অবশেষে অ্যাসেজে ইংল্যান্ডের দিন
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৭ ডিসেম্বর |
চলতি অ্যাসেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের সেরা দিন গেল শুক্রবারটা। এক প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়কেরও তা-ই মত। নিজেরা ২৫৫ রানের বেশি প্রথম ইনিংসে তুলতে না পারলেও এমসিজি-তে চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয় দিন ইংল্যান্ড অসাধারণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর আগ্রাসী ক্যাচিংয়ের সৌজন্যে অস্ট্রেলিয়ার ১৬৪ রানে ৯ উইকেট ফেলে দিতে পেরেছে।
এবং নাসের হুসেন বলছেন, “এ বারের অ্যাসেজে অবশেষে একটা দিন ইংল্যান্ডের হয়ে থাকল।” টানা ন’টা অ্যাসেজ টেস্টের ফয়সালাও তিনি দেখতে পাচ্ছেন এই ম্যাচে। সঙ্গে গরমাগরম মন্তব্যে জিওফ বয়কটকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন নাসের। বয়কট বলেছিলেন, পিটারসেনের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে এমন সব দুদ্দাড় শট খেলে ফালতু আউট হচ্ছে এই অ্যাসেজে। আর নাসেরের এ দিন মন্তব্য, “দু’দলেরই কয়েকজন ব্যাটসম্যানের মাথা খারাপ চলছে। অন্তত আজ তাদের আউটের ধরন সেটাই বলছে।”
|
অ্যাসেজে ইংল্যান্ডের দিনে উচ্ছ্বাস ব্রেসনান, অ্যান্ডারসন, রুটদের। শুক্রবার। |
শুক্রবারের এমসিজির-র ‘পাগল’ ব্যাটসম্যানদের নামও বলে দিয়েছেন নাসের। ওয়ার্নার-ওয়াটসন-ক্লার্ক এবং অবশ্যই পিটারসেন! বিখ্যাত ইংরেজ দৈনিকের খোঁচা, ‘বাকিংহাম প্যালেসের সামনে দাঁড়িয়ে লোকে যেটা করতে অভ্যস্ত সে রকম গর্বের সঙ্গে দু’হাত তুলে মেলবোর্নে দু’দিনে তিনজন বোল্ড হল। বাকিংহাম প্যালেসের সামনের চেয়ে শুধু একটাই তফাত। মেলবোর্নে এদের হাতে ব্যাট থাকছে।’ আসলে আগের দিন ইংল্যান্ডের ক্যারবেরি আর বেয়ারস্টো-র পর এ দিন মাইকেল ক্লার্ক-ও (১০) স্ট্রোক না খেলে ব্যাট তুলে নিয়ে বোল্ড হন। অ্যান্ডারসনের রিভার্স বিচারে ভুল করে ‘জাজমেন্ট’ দিলে বল অজি ক্যাপ্টেনের অফস্টাম্পের বেল ফেলে দেয়।
লাঞ্চের আগে যে ১৩ ওভার অস্ট্রেলিয়া ব্যাট করে তার মধ্যেই সিরিজে জোড়া সেঞ্চুরিকারী ওয়ার্নার শর্ট বল স্লিপ কর্ডনের উপর দিয়ে অত্যাধিক আত্মবিশ্বাসে মাঠের বাইরে পাঠাতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন। সতীর্থের ভুল থেকে শিক্ষা না নিয়ে ফের অহেতুক ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলে একই আউট হন আগের টেস্টেই সেঞ্চুরি করা ওয়াটসন। যদিও ইংল্যান্ডের হয়ে সেটা বরাবর করে দিয়েছেন পিটারসেন (৭১)। আগের দিনের নায়ক এ দিন প্রথম স্কোরিং শটটাই বাউন্ডারি মারার আত্মবিশ্বাসে পরের ওভারেই জনসনকে মাঠের বাইরে ওড়াতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন। জনসনই (৫-৬৩) এ দিন সকালে চার ওভারের এক ভয়ঙ্কর স্পেলে চার রানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে গত দিনের স্কোরের সঙ্গে ২৯ রানের বেশি তুলতে দেননি। সিরিজে ১৪.৯৬ বোলিং গড়ে জনসন এখনও ২৮ উইকেট নিয়েছেন। |
বল ছাড়তে গিয়ে উইকেট দিলেন ক্লার্ক। |
যার অন্তত এ দিন পাল্টা দিয়ে দুই ইংরেজ পেসার অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড-ও তিনটি করে উইকেট নেন। অন্য দুই পেসার ব্রেসনান দু’টি এবং স্টোকস এক উইকেট নেন। ইংরেজ পেসারদের আরও তাতিয়ে দেয় টিমমেটদের গোটাকয়েক দুরন্ত ক্যাচিং। অস্ট্রেলিয়ার হায়েস্ট স্কোরার রজার্সের (৬১) ক্যাচ মিড উইকেটে অনেকটা দৌড়ে ধরেন পিটারসেন। জর্জ বেইলির কঠিন নিচু ক্যাচ স্লিপে নেন অ্যান্ডারসন। যেটা দীর্ঘ টিভি-রিভিউয়ের পর আউট ঘোষিত করেন আম্পায়ার। দিনের শেষ ওভারেও উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ফলে তৃতীয় দিন এগারো নম্বর লিঁয়-কে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পালা ৪৩ রানে অপরাজিত হাডিনের।
এখনও প্রথম ইনিংসে ৯১ রানে পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। তা সত্ত্বেও নাসেরের আক্ষেপ, “ইংল্যান্ড ভাল বোলিং করলেও এই টেস্টে তাদের বোলিং লাইন আপ সঠিক বাছা হয়নি। পানেসরকে যদি এমসিজি-র স্লো পিচে সারা দিনে মাত্র ন’ওভারের বেশি করানো না যেতে পারে তা হলে খেলানো হল কেন? কুকের ড্রেসিংরুমে তো আরও স্পিনার-পেসার দুই-ই মজুত আছে! |
ছবি: এপি। |
পুরনো খবর: বয়কটকে টপকে গেলেন ‘মাথামোটা’ কেপি |
|