ক্রিকেট আবার দু’দিক দিয়ে দু’টো সাদা বল, পাঁচ ফিল্ডারের বিধিনিষেধ থেকে লাল বল, চিরাচরিত ফর্ম্যাটে ফিরছে। খেলাটা ফের সাহস, সব প্রতিকূলতা সহ্য করে লেগে থাকার ক্ষমতা, মানসিক শক্তি এবং পাঁচ দিন প্রতিটা সেশনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার পরীক্ষা নেবে। ওয়ান ডে থেকে ক্রিকেট আজ জোহানেসবার্গে ফিরছে টেস্টের এক আর দু’নম্বর টিমের লড়াইয়ে। আশা করি, ধোনি আর ওর তরুণ দল চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার জন্য তৈরি।
ওয়ান্ডারার্সের উইকেটে বেশ কিছু ঘাস ছাড়া থাকবে। মুভমেন্ট আর বাউন্স বোলারদের কাছে পছন্দের হবে। চলতি সিরিজে প্রথম ওয়ান ডে-তে ভারতীয়রা ওয়ান্ডারার্সের স্বাদ পেয়েছে এবং সেটা মোটেই তাদের কাছে আনন্দের হয়নি। তার উপর বৃষ্টিতে বেনোনির প্র্যাক্টিস ম্যাচ পুরো ভেস্তে যাওয়ায় টেস্ট সিরিজের আগে ভারতীয় দলের প্রস্তুতি সেরা পর্যায়ে হয়নি। তা সত্ত্বেও ভারতকে এই সব সমস্যাকে পিছনে ফেলে তাজা ভাবে নতুন করে শুরুর কথা ভাবতে হবে।
ভারতীয় পেসাররা নিশ্চয়ই ওয়ান্ডারার্সে বল করার জন্য মুখিয়ে থাকবে। জাহির খানের মতো অভিজ্ঞ পেসার দলে ফেরায় টেস্ট সিরিজে ভারতীয় পেস আক্রমণের উচিত নতুন শক্তিতে হাজির হওয়া। ধোনির পেস কম্বিনেশন হবে জাহির-মহম্মদ শামি আর ইশান্ত শর্মা এবং ভুবনেশ্বর কুমারের মধ্যে যে কোনও একজন। ওয়ান্ডারার্সে ভুবনেশ্বরকে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব সহজ কাজ নয়। তবে আমার বিশ্বাস, ইশান্ত প্রথম এগারোয় থাকবে। সেঞ্চুরিয়নে শেষ ওয়ান ডে-তে ওর ভাল বোলিং পারফরম্যান্সের কারণে। একমাত্র স্পিনার খেলবে অশ্বিন। |
যদিও টেস্টে ভারতের ভাল করার চাবিকাঠি রয়েছে দলের ব্যাটিংটা কেমন হয় তার উপর। সবুজ পিচেও ধোনি টস জিতলে ওর উচিত আগে ব্যাটিং নেওয়া। ধোনির অবশ্যই মনে রাখা দরকার, ভারত আজ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে যে দু’টো টেস্ট ম্যাচ জিতেছে সেগুলো ওয়ান্ডারার্স আর ডারবানে, এ বারও টেস্ট সিরিজ যে দু’টো মাঠে হবে এবং দু’টোই জিতেছিল কিন্তু আগে নিজেরা ব্যাটিং করে। সে জন্য, আজ টস-ভাগ্য ভারতের অনুকূলে গেলে, ধোনির সটান ওর ওপেনারদের বলা উচিত, প্যাড-আপ করো।
কোনও সন্দেহ নেই, শিখর ধবন-মুরলী বিজয় ওপেনিং জুটি স্টেইন-মর্কেল-ফিলান্ডার-কালিসের পেস-ঝড়ের সামনে পড়বে। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা আমাদের ওপেনাররা ধৈর্য নিয়ে সামলাতে পারলে, নতুন বলের ঝড়-ঝাপ্টা থেকে নিজেদের উইকেট বাঁচিয়ে রাখতে পারলে একটা ভাল ইনিংসের ভিত ম্যাচের গোড়াতেই তৈরি করে ফেলবে ভারত। তিন থেকে ছয়ে আসবে পূজারা, কোহলি, রোহিত, রাহানে। টেস্টে সম্পূর্ণ নতুন চেহারার ভারতীয় ব্যাটিং লাইন-আপ। সাতে ধোনি নামার আগে আমি তাই এই নতুন ভারতীয় ব্যাটিং লাইনের মানসিকতা দেখতে আগ্রহী থাকব।
নিঃসন্দেহে দক্ষিণ আফ্রিকানরা সফরকারী দলের উপর কঠিন ভাবে ঝাঁপাবে। ওয়ান ডে-তে ২-০ জেতার পর টেস্ট সিরিজেও একই রেজাল্ট করতে চাইবে। তবে দেখার ব্যাপার, ওয়ান ডে দলের বাইরে চলে যাওয়ার পর গ্রেম স্মিথ টেস্ট অধিনায়ক হিসাবে দলটার মধ্যে কতটা তীক্ষ্মতা আমদানি করতে পারে! দক্ষিণ আফ্রিকা দল যথেষ্ট ব্যালান্সড। তবে ভারত সত্যিকারের চাপ তৈরি করলে দক্ষিণ আফ্রিকারও মানসিকতা কেমন থাকে সেটা দেখার।
সব মিলিয়ে লড়াইটা দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং বনাম ভারতীয় ব্যাটিংয়ের। তবে লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হওয়া উচিত।
|