বাঁচার লড়াই
স্বাভাবিক ব্যাটিং করেই
পরীক্ষায় উতরোতে হবে

ধোনিদের হারানোর আছে অনেক কিছু। এমনকী, গোটা সিরিজটা। স্মিথদের অবস্থা ঠিক উল্টো। ওদের সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ যেটা হতে পারে, তা হল ড্র। বরং ম্যাচটা জিতে সিরিজ জয়েরও সুযোগ রয়েছে। সোমবার টেস্টের শেষ দিন কিংসমিডে নামার আগে এমনই দুই মনস্তাত্বিক মেরুতে দু’দল।
ভাগ্যিস খারাপ আলোর জন্য রবিবার খেলাটা নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়ে গেল। না হলে যে ভাবে পূজারা, কোহলিদের ঘিরে ধরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা, তাতে প্রতি বলেই মনে হচ্ছিল, এই বুঝি আরও একটা উইকেট পড়ে গেল। দিনের শেষে ভারতের ৬৮-২ আরও খারাপ হতে পারত।
আসলে আমার ভয়টা যে জায়গায়, তা হল ভারতীয় দলে পূজারাকে ছাড়া প্রায় সবাই স্ট্রোকপ্লেয়ার। এই রকম প্রেসার সিচুয়েশনে হার বাঁচানোর মূল মন্ত্র, ধৈর্য ধরে মাটি কামড়ে পড়ে থাকো, যত পারো উইকেটে সময় কাটাও। কিন্তু এই মন্ত্রগুলো মাথায় রেখে ব্যাট করতে বেশ অসুবিধা হয় স্ট্রোকপ্লেয়ারদের। ওদের উপর চাপটা বেড়ে যায়।
তা হলে কী করা উচিত ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের? আমার সাফ কথা হল, নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলো। স্ট্রোক নাও, ড্রাইভ করো, কিন্তু সতর্ক হয়ে। একশো ভাগ নিশ্চিত না হয়ে বলটার জন্য যেও না। একটু ঝুঁকির গন্ধ থাকলে ছেড়ে দাও। এ দিন শিখর ধবনও বলটা লিফট করতে গিয়ে আউট হল। কিন্তু ওর ব্যাপারটা দুর্ভাগ্য। ঠিক জায়গায় বলটা তুলেছিল। দু’প্লেসি শুধু ‘সুপারম্যান’ হয়ে উড়ে গিয়ে ক্যাচটা নিয়ে নিল!

মার খেয়েও শেষ দিনে লড়তে হবে পূজারাদের।
ধোনি-ফ্লেচারও বোধহয় মাঠে নামার আগে ড্রেসিংরুমে সব ব্যাটসম্যানকে বলে দেবে, অযথা চাপ নিতে যেও না। যে যার নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিংটা করো। যে বলটা মারার, সেই বলটা মারো, যেটা ছাড়ার, সেটা ছাড়ো। অযথা অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে যেমন খোঁচা দেওয়ার দরকার নেই, তেমন যে বলটাকে অনায়াসে বাউন্ডারি পার করিয়ে দেওয়া যায়, তাকেও রেয়াত করারও কোনও দরকার নেই। অন্তত আমি হলে ব্যাটসম্যানদের তাই বলতাম।
আমার ধারণা, ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এটাই করবে। স্ট্রোকপ্লেয়ারকে কুঁকড়ে থাকতে বললে তার ভুল করার প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়লে বিপক্ষ আরও চাপ বাড়াবে। ভারত যদি স্কোরবোর্ডে রান তুলতে না পারে, শেষ দিনে ৯৮ রানের ঘাটতিটা তাড়াতাড়ি মিটিয়ে না নিতে পারে, তা হলে দ্রুত কয়েকটা উইকেট হারালে আবার চাপে পড়ে যাবে। এই ব্যাপারটা ধোনিদের মাথায় রাখতে হবে।
স্ট্রোকপ্লেয়ারদের সমস্যা হল, মাঝে মাঝে ওরা বড্ড ঝুঁকি নিয়ে ফেলে। মুভিং বলে কভার ড্রাইভ বা কাট তখনই মারা উচিত, যখন সুইংটা ব্যাটসম্যান আগেই বুঝে যায়। এই ব্যাপারটা কোহলিদের মাথায় রাখতে হবে।
ভারতীয়রা এ ক্ষেত্রে এক জনের ব্যাটিংকে আদর্শ করে সোমবার নিজেদের ইনিংস গড়তে পারে। জাক কালিস (১১৫)। জীবনের শেষ টেস্টেও কী মনঃসংযোগ। গুটিয়ে না থেকে রান তুলে গিয়েছে, কিন্তু ভুল শট খেলেনি। একেবারে ইনিংসের শেষ শটটা ছাড়া। যেটাতে জাডেজাকে (৬-১৩৮) ক্রস খেলে আউট হল।
আমার তো মনে হয়, কালিস যদি আরও দু-এক বছর খেলত, তা হলে মোট টেস্ট রানের দৌড়ে পন্টিংয়ের উপরে চলে যেত। এমনকী সচিনের টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ডটাও হয়তো ভেঙে দিত। কিন্তু কারও অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু বলার নেই। সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।
তবে কালিস যেমন জীবনের শেষ টেস্টের পরীক্ষায় উতরে গিয়েছে, আশা করব ডারবানের কঠিন পরীক্ষাতেও উতরে যাবে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন প্রজন্ম।
সোমবারের ডারবান তো শুধু সিরিজের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে নেই, ক্রসরোডে দাঁড়িয়ে যে ভারতীয় ক্রিকেটও।
সবিস্তার স্কোর

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.