|
|
|
|
সম্মানের পাশে আজ থেকে নেতৃত্ব বাঁচানোর লড়াই কুকের
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৫ ডিসেম্বর |
ক্রিসমাস ডে মানে অ্যালিস্টার কুকেরও জন্মদিন। কেক কাটা হল বুধবার, সঙ্গে পরিবার-টিম নিয়ে লাঞ্চ ইত্যাদি থাকল। কিন্তু ইংল্যান্ড-ক্যাপ্টেন নিজেও জানেন, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আগামী কয়েক দিনের অ্যাসেজ যুদ্ধে মার খেলে, তাঁকেও ‘কাটবে’ ব্রিটিশ মিডিয়া। হয়তো দেশের নির্বাচকরাও। তাই বড়দিনের সাতসকালেও দেখা গেল কুক বাহিনী মাঠে। নেটে গভীর মনোনিবেশ তাঁর ব্যাটসম্যান ও বোলারদের।
কাল থেকে ০-৩ পিছিয়ে থাকা এবং অ্যাসেজ হারানো ইংল্যান্ডের ছিটেফোঁটা সন্মান পুনরুদ্ধারের চেষ্টা শুরু হচ্ছে। বক্সিং ডে-তে। এবং কুক স্বীকার করে নিচ্ছেন এ হেন দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে কখনও পড়েননি। “যখন আপনি জিতছেন, ছবিটা এক রকম। টিমের খামতি বা ভুলভ্রান্তির জায়গা নজরে আসে না। কিন্তু হারতে থাকলে সব প্রকাশ্যে চলে আসে। কিছু লুকোনোর উপায় নেই। এখন আমাদের একটাই কাজ, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে শোধরানোর রাস্তা খোঁজা। আপাতত সেটাই করতে হচ্ছে।”
কিন্তু এই মুহূর্তে কতটা সঙ্কটে তাঁর নেতৃত্ব? সাংবাদিকদের সামনে রাখঢাক না করে কুক বলছেন, “আমার নিজের খামতিও লুকোনোর জায়গা নেই। তবে চিরকাল নিজের সেরাটা দিতে চেয়েছি। কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। অ্যাসেজে আমরা ০-৩ পিছিয়ে। এখন আমায় নিজেকে নিয়েও কাটাছেঁড়া করতে হবে। দেখতে হবে কোথায় আমার ভুল হচ্ছে। বুঝতে পারছি নিউজিল্যান্ডকে হারানো, বা ভারতে ভারতকে, এমনকী আগের বার অ্যাসেজ জেতাটাও শেষ কথা ছিল না। ওই সব সাফল্য আমার নিজেরও অনেক ভুল আড়াল করে রেখেছিল।” |
বাঁচার লড়াই দু’জনেরই। বক্সিং ডে টেস্টে নামার আগে পিটারসেন-কুক। |
কুকের কথায় পরিষ্কার, হালফিলের ব্যর্থতার জন্য আপাতত তিনি কাঠগড়ায় তুলছেন নেতার জায়গাটায় তাঁর নিজের অনভিজ্ঞতাকে। সেটা কেমন? ইংল্যান্ড অধিনায়কের কথায়, “বিশ্বাস করুন, ক্যাপ্টেন হওয়ার আগে এই কাজটায় বলতে গেলে আমার কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না। মনে হয় ইংল্যান্ড পরের পর ম্যাচ জিতে যাওয়ায় আমার দুর্বলতাগুলো কারও নজরে আসেনি। কিন্তু এখন হারছি বলেই আসল ছবিটা পরিষ্কার হচ্ছে। এখন খুব করে বোঝার চেষ্টা করছি কোথায় কোথায় আমাকে আরও উন্নতি করতে হবে।”
কুক এমনিতে দাবি করছেন, ফল যাই হোক, তাঁর দলের মনোবল এখনও ভাল জায়গায়। এবং সেটাকে ভরসা করেই দেখছেন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। যদিও তার জন্য চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ড দলে অনেক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করা হচ্ছে। উইকেটকিপারের জায়গায় দেখা যেতে পারে জনি বেয়ারস্টোকে। ম্যাট প্রায়রের বদলে। কুক মনে করছেন, ফিটনেস পরীক্ষায় পাস করে যাবেন স্টুয়ার্ট ব্রড।
এ দিকে মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া সম্ভবত এই টেস্টেও দল অপরিবর্তিত রাখছে। তাঁদের যাকে নিয়ে একটু হলেও সংশয় ছিল, সেই পেসার রায়ান হ্যারিস ফিটনেস পরীক্ষায় উতরেছেন। এমনিতে কাল বক্সিং ডে-তে টেস্টের প্রথম দিন দর্শক সংখ্যা ৯০ হাজার ছাপিয়ে যেতে পারে। ক্লার্ক নিশ্চিত চাইবেন ক্রিকেটে তাঁদের চিরশত্রু দেশকে আর একবার কচুকাটা করতে। মনে রাখতে হবে, এই কুকদের হারিয়েই অক্সিজেনের খোঁজ পেয়েছে যে অস্ট্রেলিয়া, তারা অ্যাসেজের আগে ন’টা টেস্টের সাতটাতে হেরেছিল। পাল্টে যাওয়া ছবির সামনে দাঁড়িয়ে ক্লার্ক নিজেও বেশ অবাক, “দু’মাস আগে ভারতে হারার পর আমাদের সম্পর্কে বলা হয়েছিল, এত খারাপ অস্ট্রেলিয়া কখনও ও দেশে যায়নি। আর এ বার জেতার পর রিকি পন্টিং দেখলাম লিখেছে, এটা নাকি আমাদের সর্বকালের সেরা অ্যাসেজ জয়। সত্যি কী ভাবে রাতারাতি সব পাল্টে যায়।”
তিন বছর আগে এক বক্সিং ডে-তে খেলেছিল ইংল্যান্ড। সে বার প্রথম দিনই মাত্র ৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে দিনের শেষে কুক আর অ্যান্ড্রু স্ট্রস অপরাজিত থেকে ইংল্যান্ডকে নিয়ে যাচ্ছিলেন রানের পাহাড়ে। অথচ এ বার সেই কুকদের পিঠ দেওয়ালে। যদিও ইংল্যান্ড অধিনায়ক দাবি করছেন অন্য কিছু, “আমরা সবাই একতাবদ্ধ। ড্রেসিংরুমে আমাদের দেখে কারও মনে হচ্ছে না, টিমের মনোবল তলানিতে। চাকা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য সবাই এখন বেপরোয়া।” |
পুরনো খবর: ওভালের জবাব ওয়াকায়, পিচে গান গাইলেন ক্লার্করা |
|
|
|
|
|