দিল্লির সাফল্যের পর পশ্চিমবঙ্গে সদস্য সংগ্রহে নেমে প্রথম দিনে ভালই সাড়া পেল আম আদমি পার্টি (আপ)।
ছুটির দিনে কলকাতার ধর্মতলায় বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চেয়ার-টেবিল পেতে ল্যাপটপ নিয়ে বসে আপ কর্মীরা দু’হাজারেরও বেশি সদস্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন। সদস্যকরণ অভিযানের প্রথম দিনেই যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ! বিশেষত সেই রাজ্যে, যেখানে মাত্র আড়াই বছর আগে পরিবর্তন হয়েছে এবং তার পরেও একের পর এক ভোটের ফলে পরিবর্তনের কাণ্ডারী রাজনৈতিক দল তৃণমূলেরই জয়জয়কার দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের তুঙ্গ জনপ্রিয়তা এবং বামেদের ক্ষয়িষ্ণু প্রভাবের পাশেই যে তৃতীয় একটি পরিসর মাথাচাড়া দিচ্ছে, এ দিন আপ-এর সদস্য হওয়ার জন্য বিভিন্ন বয়সের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ তারই ইঙ্গিত।
ধর্মতলায় এ দিন সাত ঘণ্টা ধরে আপ-এর ল্যাপটপ-টেবিলের সামনে নাম নথিভুক্ত করতে লাইনে দেখা গিয়েছে ছাত্র-ছাত্রী, সদ্য কলেজ পাশ করা তরুণ-তরুণী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, ডাক্তার দম্পতি, এমনকী অবসরপ্রাপ্তদেরও। তাঁরা ওই কর্মসূচির খবর পেয়েছিলেন ফেসবুক, এসএমএস, খবরের কাগজ, টিভি বা পরিচিত জনেদের মারফৎ। |
ধর্মতলায় আম আদমি পার্টির সদস্য সংগ্রহ। রবিবার।—নিজস্ব চিত্র।
|
খড়্গপুরের গিরি ময়দান স্টেশন সংলগ্ন আরকন্যা বিদ্যালয়ের মাঠে এ দিনই দিল্লির ‘আম আদমি’ মুখ্যমন্ত্রী এবং খড়্গপুর আইআইটি-র প্রাক্তন ছাত্র অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সমর্থনে মাথায় সাদা টুপি পরে বৈঠক করেছেন প্রায় একশো জন। তাঁদের মধ্যে দু’জন আইআইটি-র ছাত্র, বাকিদের মধ্যে অধিকাংশই স্থানীয় বাসিন্দা। সভার আহ্বায়ক খড়্গপুর আইআইটি-র প্রাক্তন ঠিকাকর্মী মহাবীর যাদব বলেন, “দিল্লির রামলীলা ময়দানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে ঐতিহাসিক লড়াইয়ের শুরু হয়েছিল তা আজ সফল। আমরা ওই লড়াইটাকেই আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
গত কাল দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু রাজ্যে আপের মুখপাত্র রঞ্জনা সিংহের বক্তব্য, “আমরা রাজনীতি করতে আসিনি। মানুষকে জাগ্রত করতে এসেছি।” সারদা কেলেঙ্কারির মতো সুনির্দিষ্ট দুর্নীতি-সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়েও কিছু বলতে রাজি নন তিনি। তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ওঁদের দল বলা হবে না মঞ্চ, তা এখনও পরিষ্কার নয়।” কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাসমুন্সির মতে, “দল হিসেবে ওদের অনেক পরীক্ষা দিতে হবে।” সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের কথায়, “তৃণমূলের হামলা ছাড়া ওঁরা যে প্রথম দিন সদস্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন, ভাল কথা!” |