শুক্রবার ওয়ান্ডারার্সে যে জায়গায় ম্যাচ রেখে ড্রেসিংরুমে ফিরল পূজারা-কোহলি, সেই জায়গা থেকে ভারত এই টেস্ট না জিতলে খুব অবাক হব।
সোজা কথা সোজা ভাবেই বলি। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ভারত ওয়ান্ডারার্সে এই টেস্ট জিতছে। বোর্ডে ২৮৪-২। ৩২০ রানের লিড। রোহিত শর্মা, অজিঙ্ক রাহানে, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা ব্যাট করতে নামার জন্য ছটফট করছে। ক্রিজে এক জন ১৩৫ করার পর লাল চেরিটাকে ফুটবলের মতো দেখছে, অন্য জন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরির রিপ্লে দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ম্যাচের স্টিয়ারিং যদি কারও হাতে থেকে থাকে, তা হলে সে ভারত ছাড়া আর কে? তাই বাজি রেখেই বলছি, শেষ দু’দিনে প্রকৃতি বাধা না দিলে এই টেস্ট ভারতের। রবিবার ছুটির বিকেলে চা খেতে খেতে ভারতের জয়ের মুহূর্তটা উপভোগ করতে পারব মনে হচ্ছে। শনিবার লাঞ্চের পর পাঁচশো রানের লিড নিয়ে যদি ধোনি ডিক্লেয়ার করে দেয়, তা হলে শেষ দিন লাঞ্চের বেশি খেলা গড়াবে বলে মনে হয় না। মানে আমাদের সময়ে রবিবার বিকেলই তো হল! |
আমরা তৈরি
পূজারা-কোহলি। জুটিতে আপাতত ১৯১। ছবি: এএফপি। |
সচিন তেন্ডুলকরের অনুপস্থিতির ধাক্কা যে প্রথম পরীক্ষাতেই সামলে নেবে আমাদের নতুন প্রজন্ম, সেটা আমি সত্যিই ভাবতে পারিনি। জাহির খান (৪-৮৮) ফিরে এসে যে ইশান্ত শর্মা (৪-৭৯), মহম্মদ শামিদের (২-৪৮) তাতিয়ে দেবে, তা-ই বা ক’জন ভাবতে পেরেছিল? সচিন ও রাহুলের জায়গাটা যে এত তাড়াতাড়ি পূরণ হয়ে যাবে, তা ভেবে শুধু যে অবাক হচ্ছি, তা নয়। পূজারা (১৩৫ অপরাজিত), কোহলিদের (৭৭ অপরাজিত) জন্য আমার ভীষণ গর্বও হচ্ছে। ভেবে ভাল লাগছে যে, এরাই আমাদের দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কপালটা সত্যিই চওড়া যে, এমন একটা দল পেয়েছে।
ভারতকে অবশ্য দুটো ব্যাপার দারুণ ভাবে সাহায্য করল এই টেস্টে। শুক্রবার সকালে মর্নি মর্কেলের চোট আর খেলা শুরুর আগে উইকেটের ঘাস ছেঁটে দেওয়া। এ দিন লাঞ্চের আগের ওভারে ফিল্ডিং করতে গিয়ে মর্কেলের ডান গোড়ালি মচকে যাওয়ায় সারা দিন ও আর বলই করতে পারল না। শুনলাম এই টেস্টে ও আর বল করতে পারবে না। এটাও শুনছি, পরের টেস্টেও নাকি মর্কেল অনিশ্চিত। লিগামেন্ট টিয়ার হয়েছে ওর, তাই ধরে রাখতে পারেন অন্তত দিন দশেক ও মাঠের বাইরে। |
দে ঘুমাকে |
|
|
জাহির খান
২৬.৩-৬-৮৮-৪ |
চেতেশ্বর পূজারা
১৩৫ ব্যাটিং
(১৮ বাউন্ডারি) |
|
মর্কেলের চোটটায় স্টেইন-ফিলান্ডাররা চাপে পড়ে গিয়েছে মনে হল। সেরা ফর্মে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এমনিতেই ওদের হতাশ করে তুলেছে। তার উপর মর্কেলের অভাব মেটানোর জন্য ওদের অনেক বেশি চাপ নিতে হচ্ছে। উইকেটে তেমন মুভমেন্ট পাচ্ছে না। উচ্চতার জন্য মকের্ল যে বাড়তি গতি পাচ্ছিল, সেটাও অন্যরা পাচ্ছে না। ওদের নিজেদের মাঠেই স্টেইনদের যে ভাবে নাকানিচোবানি খাওয়াচ্ছে আমাদের ছেলেরা, দেখে বেশ মজাই লাগছে। সৌরভের জমানার পর বহু দিন ভারতকে এ ভাবে বিদেশের মাটিতে রাজত্ব করতে দেখিনি।
ধবন (১৫) বাজে শট খেলতে গিয়ে আউট হওয়ায় এক দিক থেকে ভালই হল। বাকিরা সতর্ক হয়ে শপথ নিয়ে নিল, আর বাজে শট নয়। তাই পূজারাদের ফাঁদে ফেলতে পারেনি স্টেইনরা। মুরলী বিজয়ের (৩৯) সঙ্গে পূজারার ৭০ রানের জুটি বেশ শক্তপোক্ত একটা ভিত তৈরি করে দিয়েছে যখন, তখন এই স্ট্র্যাটেজিই দরকার ছিল।
|