জয়ন্তী সরে মইলি আসায় নয়াচর নিয়ে আশায় রাজ্য
কেন্দ্রের পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে জয়ন্তী নটরাজন সরে যাওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার খুশি। এম বীরাপ্পা মইলি পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্বে আসায় নয়াচর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ছাড়পত্র পাওয়ার সম্ভাবনা খানিকটা হলেও বাড়ল বলে মনে করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এ জন্য মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের মাধ্যমে কেন্দ্রের উপর নতুন করে চাপ তৈরি করা হবে বলে রাজ্য সরকার সূত্রের খবর।
জয়ন্তী দাবি করেছেন, কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাজ করতে চান বলেই তিনি পরিবেশমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু দিনের পর দিন কোটি কোটি টাকার প্রকল্প আটকে রাখার জন্যই যে তাঁকে পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরতে হয়েছে, তা এখন দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। খোদ কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী পরিবেশের ছাড়পত্র না-পাওয়ার কারণে শিল্পায়নের কাজ আটকে থাকা নিয়ে ক্ষুব্ধ। দলের অন্দরে নয়, বণিকসভা ফিকি-র সম্মেলনে গিয়ে প্রকাশ্যেই তিনি সেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সম্প্রতি। পরিবেশমন্ত্রীর হাতে থাকা ব্যক্তিগত ক্ষমতা নিয়েও তিনি আপত্তি জানান। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, আটকে থাকা প্রকল্পগুলির মধ্যে বাছাই করা কয়েকটি প্রকল্পকে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য পরিবেশ মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। যার মধ্যে নয়াচরের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পও ছিল। কিন্তু এই প্রকল্পগুলি নিয়েও কোনও রকম সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি জয়ন্তীকে। পরিবেশ মন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্ব এখন মইলির হাতে। কর্নাটকের এই প্রবীণ নেতার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভাল। ফলে নয়াচরের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাধা দূর করতে রাজ্য সরকার নতুন করে তৎপর হবে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
মুখ্যমন্ত্রী কিছু দিন আগে দিল্লিতে এসে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকেও তিনি নয়াচরের প্রকল্প আটকে থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর পর মমতা দিল্লিতে নিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইএএস অফিসারদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় বসেন। পরিবেশ মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব হেম পাণ্ডের সঙ্গে নয়াচরের প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন তিনি। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও দিল্লিতে এসে শিল্পোন্নয়ন নিগমের কর্তাদের পরিবেশ মন্ত্রকে দরবার করতে পাঠিয়েছিলেন। এ বার মইলির কাছেও একই ভাবে দরবার করা হবে।
মঙ্গলবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েছেন মইলি। এবং শুরু থেকেই কাজে গতি আনার চেষ্টায় নেমেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই আমলাদের নির্দেশ দিয়েছেন, বর্তমান নিয়ম-কানুন মেনে যে সব প্রকল্পকে এক মাসের মধ্যে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব, তার একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি, পরিকাঠামো বিষয়ক মন্ত্রকগুলির কাছে তিনি জানতে চান, কোন কোন প্রকল্পকে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া প্রয়োজন। এর পর রাজ্যগুলির কাছেও জানতে চাওয়া হবে, কোন প্রকল্পগুলি রাজ্যের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
মইলির নীতি হল, আপাতত যে সব প্রকল্পের ছাড়পত্র শুধু তাঁর সইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে, সেগুলিকে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দেওয়া হবে। এর পর গুরুত্বপূর্ণ তালিকায় থাকা প্রকল্পগুলিকে ধরা হবে। এই নীতি মানলে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ এখনই শুরু করা সম্ভব। মইলির বক্তব্য, “কোনও ফাইল আমার টেবিলে আটকে থাকবে না। আমি বাড়িতেও ফাইল নিয়ে যাব না। সকালে ফাইল এলে সন্ধ্যায় মধ্যে দেখা হয়ে যাবে। পরিবেশের ক্ষতির সঙ্গেও কোনও আপস হবে না।”
বিদ্যুৎ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩১টি বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের অভাবে আটকে রয়েছে। এর মধ্যে নয়াচর-সহ ছ’টি প্রকল্পকে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব। তার তালিকা বিনিয়োগ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিবেশ মন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। উল্টে পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি নয়াচরের প্রকল্পের জন্য আরও আটটি সমীক্ষা করানোর নির্দেশ দিয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.