পারব।” বছর শেষে অবশ্য কথা বলবে হিসেবের খাতা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.