|
পূজারাদের গর্দান নেওয়ার
মেজাজে নেমেছিল স্টেইন
রবি শাস্ত্রী |
|
ডেল স্টেইনের ধারাবাহিক আগ্রাসনের সামনে নিজেদের অ্যাডভান্টেজ হারিয়ে ফেলল ভারত। ওর দুর্দান্ত স্পেলের সামনে দ্বিতীয় দিন টিকে থাকতে পারল না ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।
মাত্র দশ বলে তিন-তিনটে উইকেট তুলে নিয়ে অসাধারণ এই পেসার ভারতীয় ব্যাটিংয়ের হৃদপিণ্ডটা ছিঁড়ে বের করে আনল। এই তিন শিকারের মধ্যে ছিল প্রথম দিনের শেষে ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যান পূজারা এবং বিজয়। খুব দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরিটা হাতছাড়া হয়ে গেল বিজয়ের। ষষ্ঠ উইকেটে রাহানে আর ধোনি টিকে যেতে পারলে টিমের ব্যাটিং ধস আটকানো যেত। কিন্তু স্টেইনের আগুনের সামনে সেটা আর হল না।
তার আগে অবশ্য মনে হচ্ছিল, স্টেইন-ঝড় সামলে দিয়েছে ভারত। বিরাট কোহলি ওর নিজস্ব ধরনের ক্রিকেটটাই খেলছিল। নিশ্চিন্ত ভাবে ড্রাইভ আর পুল করে যাচ্ছিল। লেগ সাইডের দিকে দুর্ভাগ্যজনক খোঁচাটা না হলে আরও একটা হাফসেঞ্চুরির মালিক হতে পারত বিরাট। তখনও কিন্তু কিংসমিডের যুদ্ধটা বেশ জমাট ছিল।
বিজয় আর পূজারা শুরুর দিকে বেশ তাড়াতাড়ি রান তুলছিল। কিন্তু বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার তখন একদম যুদ্ধের মেজাজে ছিল। ভয়ঙ্কর কয়েকটা ডেলিভারির ধাক্কায় ভারতীয় ব্যাটিং দুর্গটা ভেঙে দিল স্টেইন। ওর বল করার ধরন দেখে মনে হচ্ছিল যে, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের গর্দান নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে। দু’দিকে বল সুইং করাচ্ছিল স্টেইন। তার উপর ওর শর্ট বলগুলো মোটেও সহজে খেলা যাচ্ছিল না। এ দিন ওর প্রথম শিকার পূজারা, যার মধ্যে ক্রিজ ছেড়ে বেরনোর কোনও ইচ্ছে দেখলাম না। তার পর লেগ সাইডে অস্বস্তিকর একটা শট খেলে উইকেটকিপারের হাতে জমা পড়ল বিজয়। ঠিক তার পরের বলেই মনে হল স্টেইনের শক্তির সামনে দিশেহারা হয়ে গিয়েছে রোহিত শর্মা। |
চলতি টেস্ট সিরিজে ৬৯.২ ওভার অভুক্ত থাকা স্টেইন-গানের গোলাবর্ষণ: ১০ বলে ০ রানে ৩ উইকেট। |
|
|
|
২-১৯৮ (পূজারা, ৬৬.৩ ওভার)। |
৩-১৯৯ (মুরলী, ৬৮.৫ ওভার)। |
৪-১৯৯ (রোহিত, ৬৮.৬ ওভার)। |
|
বিজয়ের আউটের মধ্যে কিছুটা বিষাদ মিশে ছিল। এই ইনিংসে ও যা করেছে, তার জন্য সেঞ্চুরিরও বেশি কিছু ওর প্রাপ্য ছিল। কিন্তু সুযোগটা ওর হাত ফসকে গেল। দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার আগে মনে হল লড়াইয়ের জমি অনেকটাই ছেড়ে দিয়েছে ভারত।
তখনও কিন্তু কোহলি নিজের জায়গায় অটল ছিল। আত্মবিশ্বাসী ফুটওয়ার্কের সাহায্যে মোটামুটি ভাল গতিতেই রান তুলছিল বিরাট। ওকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছিল রাহানে। এই দু’জনের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে মনে রাখার মতো ব্যাপার হল ওদের স্ট্রেট ড্রাইভ আর পুল।
লোয়ার অর্ডার আর একটু লেগে-পড়ে থাকলে দিনের শেষে ছবিটা অন্য রকম হতে পারত। প্রথম ইনিংসে অন্তত চারশো রান দরকার ছিল। কিন্তু সেটা আর হল কোথায়? দিনের নায়ক আবার বল করতে এসে লোয়ার অর্ডারকে ছিন্নভিন্ন করে দিল।
স্টেইনের এই বিস্ফোরণ কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে ম্যাচটায় ফিরিয়ে এনেছে। হোম টিমের ব্যাটসম্যানরা ইতিমধ্যেই বেশ ভাল শুরু করে ফেলেছে। এই পরিবেশে ভারতীয় বোলারদের ফিটনেস আর স্কিল, দুইয়েরই পরীক্ষা হবে। ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে ফেরাতে হলে ধোনির দরকার ওর বোলারদের শৃঙ্খলাবদ্ধ পারফরম্যান্স। |
ছবি: এএফপি ও পিটিআই। |
পুরনো খবর: মানসিকতা পাল্টেই স্টেইনের শর্ট অনায়াসে খেলে দিচ্ছে বিজয়রা |
|