|
|
|
|
কালিসের লক্ষ্য এখন ২০১৫ বিশ্বকাপ |
সোবার্সের সঙ্গে তুলনা করতে চাই না, বলছেন গাওস্কর
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৫ ডিসেম্বর |
সুনীল গাওস্কর বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, বক্সিং ডে টেস্টের পর সাদা জার্সি তুলে রাখবেন জাক কালিস। এবি ডে’ভিলিয়ার্স ভেবে পাচ্ছেন না, টুইটারের ১৪০ শব্দের গণ্ডিতে কী ভাবে আটকে রাখবেন কালিস নিয়ে তাঁর আবেগ। কালিসের মতো বড় মাপের ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকায় আর কোনও দিন আসবে না, এখনই ভবিষ্যদ্বাণী করে রাখছেন প্রোটিয়া কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের টেস্ট অবসর ঘোষণায় এতটাই প্রভাবিত ক্রিকেটবিশ্ব।
“শুধু প্লেয়ার হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কালিস যে রকম প্রভাব ফেলেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না। ওর মাপের ক্রিকেটার আর দেখব বলে মনে হয় না। জাকের শান্ত, পরিণত মনোভাব, ড্রেসিংরুমে ওর উপস্থিতি ভীষণ ভাবে মিস করবে টিম। তবে আশা করছি, অন্যান্য ফর্ম্যাটে দলের সাফল্যে ওর বড় ভূমিকা থাকবে,” এ দিন বলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ডমিঙ্গো।
হালফিলে কালিসের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল ক্রিকেটমহলে। তাঁর শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি ২০১২ নভেম্বরে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্রিসবেনে। চলতি বছরে দুটো হাফসেঞ্চুরি-সহ তাঁর মোট সংগ্রহ মাত্র ১৯৪ রান। আঠারো বছরের ক্রিকেটজীবনে এই প্রথম ক্যালেন্ডার বছরে এখন পর্যন্ত একটাও সেঞ্চুরি পাননি কালিস। শেষ সাতটা ইনিংসে পাঁচ বার এক অঙ্কের স্কোরে আউট হয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত সিরিজে এক বারও দু’অঙ্কে পৌঁছতে পারেননি কালিস, যার জেরে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটমহলের কোনও কোনও অংশে তাঁর অবসরের দাবি উঠে পড়েছিল। এখন অবশ্য তাঁকে ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলানোটাই মূল লক্ষ্য দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের। ডমিঙ্গোর কথায়, “২০১৫ বিশ্বকাপ খেলতে চায় কালিস। ওকে সে ভাবে ম্যানেজ করাটা আমাদের কাছে এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। যাতে বিশ্বকাপের সময় সেরা ফর্মের কালিস খেলতে পারে।” |
|
ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার সিইও হারুণ লর্গ্যাট বলছেন, “১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যে মাঠে কালিসের অভিষেক হয়েছিল, সেই ডারবানেই ও শেষ টেস্ট খেলতে পারবে ভেবে খুব ভাল লাগছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সাম্প্রতিক সাফল্যে ওর প্রচুর অবদান। কালিস যে এক জন কিংবদন্তি, সেটা ওর পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে।”
কালিসের সতীর্থরা অবশ্য তাঁর পরিসংখ্যান নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। তাঁরা ডুবে রয়েছেন ড্রেসিংরুম থেকে কালিসকে হারানোর দুঃখে, তাঁরা মেতে রয়েছেন কালিসের কেরিয়ারের প্রশংসায়। মার্ক বাউচার যেমন টুইট করেছেন, “আরও এক কিংবদন্তিকে বিদায় জানাতে চলেছে টেস্ট বিশ্ব। চিয়ার্স উগি! তোমাকে খুব মিস করব।” কালিসের শেষ টেস্ট ক্যাপ্টেন গ্রেম স্মিথ লিখছেন, “জে কে অবসর নিচ্ছে জানার পরের দিনগুলোয় খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি। এটুকুই বলব, ওর মতো অসাধারণ মানুষের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি গর্বিত!”
১৯৯৫ ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক ঘটানো কালিস টেস্টে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় চার নম্বরে। সচিন তেন্ডুলকর, রিকি পন্টিং আর রাহুল দ্রাবিড়ের পরে। ১৬৫ টেস্ট খেলে এখন পর্যন্ত ১৩,১৭৪ রান করেছেন কালিস। ৫৫.১২-র গড় নিয়ে। টেস্ট অলরাউন্ডারের তালিকায় গ্যারি সোবার্স, ইয়ান বোথামকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন কালিস। আঠারো বছরের কেরিয়ারে তেরো হাজারের উপর রান করার পাশাপাশি তিনি ২৯২ উইকেট নিয়েছেন। তাঁর নেওয়া ক্যাচের সংখ্যা ১৯৯। সোবার্স সেখানে ৯৩ টেস্টে করেছেন ৮০৩২ রান, নিয়েছেন ১০৯ ক্যাচ এবং ২৩৫ উইকেট। বোথামের ১০২ টেস্টে রান ৫২০০, উইকেট ৩৮৩ এবং ক্যাচ ১২০। তবে সুনীল গাওস্কর পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন, “স্যর গ্যারফিল্ড সোবার্সের সঙ্গে আমি কালিসের তুলনা করতে চাই না।”
কিন্তু হাসিম আমলার মতো কেউ কেউ কালিসকে সর্বকালের সেরা দক্ষিণ আফ্রিকান বলে ফেলছেন। তাঁর টুইট, “আমাদের দেশের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদের অসাধারণ কেরিয়ার শেষ হতে চলেছে! সাদা জার্সিতে এই কিংবদন্তির সঙ্গে শেষ বার খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।” ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট প্রায় জিতিয়ে দেওয়া ফাফ দু’প্লেসি বলেছেন, “সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করতে পেরে আমি গর্বিত। কিং কালিস, তোমাকে খুব মিস করব।” |
ওঁরা ৬ |
গারফিল্ড সোবার্স
টেস্ট ৯৩, রান ৮০৩২, সেঞ্চুরি ২৬,
সর্বোচ্চ ৩৬৫ ন.আ., গড় ৫৭.৭৮,
উইকেট ২৩৫, সেরা বোলিং ৬-৭৩। |
ইমরান খান
টেস্ট ৮৮, রান ৩৮০৭, সেঞ্চুরি ৬,
সর্বোচ্চ ১৩৬, গড় ৩৭.৬৯,
উইকেট ৩৬২, সেরা বোলিং ৮-৫৮। |
রিচার্ড হ্যাডলি
টেস্ট ৮৬, রান ৩১২৪, সেঞ্চুরি ২,
সর্বোচ্চ ১৫১ ন.আ., গড় ২৭.১৬,
উইকেট ৪৩১, সেরা বোলিং ৯-৫২। |
কপিল দেব
টেস্ট ১৩১, রান ৫২৪৮, সেঞ্চুরি ৮,
সর্বোচ্চ ১৬৩, গড় ৩১.০৫,
উইকেট ৪৩৪, সেরা বোলিং ৯-৮৩। |
ইয়ান বোথাম
টেস্ট ১০২, রান ৫২০০, সেঞ্চুরি ১৪,
সর্বোচ্চ ২০৮, গড় ৩৩.৫৪,
উইকেট ৩৮৩, সেরা বোলিং ৮-৩৪। |
জাক কালিস
টেস্ট ১৬৫, রান ১৩১৭৪, সেঞ্চুরি ৪৪,
সর্বোচ্চ ২২৪, গড় ৫৫.১২,
উইকেট ২৯২, সেরা বোলিং ৬-৫৪। |
|
|
|
|
|
|