ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল। যুদ্ধক্ষেত্রে থেকে আমার তো তাই মনে হচ্ছে। প্রমাণিত, পরীক্ষিত ভয়ঙ্কর একটা বোলিং আক্রমণ তরুণ ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উপর দাঁত বসানোর চেষ্টা করল। প্রচণ্ড আগ্রাসী একটা আক্রমণ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ঝাঁপিয়ে পড়লেও ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা কিন্তু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই সেটা সামলাল। বিশেষ করে প্রথম সেশনে।
মানছি, শুরুটা নড়বড়ে ছিল। ঠিক জায়গায় না থেকে দৃষ্টিকটু ভাবে হুক করতে গিয়ে ওপেনাররা প্রত্যাশা মতোই উইকেট হারাল। কিন্তু মাটি কামড়ে পড়ে ছিল চেতেশ্বর পূজারা আর বিরাট কোহলি। ওদের হাত ধরেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জবাব দেওয়াটা শুরু করল ভারত।
দুই তরুণ ব্যাটসম্যানই দুটো জিনিস ঠিক করে খেলতে নেমেছিল। অফস্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি খেলব না আর ফুট মুভমেন্ট না করে ক্রিজে ধরা পড়ব না। ডেল স্টেইন আর কোম্পানির বোধহয় ব্যাপারটা বিশ্বাস হচ্ছিল না। দুই ব্যাটসম্যান ভুল করবে, এই আশায় অফস্টাম্প করিডরে বলের পর বল পিচ করে যাচ্ছিল। কিন্তু কোহলি বা পূজারা সে রকম কিছুই করেনি। দু’জনই দেখিয়ে দিয়েছে তাদের ক্রমশ বিকশিত একটা প্রতিভা ধৈর্য। |
বিরাট-টুকরো |
|
• ২৪ বছর ৪৩ দিনে বিরাট কোহলি ২২তম আন্তর্জাতিক শতরান করলেন।
একই বয়েসে সচিনের আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির সংখ্যা ছিল ৩২
• সমস্ত টেস্ট খেলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি রয়েছে কোহলির।
অস্ট্রেলিয়া ৫, শ্রীলঙ্কা ৫, ইংল্যান্ড ৩,
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২, নিউজিল্যান্ড ২,
বাংলাদেশ ২, পাকিস্তান ১,
দক্ষিণ আফ্রিকা ১, জিম্বাবোয়ে ১। |
(টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে) |
|
কোহলি তো আরও এক পা এগিয়ে গেল। দক্ষিণ আফ্রিকানদের ও স্টাম্পে বল করতে বাধ্য করল। স্টেইনরা যখন স্টাম্পে বল করতে শুরু করল, তখন ওর ঝুলিতে থাকা প্রচুর শটের সাহায্যে রীতিমতো শাসন করল ওদের বোলিং। কোহলির কভার ড্রাইভ, ফ্লিক, পুল আর স্টেইনকে মারা স্ট্রেট ড্রাইভে ভরসা ঝরে পড়ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল প্রচুর সময় পাচ্ছে শটগুলো খেলার। ওর ব্যাটিংয়ের মান কত উন্নত, এটা থেকেই পরিষ্কার। আরও একটা কথা মনে হচ্ছিল, শিকারী নিজেই এখন ফাঁদে পড়েছে। সত্যিই অসাধারণ একটা মুহূর্ত। ‘রাজা’ তেন্ডুলকর যে আসনটা সদ্য ছেড়ে গিয়েছে, তাতে তরুণ ‘রাজপুত্র’ নিজেকে ছাপিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠা করল।
দুর্ভাগ্যবশত অন সাইডে খুচরো রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে পূজারা রান আউট হল। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল ও। বোলার দ্রুত বলটার কাছে পৌঁছে গিয়েছে বুঝতে পেরে পূজারা ক্রিজে ফিরেও এসেছিল। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
যাই হোক, এই দুই ব্যাটসম্যানের আত্মবিশ্বাস ভারতীয় ড্রেসিংরুমেও ছড়িয়ে পড়েছে। রোহিত শর্মাও ক্রিজে আসার পর সেটা দেখিয়েছে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এখন শিকারের জন্য তৈরি। তাই বিদেশেও ওদের দেখে মনে হচ্ছে যেন ঘরের মাঠে খেলছে। |