পুরুষ না মহিলা? সুইডেন ফুটবলে কার বেশি মর্যাদা পাওয়া উচিত? কার বেশি সম্মান প্রাপ্য?
পুরুষদের হয়ে খোলাখুলি সওয়াল করে ‘ব্যাটল অব সেক্স’ চালু করে দিলেন জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ!
অধুনা ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার বলে বসলেন, দেশের হয়ে তাঁরা যা করেছেন, তার সঙ্গে মহিলা ফুটবল টিমের কোনও তুলনাই চলে না। যতটা অর্থ মহিলা ফুটবল টিম পেয়ে থাকে, তাঁদের ঠিক ততটাই মর্যাদা প্রাপ্য! তার চেয়ে বেশি নয়। ইব্রাহিমোভিচের মনে হচ্ছে, এই যে সুইডেনের মহিলা ফুটবল টিমের স্ট্রাইকার লোট্টা স্কেলিনের সঙ্গে তাঁর তুলনা টানছে সুইডিশ মিডিয়া, তা হাস্যকর ছাড়া আর কিছু নয়! যা নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে সুইডেনের ফুটবল মহলে। মহিলা টিম থেকে পাল্টা গোলাগুলি ছুড়ে ইব্রাহিমোভিচকে ‘বোরিং’ বলতেও দু’বার ভাবা হয়নি।
আজ নতুন নয়। দুমদাম মন্তব্য করে শিরোনামে উঠে আসার ‘রোগ’ ইব্রা-র বহু দিনের। প্রতিভার দিক থেকে লিওনেল মেসি বা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে তাঁর যখন তুলনা করেছে বিশ্বের ফুটবল মহল, তখন নিজের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন ইব্রা। কিন্তু দেশের ফুটবলেই যে তিনি এ বার বিতর্কের আগুন ছড়িয়ে দেবেন, ভাবা যায়নি। |
ঘটনার সূত্রপাত, সুইডেনের পুরুষ টিমের মিডফিল্ডার আন্দ্রে সোয়েনসনকে ফুটবল সংস্থার দামি গাড়ি দেওয়া নিয়ে। স্বদেশীয় আন্দ্রে র্যাভেল্লির ১৪৩ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড ভেঙে দেওয়ায় যে পুরস্কার দেওয়া হয় সোয়েনসনকে। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কারণ, সোয়েনসনের চেয়ে অনেক বেশি ম্যাচ সুইডেনের মহিলা দলের হয়ে খেলেছেন থেরেস য়োগরান। ১৮৭ ম্যাচ। এবং ওই অনুষ্ঠানে মহিলা দলের মিডফিল্ডার থেরেস উপস্থিত থাকলেও তাঁকে পুরস্কারের জন্য ভাবাই হয়নি। এবং মিডিয়াও নিবির্চারে বিঁধতে শুরু করে সুইডিশ ফুটবল সংস্থাকে। যা দেখেশুনে ইব্রাহিমোভিচ ক্রুদ্ধ। মুখও খুললেন স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে। “মহিলা ফুটবল টিমের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, পুরুষদের ফুটবলের সঙ্গে মেয়েদের ফুটবলের কোনও তুলনা চলে না। তাই আপনারা এ সব থামান,” এক কাগজকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলে দেন প্যারিস সাঁ জাঁ স্ট্রাইকার। সঙ্গে আরও যোগ করেন, “ইউরোপে যখন খেলতে যাই, আমার সঙ্গে মেসির তুলনা চলে। রোনাল্ডোর তুলনা চলে। কিন্তু দেশে ফিরলে আমার সঙ্গে মহিলা ফুটবলারদের তুলনা চলে! মেয়েদের টিমকে সম্মান দিয়েই বলছি, ওদের ঠিক ততটা মর্যাদা পাওয়া উচিত, যতটা ওরা উপার্জন করে!” আর সব শেষে বিস্ফোরণ, “সুইডিশ মিডিয়া দেখছি এখন আমার সঙ্গে মহিলা টিমের স্ট্রাইকার লোট্টা স্কেলিনের তুলনা করছে। ঠাট্টা, তাই না? আমি যে এত রেকর্ড ভাঙলাম দেশের হয়ে, সেগুলোর তুলনা কার সঙ্গে হওয়া উচিত? নিশ্চয়ই যার রেকর্ড ভাঙলাম, তার সঙ্গে। নাকি মেয়েদের সঙ্গে?”
সুইডেনের মহিলা টিমের কোচ পিয়া সান্ডহেজ সব শুনে বিপর্যস্ত। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না সুইডেনের এত বড় ফুটবল আইকন হয়ে এমন মন্তব্য করেছেন ইব্রাহিমোভিচ। বলেছেন, “পুরুষদের ফুটবলে যে মূল্যবোধ বলে ব্যাপারটা থাকে, তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল ইব্রাহিমোভিচ। খুব দুঃখজনক ঘটনা আমাদের দেশের ফুটবলের পক্ষে। ওরা বেশি টাকা পেতে পারে। কিন্তু আমরাও ফুটবলটা খেলি। আমাদেরও একটা সম্মানের ব্যাপার থাকে। পুরুষ আর মহিলায় তুলনাই আসা উচিত নয়।” |
জ্লাটান যখন জঙ্গি |
• ঈশ্বরই জানেন কে জিতবে...আর আপনি এখন তাঁর সঙ্গেই কথা বলছেন! (বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জন পর্বে সুইডেন-পর্তুগাল ম্যাচের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে)
• যে বিশ্বকাপে আমি নেই, তাতে দেখার কিছুই নেই। (২০১৪ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকে সুইডেন ছিটকে যাওয়ার পর)
• মেসি-জাভিরা স্কুলছাত্রের মতো কোচের কথা মেনে চলে। (বার্সেলোনা অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে)
• আমার বাড়িতে আসুন, বুঝে যাবেন আমি সমকামী কি না। সঙ্গে নিজের বোনকেও আনবেন। (সমকামিতা নিয়ে এক মহিলা সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে)
• প্যারিসে একটা অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজছি। যদি কিছু না পাই, তা হলে হোটেলটাই কিনে ফেলতে হবে। (২০১২-এ প্যারিস সাঁ জাঁয় যোগ দিয়ে)
• কিচ্ছু না। ওর কাছে তো জ্লাটানই আছে! (স্ত্রীর জন্মদিনে কী উপহার দেবেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে)
• ক্যারিউ ফুটবল নিয়ে যা করে, আমি একটা কমলালেবু নিয়ে সেগুলো করতে পারি। (জন ক্যারিউ-র সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রসঙ্গে)
• ও ব্যালন ডি’অর-টা নিক। কিন্তু আমি তো জানি, আমিই সেরা। (প্রসঙ্গ যখন রোনাল্ডো)
• ও একজন মেরুদণ্ডহীন কাপুরুষ। (গুয়ার্দিওলা নিয়ে বিস্ফোরণ) |
|