সচিনের জায়গায়
নেমেই সেঞ্চুরি
ক্ষিণ আফ্রিকা সফরটা শুরু হওয়ার আগে, বিশেষ করে টেস্ট সিরিজ নিয়ে আলোচনায় তিনটে জিনিস বারবার করে উঠে আসছিল। এক, সচিন তেন্ডুলকর পরবর্তী ভারতীয় ব্যাটিংয়ের নতুন যুগ। দুই, তরুণ ব্যাটসম্যানদের বিদেশ সফরের অনভিজ্ঞতা। আর তিন, দক্ষিণ আফ্রিকান পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে ভারতীয় পারফরম্যান্স নিয়ে সন্দেহ। আর এ সব ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল, সচিনের জায়গায় চার নম্বরে কে নামবে?
চার নম্বর স্লটে আমার প্রথম পছন্দ ছিল বিরাট কোহলি। আর ও যে এই স্লটটার যোগ্য, বুধবার ওয়ান্ডারার্সে ওর ১১৯ রানের পর নিশ্চয়ই সেটা নিয়ে আর কেউ প্রশ্ন তুলবে না। সচিন যেমন ‘স্পেশ্যাল ট্যালেন্ট’, বিরাটও ঠিক তাই। ভারতীয় ক্রিকেট ভাগ্যবান যে সচিন থাকতে থাকতেই কোহলির মতো অসাধারণ প্রতিভার সন্ধান পেয়ে গিয়েছিল। ঠিক যেমন সুনীল গাওস্কর অবসর নেওয়ার পরপরই ভারত খুঁজে পেয়েছিল কোনও এক সচিন তেন্ডুলকরকে।
দেখুন, ওয়ান ডে-তে বিরাটের প্রমাণ করার আর কিছু নেই। আর বুধবারের পর আশা করব টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে বিরাট নিয়ে প্রশ্ন ওঠাও বন্ধ হবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওর সেঞ্চুরি ছিল। তার সঙ্গে যোগ হল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি। ভেবে দেখুন, আজ যখন ব্যাট হাতে বিরাট ক্রিজের দিকে হাঁটছিল, তখন ওর উপর কী প্রচণ্ড চাপ! সচিন-পরবর্তী যুগের প্রথম টেস্ট ম্যাচে ও ব্যাট করতে নামছে সচিনের জায়গায়। এ রকম পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করল বিরাট। প্রথম দিকে ওকে দেখে একটু টেনসড মনে হচ্ছিল ঠিকই। কিন্তু খুব কম সময়ের মধ্যে সেটা কাটিয়ে উঠল বিরাট। দেখিয়ে দিল, ওকে নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে। দেখিয়ে দিল, ওর মধ্যে টেস্ট ক্রিকেট খেলার স্কিল যথেষ্ট পরিমাণে আছে।
ওয়ান্ডারার্সের পিচে সাইডওয়েজ মুভমেন্টের চেয়ে বেশি আতঙ্ক ছিল বাউন্স নিয়ে। এ রকম পিচে বিরাটের প্রথম রান এল জাক কালিসকে পুল করে বাউন্ডারি মেরে। শুরুর দিকে মর্নি মর্কেল ওকে কিছুটা সমস্যায় ফেললেও পরের দিকে ভুল ‘কল’-এ পূজারার রানআউটটা ছাড়া কোনও ভুল করেনি বিরাট। ইমরান তাহির আর কালিসের জন্য বেশি শাস্তি বরাদ্দ রেখেছিল ও। তবু মর্কেল বা স্টেইন ভুল করলে ওদেরও ছাড়েনি বিরাট। আশা করব এর পর বিরাটের টেকনিক নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবে না!
তবে দুঃখের ব্যাপার, বিরাটের এই ব্যাটিং দেখে শিখতে পারল না বাকি ব্যাটসম্যানরা। রোহিত শর্মা আর শিখর ধবনের আউটদুটোই ক্রিকেটীয় ভাষায় ‘সফট ডিসমিসাল’। শিখর কি ভাবছে উপমহাদেশের পিচে যে ভাবে ব্যাট করে, বিদেশেও ওই এক ভাবে ব্যাট করে যাবে? ওর বোঝা উচিত যে সব বলেই হুক করা যায় না। বিদেশের পিচে বিশেষ করে বল ছাড়াটাও শিখতে হবে। পিচ বুঝে, বোলার বুঝে নিজের খেলাটা পাল্টাতে হবে। ওয়ান ডে সিরিজেও এ ভাবে আউট হয়েছিল শিখর। বুধবার ওর আউটটা দেখে সত্যিই খুব হতাশ হলাম। আর বিরাট যখন অত ভাল ব্যাট করছিল, তখন কী ভাবে রোহিত নিজের উইকেটটা ও ভাবে ছুড়ে দিয়ে এল, ভাবতে পারছি না।
এই টেস্ট সিরিজ নিয়ে যতই আতঙ্ক ছড়াক না কেন, একটা ব্যাপার ভুলে যাবেন না। ওয়ান্ডারার্স উইকেটে কিন্তু ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা বরাবরই ভাল খেলেছে। সাইডওয়েজ মুভমেন্ট থাকলে ওরা স্ট্রাগল করে। যেটা এখানে নেই। এখানে টস জিতে আগে ব্যাট করার যে সিদ্ধান্তটা ধোনি নিল, সেটা অত্যন্ত সাহসী আর পজিটিভ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘চোকার্স’ বলে বিখ্যাত বিপক্ষকে চাপে ফেলার জন্যই হয়তো এই সিদ্ধান্তটা নিল ক্যাপ্টেন কুল। দেখা যাক, ধোনির টিম সেটার মর্যাদা দিতে পারে কি না!
সবিস্তার স্কোর

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.